কানাডা ভিজিট ভিসা [২০২৪]
আপনারা কি কানাডা ভিজিট ভিসা কি ভাবে পাবেন সে সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন বা গুগলে সার্চ দিয়েছেন? তাহলে আজকের পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। কারণ আজকের এ পোস্টের এর মধ্যে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছি কানাডার ভিজিট ভিসা পাওয়ার উপায় গুলো নিয়ে বিস্তারিত তথ্য। আশাকরি পোস্টটি পরলে আপনি যে তথ্য সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন সে সকল বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
বর্তমান সময়ে জীবনমান উন্নয়নের বিবেচনায় কানাডা অবস্থান বিশ্বের মধ্যে শীর্ষে বলা যায়। কানাডা বিশ্বের অভিবাসিদের এক নাম্বার পছন্দনীয় দেশ হিসেবে এরই মধ্যে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। আর উন্নত জীবনমান, চাকরি বা পড়াশোনার জন্য কানাডা পৃথিবীর অন্যতম একটি জনপ্রিয় দেশ। শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর প্রায় সব দেশের শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রথম পছন্দ কানাডা। এছাড়া অনেকে ভ্রমণের জন্য কানাডায় যেতে চায়।
ভ্রমণ প্রিয় মানুষদের পছন্দের একটি দেশ হচ্ছে ম্যাপেল পাতার দেশ কানাডা। নায়াগ্রা জলপ্রপাত কিংবা ব্যানফ ন্যাশনাল পার্কের মতো পপুলার ট্যুরিস্ট স্পটভ গুলোর জন্য এটি সর্বদাই ভ্রমণ প্রিয় মানুষদের পছন্দের শীর্ষে থাকে। অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধার কেন্দ্রস্থল হিসেবে কানাডার শহর গুলোর রয়েছে আলাদা আবেদন, বিশেষ করে টরন্টো, কুইবেক, ভ্যানকুভার ইত্যাদি শহরের পপুলারিটি প্রায় সবারই চোখে পড়ে।
কানাডা ভিজিট ভিসা
কানাডা ভিজিট ভিসা হলো এমন একটি দলিল যা আপনাকে কানাডা সফর করার অনুমতি দেয়। এটি সাধারণত পর্যটন, ব্যবসা সফর বা পরিবার পরিদর্শন করার জন্য দেওয়া হয়। সহজ করে বললে, কানাডা ভিজিট ভিসা হল কানাডায় যাওয়ার জন্য আপনার পাসপোর্টের মতো একটি অনুমতিপত্র।এই ভিসা ছাড়া আপনি কানাডায় প্রবেশ করতে পারবেন না।
উন্নত ধরনের জীবনযাপন, পড়াশোনা ও অর্থনৈতিক দিক থেকে কানাডা বিশ্বের অনেক দেশেরে থেকে বেশি এগিয়ে। এছাড়া যাদের কাছে ভ্রমণ ভালো লাগে তাদের জন্য কানাডায় রয়েছে বিশেষ করে টরন্টো, কুইবেক, ভ্যানকুভার ইত্যাদি শহরের মতো অনেক সুন্দর পর্যটন কেন্দ্র।
তবে কানাডা ভ্রমণ করা সহজ হলেও কানাডা ভ্রমণ ভিসা পাওয়া একটু কঠিন। তাই বলে আপনি যে কানাডা ভ্রমণ করতে পারবেন না তা কিন্তু নয়।আপনার যদি কানাডা ভিজিট ভিসার যোগ্যতা থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি ভ্রমন ভিসা পাবেন।
কানাডা ভিজিট ভিসা পাওয়ার নিয়ম
আপনি যদি ভিজিট ভিসায় কানাডা যেতে চান তাহলে প্রথমত আপনাকে একটি পাসপোর্ট বানাতে হবে। তানাহলে আপনার যদি আগে পাসপোর্ট করা থাকে তাহলে তার মেয়াদ সর্বনিম্ন ৬ মাস ও পাসপোর্টের ২ টা পাতা থাকতে হবে। এরপর আপনার সকল ধরনের বৈধ কাগজপত্র নিয়ে বাংলাদেশে অবস্থিত কানাডিয়ান এমবাসিতে যেতে হবে।
এমবাসিতে যাওয়ার পর কানাডিয়ান কর্তৃপক্ষের কাছে ভিজিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। যদি আপনার ডকুমেন্ট কানাডিয়ান কর্তৃপক্ষ যাচাই করার পর সবকিছু ঠিক থাকে তাহলে আপনার ভিসা আবেদন গ্রহণ করবে এবং সর্বোচ্চ দুই মাসের মধ্যে আপনাকে ভিসা প্রদান করবে।
কানাডা ভিজিট ভিসার যোগ্যতা
কানাডা ভিজিট ভিসার জন্য আপনাকে কিছু নিয়ম মানতে হবে আপনার যে যোগ্যতা থাকা লাগবে তা নিচে দেওয়া হলো-
- কানাডা ভিজিট ভিসার জন্য আবেদন করার জন্য বেশ কয়েকটি দেশ ভ্রমণ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
- আবেদনকারী প্রার্থীকে আর্থিক ভাবে সচ্ছল আছে বলে প্রমাণ করতে হবে ও ব্যাংক একাউন্টে নিয়মিত লেনদেনের প্রমাণ দেখাতে হবে।
- আবেদনকারীর বিরুদ্ধে থানায় কোন অভিযোগ থাকা যাবে না পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।
- আবেদনকারীকে ভিসার মেয়াদ শেষে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা এবং প্রয়োজনীয় প্রমাণ দিতে হবে।
- আবেদনকারীকে ভ্রমণের সুনির্দিষ্ট ও যৌক্তিক উদ্দেশ্য থাকতে হবে এবং সেটা পরিষ্কার ভাবে প্রমাণ করতে হবে।
কানাডা ভিজিট ভিসা ডকুমেন্টস
কানাডা ভ্রমণ ভিসার জন্য আবেদন করার সময় প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দিতে হয়। এ জন্য কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন তা নিচে দেওয়া হলো-
- বৈধ পাসপোর্ট: আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ ভিসার মেয়াদের থেকে কমপক্ষে 6 মাস বেশি হতে হবে এবং পাসপোর্টে কমপক্ষে ২টি ফাঁকা পৃষ্ঠা থাকতে হবে (ভিসা স্ট্যাম্পিংয়ের জন্য)।
- আবেদন ফরম: কানাডা ভিজিট ভিসা কানাডা ভিজিট ভিসা আবেদন ফরম।
- জন্ম নিবন্ধন: জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ।
- পাসপোর্ট আকারের ছবি: 2 কপি পাসপোর্ট আকারের ছবি।
- শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র: আপনার সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্রের সত্যায়িত কপি।
- আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণ: ব্যাংক স্টেটমেন্ট ( ব্যাংকে সর্বনিম্ন ১০ লাখ টাকা দেখাতে হবে )
- ভাষাগত দক্ষতা: ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট ( সকল ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়)
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট: স্থানীয় থানার থেকে সনদপত্র সংগ্রহ করতে হবে।
- স্বাস্থ্য পরীক্ষা রিপোর্ট: কানাডা ভিজিট ভিসার জন্য একটি মেডিকেল টেস্ট করতে হবে এবং এটি নির্দিষ্ট স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হয়।
এছাড়াও কানাডা ভিজিট ভিসার আবেদন করার পর বায়োমেট্রিক জমা দেওয়া অপরিহার্য। অর্থাৎ, ছবি তোলা ও আঙ্গুলের ছাপ দিতে হবে।
উপরে উল্লেখিত কাগজপত্র সমূহ নিয়ে নিকটস্থ কানাডিয়ান ভিসা এজেন্সিতে যোগাযোগ করবেন। তারপর আপনার যদি অন্যান্য কোন কাগজপত্র লাগে এজেন্সি কর্তৃপক্ষ আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
কানাডা ভিজিট ভিসা আবেদন করার নিয়ম
কানাডা ভিজিট ভিসা (Tourist Visa) হলো একটি অস্থায়ী ভিসা, যা পর্যটন, পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করা, বা ব্যবসায়িক ভ্রমণের জন্য কানাডা ভ্রমণের অনুমতি দেয়। নিচে কানাডা ভিজিট ভিসা আবেদন করার নিয়ম দেওয়া হলো-
- কানাডা ভিজিট ভিসা করার জন্য আপনি অনলাইনে আবেদন করতে পারেন। অনলাইনে আবেদন করার জন্য সরকারি কানাডিয়ান ওয়েবসাইট সাইটে ভিজিট করতে হবে। কানাডার ভিজিট ভিসা আবেদন ফরম পাওয়ার জন্য নিচের লিংকে ক্লিক করুন canada.ca ।
- অনলাইনে ভিসা ফরম পূরণ করতে হবে এবং আপনার নিজের ভ্রমণ সংক্রান্ত, পেশাগত, পরিবারের তথ্য সমূহ সঠিক ভাবে প্রদান করতে হবে।
- তারপর পর্যায়ক্রমে আপনার সকল তথ্য সঠিক ভাবে আপলোড করার পর Pay your fees বাটনে ক্লিক করে আবেদন ফি পরিশোধ করুন।
আপনি যদি প্রথম বারের মতো কানাডার ভিসার জন্য আবেদন করেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই বায়োমেট্রিক জমা দিতে হবে। কানাডা ভিসা-র জন্য বায়োমেট্রিক দেয়া বাধ্যতা মূলক। বাংলাদেশে কানাডা-র বায়োমেট্রিক পার্টনার ভিএফএস গ্লোবালের ঢাকা, সিলেট এবং চট্টগ্রামের অফিসের গিয়ে আপনাকে ছবি তোলা ও আঙ্গুলের ছাপ দিতে হবে।
কানাডা ভিজিট ভিসা আবেদন ফরম
বর্তমান ডিজিটাল যুগে আপনি ঘরে বসেই থেকেই কানাডার ভিজিট ভিসার আবেদন ফরম পাবেন বা পূরণ করতে পারবেন। কানাডার ভিজিট ভিসা আবেদন ফরম পাওয়ার জন্য নিচের লিংকে ক্লিক করুন। https://www.canada.ca/en/immigration-refugees-citizenship/services/visit-canada/visitor-visa.html
কানাডা ভিজিট ভিসা খরচ
আপনি যদি কানাডায় ভিজিট ভিসা নিয়ে যেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে আর্থিক ভাবে সচ্ছল হতে হবে। অন্যান্য দেশের তুলনায় কানাডা ভিজিট ভিসার খরচ অনেক বেশি। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ থেকে কানাডায় ভিজিট ভিসা নিয়ে গেলে সর্বনিম্ন ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা খরচ হবে।
কানাডা ভিজিট ভিসা প্রসেসিং টাইম
কানাডা ভিজিট ভিসা প্রসেসিং টাইম মূলত ৩০থেকে ৬০ দিন। অর্থাৎ আবেদন করার ৮ সপ্তাহ বা ২ মাসের মধ্যে ভিসা হাতে পাওয়া যায়। আবার কারো কারো ক্ষেত্রে এর থেকেও বেশি সময় লাগে। আপনার ভিসা আবেদন করার প্রক্রিয়া যদি সঠিক হয়ে থাকে তাহলে আশা করা যায় যে, সর্বোচ্চ দুই মাসের মধ্যে ভিসা পেয়ে যেতে পারেন।
কানাডা ভিজিট ভিসা আবেদন কেন্দ্র কোথায়
বাংলাদেশে মোট ৩টি কানাডা ভিসা আবেদন কেন্দ্র রয়েছে। আপনি যদি আবেদন কেন্দ্র সম্পর্কে জেনে থাকেন তাহলে কানাডা ভিসা করার সময় আর দালালদের দ্বারা প্রতারিত হবার সম্ভাবনা থাকবে না। নিচে আবেদন কেন্দ্র গুলোর ঠিকানা দেওয়া হল-
ঢাকা কানাডা ভিসা আবেদন কেন্দ্র: 4র্থ তলা, ডেল্টা লাইফ টাওয়ার, প্লট 37, রোড 90, উত্তর গুলশান এভিনিউ, গুলশান-2, ঢাকা-1212, বাংলাদেশ
চট্টগ্রাম কানাডা ভিসা আবেদন কেন্দ্র: ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার, ৫ম তলা, ১০২-১০৩, আগ্রাবাদ, সি/এ, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
সিলেট কানাডা ভিসা আবেদন কেন্দ্র: ৭ম তলা, নির্ভানা ইন, মির্জা জঙ্গল রোড, রামেরধিগির পাড়, সিলেট-৩১০০, বিএ
কানাডা ভিজিট ভিসায় গিয়ে কাজ করা যায়
কানাডা ভিজিট ভিসায় গিয়ে মূলত কাজ করা সম্ভব না তবে কাজ করার জন্য কানাডায় স্থায়ী ভাবে থাকতে চান তাহলে আপনাকে কানাডায় ভিজিট ভিসাকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় পরিবর্তন করতে হবে। অর্থাৎ ভিজিট ভিসাকে ওয়ার্ক পারমিটে পরিবর্তন করতে পারলে আপনি কানাডায় কাজ করার এবং থাকার অনুমোদন দুটিই পাবেন।
তবে ভিজিট ভিসা থেকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করতে হলে কোন কোম্পানি অথবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে আপনার নামে ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করতে হবে। এজন্য কোম্পানি গুলোর কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত আইনি কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
যে কোম্পানি অথবা ব্যবসায়ীর ব্যবসার রেকর্ড খুব ভাল শুধুমাত্র তারাই এই কাজটি করে থাকে। তবে বাংলাদেশী সাধারণ মানুষদের জন্য কানাডায় ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া খুব কঠিন একটি প্রক্রিয়া বলেই মনে হয়।
কানাডা ভিজিট ভিসা-শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আপনারা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছেন কানাডা ভিজিট ভিসা সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের তথ্য। আপনারা যদি কানাডা ভিজিট ভিসা আবেদন করতে চান তাহলে এ নিয়ম অনুসরণ করে আবেদন করলে খুব সহজেই কানাডা ভিজিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
আশা করি আপনি আমাদের সম্পূর্ণ পোষ্ট পড়েছেন এবং আপনার ভালো লেগেছে। আপনি যদি এই পোস্টটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার আশেপাশের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দেখার সুযোগ করে দিন।আর এমন মজার মজার পোস্ট পড়তে প্রতিদিন আমাদের ওয়েবসাইট এ ভিজিট করুন। ধন্যবাদ
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url