ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন পদ্ধতি/ সুদের হার

ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন পদ্ধতি/ সুদের হার সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। কেননা এ আর্টিকেল এর মধ্যে ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন পদ্ধতি/ সুদের হার কত টাকা সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করেছি। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পরলে ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন পদ্ধতি/ সুদের হার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পাবেন।

ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন পদ্ধতি/ সুদের হার

ডাচ বাংলা ব্যাংকে লোন নিতে চান তাহলে আজকের আরটিকেলটি পড়ুন। কারণ আজকের আরটিকেল মধ্যে ডাচ বাংলা ব্যাংকে কোন কোন লোন দেয় এবং কত % সুদ হারে লোন প্রদান করে থাকে এবং তারা যে সকল সুবিধা প্রদান করে থাকে তার বিস্তারিত আলোচনা করবো। যদি ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে লোন নিতে চান তাহলে আরটিকেলটি পরতে পারেন আশাকরি পরে উপকৃত হবেন।

পোস্ট সূচিপত্র.

ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন পদ্ধতি

ডাচ বাংলা ব্যাংক বাংলাদেশের একটি বিশ্বস্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাংলাদেশের নামকরা কয়েকটি ব্যাংকের মধ্যে অন্যতম ব্যাংক হচ্ছে ডাচ বাংলা ব্যাংক। এছাড়াও অনেকের লেনদেনে পছন্দের শীর্ষে। যা গ্রাহকদের বিভিন্ন আর্থিক চাহিদা মেটাতে নানা ধরনের লোন সেবা প্রদান করে থাকে। যেমন,

ব্যক্তিগত চাহিদা পূরণ, ব্যবসার প্রসার, গৃহ নির্মাণ, বা যানবাহন কেনার মতো বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ডাচ বাংলা ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য উপযোগী লোন সুবিধা সরবরাহ করে। এখান থেকে একজন গ্রাহক চাইলে বিভিন্ন ধরনের লোনের জন্য আবেদন করে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২০ কোটি টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবে। 

ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে লোন নিতে হলে প্রথমে কিছু পদক্ষেপ অনুসরণ করতে হয়। কারণ ডাচ বাংলা ব্যাংকের লোন দেওয়ার কিছু নিয়ম রয়েছে, যে গুলো অনুসরন করে তারা লোন প্রদান করে থাকে। ডাচ বাংলা ব্যাংকের ঋণ পদ্ধতি সহজ, স্বচ্ছ, এবং গ্রাহকবান্ধব।

ব্যাংকটি দ্রুত প্রক্রিয়াকরণ এবং প্রতিযোগিতামূলক সুদের হারের মাধ্যমে ঋণপ্রাপ্তি সহজ করেছে। গ্রাহকের আর্থিক সামর্থ্য এবং চাহিদার ভিত্তিতে ভিন্ন ভিন্ন ঋণ পরিকল্পনা প্রস্তাব করে থাকে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন পদ্ধতি সম্পর্কে।

ডাচ বাংলা ব্যাংক তাদের গ্রাহকদেরকে বিভিন্ন ধরনের লোন প্রদান করে থাকে। নিচে ডাচ বাংলা ব্যাংক যে ধরনের লোন প্রদান করে থাকে বা আপনি নিতে পারবেন, সে গুলো হলো- 

  1. পার্সোনাল লোন
  2. স্যালারি লোন
  3. গাড়ি লোন
  4. হোম লোন
  5. এসএমই/ ব্যবসা লোন
  6. শিক্ষা লোন 

ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে লোন নিতে আপনার যে সব যোগ্যতার প্রয়োজন হবে ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে সে গুলো হলো-

  • আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশের একজন নাগরিক হতে হবে।
  • আপনার বয়স অবশ্যই  ২৫ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে হতে হবে।

  • আপনার ক্রেডিট স্কোর বা ব্যাংক লেনদেন ভালো হতে হবে।
  • আপনার কোন ব্যবসা অথবা চাকরি থাকতে হবে। তবে মাসিক আয় ২৫ হাজার টাকা বা এর বেশি হতে হবে তাহলে লোন পাওয়া সহজ হবে।
  • আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা পাসপোর্টের ফটোকপি লাগবে।
  • আপনার পাসপোর্ট সাইজের সদ্যতোলা ২ কপি ছবি লাগবে।
  • বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল বা পানি বিল ফটোকপি জমা দিতে হবে।
  • আপনার আয়ের প্রমানের জন্য ব্যাংক একাউন্টের ৬ মাস বা ১ বছরের স্টেটমেন্ট জমা দিতে হবে।
  • জামানতের তথ্য প্রদান করতে জমির দলিল বা ব্যাংক চেক প্রদান করতে হবে।

তবে বিভিন্ন লোনের ক্ষেত্রে যোগ্যতা ও  কাগজপত্র আলাদা হতে পারে নিচে তার বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন সুদের হার 

ডাচ বাংলা বাংকের সুদের হার মূলত নির্ভর করে আপনি কোন ধরনের লোন নিতে চান তার উপর ভিওি করে। কারণ গ্রাহক কোন ধরনের লোন নিতে চাচ্ছেন এর উপর ভিত্তি করে লোনের সুদের হার পৃথক পৃথক হয়ে থাকে। সাধারণত ডাচ বাংলা ব্যাংকের হারলোনের প্রকারের উপর ভিত্তি করে লোনের সুদের হার নিম্নরূপ নিচে দেওয়া হলো-

  • পার্সোনাল লোন: ৮ % পর্যন্ত হয়ে থাকে। অন্যান্য ব্যাংক থেকে টেক ওভার করে নিতে হলে সুদের হার ৭.৫ %। নতুন লোনের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত প্রসেসিং ফি হিসেবে ০.৫% থেকে ১% হয়ে থাকে। তবে  অন্যান্য ব্যাংক থেকে টেক ওভার করে নিতে হলে অতিরিক্ত কোন প্রসেসিং ফি দেওয়া লাগে না।

  • স্যালারি লোন: স্যালারি লোনের সুদের হার ৭.৫ %  আর অন্যান্য ব্যাংক থেকে টেক ওভার করে নিতে হলে স্যালারি লোনের ক্ষেত্রে ৭% এর মধ্যে হয়ে থাকে। নতুনদের জন্য অতিরিক্ত প্রসেসিং ফি হিসেবে ০.৫% থেকে ১% হয়ে থাকে। তবে  অন্যান্য ব্যাংক থেকে টেক ওভার করে নিতে হলে অতিরিক্ত কোন প্রসেসিং ফি দেওয়া লাগে না।
  • হোম লোন: হোম লোনের সুদের হার ৭.৫ %  আর অন্যান্য ব্যাংক থেকে টেক ওভার করে নিতে হলে হোম লোনের জন্য ৭% এর মধ্যে হয়ে থাকে। নতুনদের জন্য অতিরিক্ত প্রসেসিং ফি হিসেবে ০.৫% থেকে ১% হয়ে থাকে। তবে  অন্যান্য ব্যাংক থেকে টেক ওভার করে নিতে হলে অতিরিক্ত কোন প্রসেসিং ফি দেওয়া লাগে না।
  • গাড়ি লোন: গাড়ি লোনের সুদের হার ৮ %  আর অন্যান্য ব্যাংক থেকে টেক ওভার করে নিতে হলে হোম লোনের জন্য  ৭.৫ % এর মধ্যে হয়ে থাকে। নতুনদের জন্য অতিরিক্ত প্রসেসিং ফি হিসেবে ০.৫% থেকে ১% হয়ে থাকে। তবে  অন্যান্য ব্যাংক থেকে টেক ওভার করে নিতে হলে অতিরিক্ত কোন প্রসেসিং ফি নেই।

  • ব্যবসায়িক লোন: ব্যবসায়িক লোনের সুদের হার ৮ %  আর অন্যান্য ব্যাংক থেকে টেক ওভার করে নিতে হলে হোম লোনের জন্য  ৭.৫ % এর মধ্যে হয়ে থাকে। নতুনদের জন্য অতিরিক্ত প্রসেসিং ফি হিসেবে ০.৫% থেকে ১% হয়ে থাকে। তবে  অন্যান্য ব্যাংক থেকে টেক ওভার করে নিতে হলে অতিরিক্ত কোন প্রসেসিং ফি নেই।
  • শিক্ষা লোন: ৯% থেকে ১২% পর্যন্ত হতে পারে।

তবে কিছু ক্ষেত্রে বা বিভিন্ন কারণে লোনের সুদের হার কম বা বেশি হতে পারে। যেমন- আবেদনকারীর ক্রেডিট স্কোর যদি ভালো হয় তাহলে লোনের সুদের হার কম হতে পারে। আবার অনেক সময় লোন পরিশোধের সময়ের উপর ভিত্তি করে সুদের হার কম-বেশি হতে পারে। আবার কত টাকা লোন নিবেন তার উপর নির্ভর করেও লোনের সুদের হার কম বেশি হয়ে থাকে।

ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন সুবিধা

ডাচ বাংলা ব্যাংক বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক ব্যাংক, যা ব্যক্তিগত, ব্যবসায়িক এবং কর্পোরেট সেবা প্রদান করে। এছাড়াও ডাচ বাংলা ব্যাংক গ্রাহকদের বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা প্রদান করে থাকে। আপনি যদি  ডাচ বাংলা ব্যাংক  নিতে চান তাহলে আপনার জানা প্রয়োজন কি কি সুবিধা দিয়ে থাকে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক  ডাচ বাংলা ব্যাংক কি কি লোন সুবিধা দিয়ে থাকে-

  • ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে আপনারা যারা লোন নিবেন, তাদের মূলত অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় সুদ কম দিতে হয়। ৭.৫ %  আর অন্যান্য ব্যাংক থেকে টেক ওভার করে নিতে হলে স্যালারি লোনের ক্ষেত্রে ৭% এর মধ্যে হয়ে থাকে। তাছাড়া নতুন লোনের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত প্রসেসিং ফি হিসেবে ০.৫% থেকে ১% হয়ে থাকে। 
  • ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার জন্য কঠিন কোন শর্ত পূরণ করা লাগেনা, সহজ শর্তে লোন পাওয়া যায়।
  • ডাচ বাংলা ব্যাংক গ্রাহকদের ০,০০০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ০ লাখ টাকা পর্যন্ত লোন প্রদান করে থাকে।
  • ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন সম্পর্কিত কোন ধরনের সমস্যাই পড়লে খুব তাড়াতাড়ি সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকে।
  • ডাচ বাংলা ব্যাংক মূলত ডিজিটাল ভাবে গ্রাহকদের লোন বা সেবা প্রদান করে থাকেন। যার কারণে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে লোন নেওয়ার জন্য সকল গ্রাহক আবেদন করতে পারে।
  • ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে লোন প্রদান করার পর তারা লোন পরিশোধ করার জন্য ১২ মাস থেকে ৬০ মাস পর্যন্ত সময় প্রদান করে থাকে।

ডাচ বাংলা ব্যাংক পার্সোনাল লোন 

ডাচ বাংলা ব্যাংক মূলত ব্যক্তিগত কাজের জন্য পার্সোনাল লোন প্রদান করে থাকে। এ ব্যাংক  ০,০০০ হাজার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা পর্যন্ত পার্সোনাল লোন দিচ্ছে। কিন্তু ইনকাম অনুযায়ী আপনার সঠিক যোগ্যতা  থাকতে হবে। তাহলেই আপনি এই সুবিধাটি উপভোগ করতে পারবেন। সুদের হার মাত্র ৮% এবং প্রসেসিং ফি ১%। “ডাচ বাংলা ব্যাংক পার্সোনাল লোন” লোন নিতে কি যোগ্যতা লাগবে এর বিস্তারিত জানতে নিচের অংশ পড়ুন।

ডাচ বাংলা ব্যাংক পার্সোনাল লোন নিতে হলে কিছু যোগ্যতা থাকা লাগবে নিচে দেওয়া হলো-

বয়স: প্রথমত লোন নেওয়ার জন্য  বয়স থাকতে হবে বা ২৫ বছর থেকে ৬৫ বছর এর মধ্যে হতে হবে। 

মাসিক আয়: পার্সোনাল লোন নিতে হলে আপনার মাসিক ইনকাম অবশ্যই ২৫ হাজার টাকা অথবা তার বেশি হতে হবে। এটি আপনার লোন পরিশোধের সুবিধার্থে গুরুত্বপূর্ণ।

ব্যাবসায়ী অভিজ্ঞতা: যদি আপনি একজন ব্যবসায়ী হিসাবে পার্সোনাল লোন নিতে চান তাহলে, আপনার ব্যবসা পরিচালনা করার  অবশ্যই ৩ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

চাকরীজীবী অভিজ্ঞতা: আপনাদের মধ্যে যারা চাকরীজীবী ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন নিতে হলে চাকরীর বয়স ১ বছরের বেশি হতে হবে।

ডাচ বাংলা ব্যাংক পার্সোনাল লোন নিতে প্রয়োজনীয় কাগজ 

ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন নিতে হলে সবার প্রথমে সঠিক কাগজপত্র জমা দিতে হবে। তাহলেই আপনি  লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। কারণ আবেদন ফরম পূরণ করার সাথে সাথে আপনাকে প্রয়োজনীয় কাগজ সকল কাগজপত্র জমা দিতে হবে। নিচে কাগজপত্রের বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হলো-

  • আবেদনকারী এর জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।
  • জাবিনদারের জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।

  • আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজ ২ কপি  ছবি লাগবে এবং জাবিনদার যে তার ১ কপি ছবি লাগবে।
  • বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল বা পানি বিল ফটোকপি জমা দিতে হবে।
  • আবেদনকারীর পে-স্লিপ/ স্যালারি সার্টিফিকেট/  এপয়েন্টমেন্ট লেটার
  • ই-টিন (লোনের পরিমাণ ৫ লাখের বেশী হলে)
  • গ্যারান্টর এর ভিজিটিং কার্ড (যদি থাকে)
  • অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন, জমির দলিল বা ব্যবসার কাগজপত্র ইত্যাদি। 

ডাচ বাংলা ব্যাংক পার্সোনাল লোন ফরম

আপনারা যদি ডাচ বাংলা ব্যাংকে পার্সোনাল লোন নিতে চান? তাহলে সে ক্ষেত্রে কি কি লাগবে আপনার অর্থাৎ ফরম আবেদন করতে কি কি লাগবে, বা কিভাবে করবেন এ সম্পর্কে এবার আলোচনা করবো। কারণ আমাদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা পার্সোনাল লোন নেওয়ার জন্য আবেদন করেন তো সেই ফরমটি কিভাবে পাবেন চলুন জেনে নেই-

ডাচ-বাংলা ব্যাংকের পার্সোনাল লোনের ফরম নিতে হলে অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রথমে আপনাকে যেতে হবে।

তারপর মূল অপসনের মধ্যে পেয়ে যাবেন পার্সোনাল লোন সার্ভিস আবেদন ফরম বা ওখানে দেখবেন লোনের যে সকল সেবা গুলো রয়েছে এ গুলো দেখতে পাবেন, সেখানে ক্লিক করুন।

এবং সেখানে আপনাকে পার্সোনাল লোন ফরম আবেদন করার প্রয়োজনীয় যে সকল তথ্য গুলো লাগবে এগুলো পূরণ করতে বলবে এবং তখন আপনাকে সেটিতে পূরণ করতে হবে। এবং অবশ্যই সেখানে ধরনের লোন থাকবে, আপনি অবশ্যই পার্সোনাল লোন সিলেক্ট করবেন।

ফরমটি সঠিকভাবে পূরণ করা হয়ে গেলে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন তাহলেই হয়ে যাবে।

আপনি অবশ্যই ডাচ-বাংলা ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে ফর্মটি খুঁজবেন এবং আবেদন করবেন, আর সেখানে যখন সাবমিট বাটনে ক্লিক করবেন তখনই আপনার আবেদনটি প্রক্রিয়াকরণ শুরু হয়ে যাবে। এছাড়াও আপনি আপনার নিকটস্থ ডাচ বাংলা ব্যাংকে গিয়ে পার্সোনাল লোন আবেদন করতে পারবেন।

ডাচ বাংলা ব্যাংক স্যালারি লোন 

ডাচ বাংলা ব্যাংক সরকারি চাকরীজীবীদের সুবিধার  জন্য মূলত স্যালারি লোন প্রদান করে থাকে। এ ব্যাংক  স্যালারি লোন সর্বনিম্ন ৫০,০০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত প্রদান করে থাকে। আবার পরিশোধের সময়সীমা সর্বোচ্চ ৫ বছর, এবং এর জন্য কোনও জামানতের প্রয়োজন হয় না। যে সকল সরকারি চাকরীজীবী চাকরির বয়স ১ বছর  এমন ব্যক্তি স্যালারি লোন নিতে পারবে।

এছাড়াও স্যালারি লোন নিতে হলে আরও কিছু যোগ্যতা বা কাগজপত্র থাকা লাগবে সে গুলো নিচে দেওয়া হলো-

  • আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র ও এক বছরের চাকরির অভিজ্ঞতার কাগজপত্র ডাচ বাংলা ব্যাংকে জমা দিতে হবে।
  • বয়স ২১ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে হতে হবে।
  • ন্যূনতম ১ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
  • মাসিক বেতন সর্বনিম্ন ১২ হাজার টাকা হলেই স্যালারি লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
  • বর্তমান প্রতিষ্ঠানে অন্তত ৬ মাস কাজ করার অভিজ্ঞতা প্রয়োজন।
  • স্যালারি লোনের সাধারণ সুদের হার থেকে ১% ছাড় পাবে গ্রহীতা।
  • আপনাকে সর্বশেষ ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট এবং বেতনের রশিদ জমা দিতে হবে।
  • সরকারি, আধাসরকারি, বা স্বনামধন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী চাকরিজীবী হতে হবে।

ডাচ বাংলা ব্যাংক স্যালারি লোন নিতে প্রয়োজনীয় কাগজ 

ডাচ বাংলা ব্যাংকের স্যালারি লোন (Salary Loan) নিতে যে সকল কাগজপত্র গুলো সাধারণত প্রয়োজন হয়, তা নিচে দেওয়া হলো-

আবেদন ফরম: ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে পাওয়া নির্ধারিত ফরম সঠিক ভাবে পূরণ করতে হবে।

জাতীয় পরিচয়পত্র: আপনার NID বা পাসপোর্টের কপি জমা দিতে হবে।

আপনার চাকরির প্রমাণপত্র: সর্বশেষ ৩-৬ মাসের বেতন স্লিপ এবং ব্যাংক স্টেটমেন্ট।

ব্যাংক স্টেটমেন্ট: প্রায় ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দিতে হয়, যাতে আপনার বেতন প্রদানের প্রমাণ থাকে।

পাসপোর্ট সাইজের ছবি: সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের ছবি।

ইনকাম ট্যাক্স: আপনার আয়কর রিটার্ন বা ট্যাক্স সার্টিফিকেটের কপি।

উপরের এই ডকুমেন্ট গুলো জমা দেওয়ার পর ডাচ বাংলা ব্যাংক আপনার আয় এবং কর্মজীবন মূল্যায়ন করে স্যালারি লোন অনুমোদন করবে।

ডাচ বাংলা ব্যাংক হোম লোন 

আপনাদের মধ্যে অনেকেরি ইচ্ছা থাকে সুন্দর ভাবে একটি বাড়ি বানানোর। কিন্তু টাকার বা আর্থিক সমস্যার কারণে স্বপ্নের বাড়ি বানানোর ইচ্ছা পূরণ করতে পারে না। তবে ডাচ বাংলা  ব্যাংক হোম লোনের কারণে আপনার ইচ্ছা পূরণ করতে পারবেন। কারণ ডাচ বাংলা ব্যাংক বাড়ি বানানোর উপর ভিত্তি করে হোম লোন প্রদান করে থাকে।

ডাচ বাংলা ব্যাংক গ্রাহকদের সর্বোচ্চ ২ কোটি টাকা পর্যন্ত হোম লোন প্রদান করে থাকে। আর ডাচ বাংলা ব্যাংকে  হোম লোনের ক্ষেত্রে ইন্টারেস্ট রেট কম ৮% হারে সুদ প্রদান করতে হয়। এছাড়াও ডাচ বাংলা ব্যাংকের হোম লোন পরিশোধের সর্বোচ্চ সময়সীমা ২০ বছর প্রদান করে থাকে।

ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে হোম লোন নিতে হলে আপানাদের যেসব যোগ্যতা থাকা লাগবে নিচে দেওয়া হলো-

  • ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে হোম লোন নিতে হলে সেবা গ্রহীতার বয়সসীমা  ২৫ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৬৫ বছর।
  • আবেদনকারী অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
  • চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী বা স্বনির্ভর পেশাজীবী হতে হবে। চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। আর ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ২ বছরের ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
  • ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে আপনি লোন নিতে চাইলে আপনার মাসিক ইনকাম সর্বনিম্ন ২৫ হাজার হতে হবে।

ডাচ বাংলা ব্যাংক হোম লোন নিতে প্রয়োজনীয় কাগজ 

ডাচ বাংলা ব্যাংকের হোম লোন (Home Loan) নিতে যে সকল কাগজপত্র গুলো সাধারণত প্রয়োজন হয়, তা নিচে দেওয়া হলো-

  • সর্বশেষ এক বছরের ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্রয়োজন হবে।
  • ইউটিলিট বিল, যেমন: বিদ্যুৎ বিল, পানি বিল অথবা গ্যাস বিলের ফটোকপি।
  • জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা পাসপোর্ট এর ফটোকপি।
  • আপনার সর্বশেষ ট্যাক্স ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের ফটোকপি।
  • গ্রাহক যদি কোনো অংশীদার কোম্পানির অংশীদার হয়, তাহলে সে কোম্পানির দলিল।
  • নিবন্ধিত মালিকানার চুক্তি।
  • আপনি যে পেশায় রয়েছেন তার প্রমাণপত্র।
  • বাড়ি নির্মাণ অথবা ফ্ল্যাট কিনার প্রমাণপত্র।

উপরের এ সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হোম লোন নিতে হলে সংগ্রহ করতে  হবে। তারপর, আপনার নিকটস্থা ডাচ বাংলা ব্যাংকের শাখায় গিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করলে আপনি পেয়ে যেতে পারেন বাড়ি তৈরি বা ক্রয় করার জন্য হোম লোন।

ডাচ বাংলা ব্যাংক এসএমই/ ব্যবসা লোন

ক্ষুদ্র এবং মাঝারি উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ীদের  জন্য ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে এসএমই বা SME লোন প্রদান করা হয়। যারা নতুন উদ্যোক্তা, তারা চাইলে ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে এই লোন গ্রহণ করতে পারে। এরপর, কিস্তি আকারে লোনের টাকা পরিশোধ করতে পারবে।

ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে এসএমই লোন নেয়ার জন্য লোনের আবেদন করতে হবে। লোনের আবেদন করার সময় প্রকল্প সম্পর্কিত বেশ কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হবে। এছাড়া, জামানত হিসেবে স্থায়ী সম্পদ জামানত রাখতে হতে পারে।

ডাচ বাংলা ব্যাংক এসএমই/ ব্যবসায়িক লোন নিতে প্রয়োজনীয় কাগজ 

ডাচ-বাংলা ব্যাংক থেকে এসএমই/ব্যবসায়িক লোন নিতে হলে সাধারণত কিছু নির্দিষ্ট কাগজপত্র জমা দিতে হয়। যে কাগজপত্রের তালিকা নিচে দেওয়া হলো-

  • আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বা পাসপোর্ট কপি।

  • আবেদনকারীর সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • ব্যবসার বৈধ ট্রেড লাইসেন্স (সর্বশেষ নবায়নকৃত)।
  • ব্যক্তিগত এবং ব্যবসার ব্যাংক স্টেটমেন্ট (সাধারণত ৬-১২ মাসের)।
  • কর সনদপত্র (TIN Certificate)।
  • ব্যবসার ঠিকানার প্রমাণপত্র (যেমন: বিদ্যুৎ, পানির বা গ্যাস বিল)।
  • আয়কর রিটার্নের কপি।
  • জামিনদারের পরিচয় ও প্রয়োজনীয় নথিপত্র (যদি প্রযোজ্য হয়)।

এসএমই/ব্যবসায়িক লোনের জন্য উপরের এইসব কাগজপত্র গুলো যদি আপনার কাছে থাকে তাহলে এগুলো নিয়ে সরাসরি ব্যাংকে যে ব্যবসায় লোনের জন্য আবেদন করতে পারেন। এছাড়াও যদি অন্যান্য কোন কাগজপত্র প্রয়োজন হয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনাকে জানিয়ে দিবে।

ডাচ বাংলা ব্যাংক স্টুডেন্ট লোন

ডাচ বাংলা ব্যাংক স্টুডেন্ট লোন মুলত উচ্চ শিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রদান করা হয়ে থাকে। ডাচ বাংলা ব্যাংকের স্টুডেন্ট লোন প্রদান করার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ সুন্দর ও সচ্ছল করে স্বাবলম্বী হিসাবে গরে তোলা। আবার ডাচ বাংলা ব্যাংকের স্টুডেন্ট লোন “আগামী পার্সোনাল লোন ” হিসেবে পরিচিত। সহজভাবে বলতে শিক্ষার্থীদের সহায়তা প্রদান করার জন্য স্টুডেন্ট লোন  প্রদান করা হয়ে থাকে। 

ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে স্টুডেন্টে লোন নেওয়ার জন্য আপনার বিশেষ কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে। যেমন,

  • আপনাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। 
  • লোন আবেদনকারীর বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে হতে হবে।
  • উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য নির্দিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে Admission (ভর্তি) নিশ্চিত করতে হবে। 
  • নির্দিষ্ট আয় বা সম্পদ থাকতে হবে। যা লোনের অর্থ পরিশোধ জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। 
  • প্রার্থীকে একটি স্বীকৃত উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি সনদপত্র প্রদর্শন করতে হবে।

    ডাচ বাংলা ব্যাংক স্টুডেন্ট লোন নিতে প্রয়োজনীয় কাগজ 

    ডাচ বাংলা ব্যাংকের স্টুডেন্ট লোন নিতে হলে আবেদনকারীকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র প্রয়োজন হয়, যা ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হয়। নিচে দেওয়া হলো-

    • জাতীয় পরিচয় পত্র অর্থাৎ NID অথবা জন্ম সনদ (Birth certificate) 
    • ভর্তি নিশ্চিতকরণের Documents বা কাগজপত্র 
    • গ্যারান্টরের জাতীয় পরিচয়পত্র
    • পরিবারের আর্থিক প্রমাণপত্র (আয় সনদ, পরিচিতি পত্র, ব্যবসার বা চাকরির আয়ের প্রমাণ)
    • বাসস্থান প্রমাণপত্র (বিদ্যুৎ বা গ্যাস বিল, ভাড়াবাড়ির কাগজ)
    • পাসপোর্ট সাইজ ছবি (৮-১০টি)
    • ব্যাংকের নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করা
    • অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট (যেমন: চাহিদা অনুযায়ী)

    ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন ক্যালকুলেটর

    আমরা এই পর্যন্ত ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন পদ্ধতি/ সুদের হার ও সুবিধা সম্পর্কে মোটামুটি অবগত হতে পারলাম। ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন পদ্ধতি/ সুদের হার সুদের এ বিষয়টি যেমন জানা জরুরি ঠিক তেমনি ডাচ বাংলা ব্যাংক লোনের মাসিক কিস্তি হিসাব বিষয়টিও গুরুত্ব আকারে জানা উচিত।

    ডাচ-বাংলা ব্যাংক থেকে যে কোনো ধরনের লোন নেওয়ার পূর্বে আপনাকে এর পার্সেন্টেজ কেমন এবং কত পার্সেন্ট করে পরিশোধ করতে হবে, এবং সেটি মাসে কত এবং বছরে কত? এগুলো জানতে হলে আপনাকে অবশ্যই ব্যাংকিং লোন ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে হবে। অর্থাৎ আপনি যদি ডাচ-বাংলা ব্যাংক থেকে লোন নিতে চান তাহলে আপনাকে প্রথমে ডাচ-বাংলা ব্যাংক লোন ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে হবে বা ডাউনলোড করতে হবে।

    অর্থাৎ ডাচ বাংলা ব্যাংকের লোনের উপর ভিত্তি করে মাসিক কিস্তির হিসাব কেমন হতে পারে নিচের ছকের মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক। আমরা এখানে উল্লেখিত ব্যাংকের সুদের হারের উপর নির্ভর করে, লোনের পরিমাণ এবং লোনের মেয়াদ একই রেখে মাসিক কিস্তির পরিমাণ হিসাব করব। ডাচ বাংলা ব্যাংকের লোন ক্যালকুলেটর অনুযায়ী নিচে মাসিক কিস্তির পরিমাণ এর হিসাব দেওয়া হলো-

    ডাচ বাংলা ব্যাংক

    সুদের হার

    লোনের পরিমাণ

    লোনের মেয়াদ

    মাসিক কিস্তির পরিমাণ

    পার্সোনাল লোন

    8%

    100000

     1 বছর

     8698.84

    স্যালারি লোন

    7.5%

    100000 

     1 বছর

     8675.74

    হোম লোন

    8%

    100000

     1 বছর

     8698.84

    গাড়ি লোন

    8%

    100000

     1 বছর

     8698.84

    এসএমই/ব্যবসায়িক লোন

    8%

    100000

     1 বছর

     8698.84

    স্টুডেন্ট লোন

    9%

    100000

     1বছর

     8745.15

    ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন পদ্ধতি/ সুদের হার-শেষ কথা

    আমাদের আজকের আলোচনার মুখ্য বিষয় ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন পদ্ধতি/ সুদের হার সম্পর্কে সাথে আরও আলোচনার করেছি ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন সুবিধা সম্পর্কে। আশা করি এই পোস্ট থেকে আপনি বুঝতে পেরেছেন ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন পদ্ধতি/ সুদের হার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। এমন নিত্য নতুন তথ্য জানতে অবশ্যই আমাদের ওয়েব সাইটটি ফলো করুন। এই পোস্ট থেকে আপনার মতামত অবশ্য কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। আমাদের সাথে এতক্ষণ থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।


    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url