এফিলিয়েট মার্কেটিং কি? এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো
আপনি যদি এফিলিয়েট মার্কেটিং কি? এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবেন সে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন, তাহলে নিয়ে আজকের পোস্টটি মন দিয়ে পড়ুন। কারণ আজকের এই পোস্টটে আমরা এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করবো। যেমন,এফিলিয়েট মার্কেটিং কি? এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো? এবং এফিলিয়েট মার্কেটিং সাইটের বিস্তারিত তথ্য।
এফিলিয়েট মার্কেটিং কি ভাবে শুরু করবেন এ বিষয়ে আপনার জানা থাকলে সহজেই এফিলিয়েট মার্কেটিং এ আপনার ক্যারিয়ার গঠন করতে পারেন। বর্তমানে টাকা উপার্জনের নতুন নতুন পথ উন্মোচিত হচ্ছে তার মধ্যে এফিলিয়েট মার্কেটিং অন্যতম একটি মাধ্যম। আপনারা ঘরে বসে থেকেই অনলাইঠেকে উপার্জন করতে পারবেন , আর এমনই এক জনপ্রিয় মাধ্যম হলো, এফিলিয়েট মার্কেটিং।
এফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে এক ধরনের অনলাইন মার্কেটিং মডেল, যেখানে একজন এফিলিয়েট (মার্কেটার) কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবা প্রচার করে এবং সেই প্রচারের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি বা লিড তৈরি হলে কমিশন উপার্জন করে।
এফিলিয়েট মার্কেটিং কি
বর্তমান সময়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং অনেক জনপ্রিয় মাধ্যম। অ্যাফিলিয়েট শব্দের বাংলা অর্থ অধিভুক্ত। কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবা তৃতীয় পক্ষ হিসেবে প্রমোট করা বা বিক্রি করে কমিশন নেওয়া কে মূলত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলে।
সাধারণত এফিলিয়েট মার্কেটিং বলতে এমন এক সেবাকে বোঝায়, যেখানে কোন প্রতিষ্ঠানের এফিলিয়েট প্রোগ্রামের আওতায় পণ্য বিক্রি করার প্রক্রিয়াকে এফিলিয়েট মার্কেটিং বলা যায়। সাধারণ মার্কেটিং থেকে এফিলিয়েট মার্কেটিং একটু আলাদা।
উদাহরণ হিসাবে মনে করেন আপনার একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট আছে। সেখানে আপনি মার্কেটিং খরচ কমাবেন কিভাবে বা কিভাবে সেল বাড়ানোর যায়, তা নিয়ে চিন্তিত থাকেন তাহলে এ পরিস্থিতিতে আপনি একজন এফিলিয়েট মার্কেটার নিয়োগ দিতে পারেন যারা আপনার পণ্য বা সেবা কম খরচে প্রচার করে দিবে বা পণ্য বিক্রি করে দিবে।
আর এখানে আপনাকে শুধু আপনার পণ্য বা সেবা বিক্রি করার জন্য কিছু টাকা কমিশন হিসাবে মার্কেটারকে প্রদান করতে হবে। সেই কমিশনের ওপর ভিত্তি করে সে আপনার পণ্য বা সেবা মার্কেটিং করে সেল বাড়াতে সাহায্য করবে। এতে করে আপনার এক্সট্রা মার্কেটিং খরচ অনেকটাই কমে যাবে। বিশ্বব্যাপী অনেক কোম্পানি আছে যারা অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্রতি বছর পণ্য বিক্রি করে অনেক টাকা মুনাফা অর্জন করে থাকে।
এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো
আপনি কি একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হতে চান? তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক কি ভাবে এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করবেন এবং এর থেকে কি ভাবে অর্থ ইনকাম করবেন।
একজন এফিলিয়েট মার্কেটার হলেন এমন একজন যিনি প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রি করতে সাহায্য করে টাকা আয় করতে পারে। তারা এটি বিভিন্ন উপায়ে করতে পারে। এটি তারা কি বিক্রি বা প্রচার করার চেষ্টা করছে তার উপরও নির্ভর করে। ত
ব্লগিং-এ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায় হলো ব্লগিং। কারণ আপনারার ওয়েবসাইটে যখন অনেক ভিজিটর থাকবে তখন ব্লগ পোস্ট লিখে আপনি তাতে বিশেষ লিঙ্ক অন্তর্ভুক্ত করে টাকা আয় করতে পারেন। আপনি বিভিন্ন ধরণের ব্লগ পোস্ট লিখতে পারেন, যেমন টিউটোরিয়াল বা রিভিউ ৷
YouTube-এ, আপনি পণ্যের প্রচার করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। আপনি আপনার ভিডিওর বিবরণে একটি বিশেষ লিঙ্ক রাখুন এবং যখন লোকেরা সেই লিঙ্কটি ব্যবহার করে কিছু কিনবে। আপনি অর্থের একটি অংশ খুব সহজে পাবেন। এছাড়াও YouTube এ অর্থ উপার্জন করার অন্যান্য উপায় রয়েছে।
আপনি যদি সত্যিই ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব বা Facebook-এ জনপ্রিয় হন, তাহলে যারা আপনাকে অনুসরণ করে তারা আপনার প্রস্তাবিত প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কিনে অর্থ উপার্জন করতে সহায়তা করতে পারে। তারা আপনার মতামতকে বিশ্বাস করে এবং আপনার মত হতে চায়, তাই তারা আপনার মত একই জিনিস কিনতে পারে। এটি আপনাকে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে সহায়তা করতে পারে।
ই-মেইল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো যখন কেউ কোন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রি করার জন্য তাদের বন্ধু বা গ্রাহকদের ইমেইল পাঠায়। এটি সত্যিই ভাল কাজ করে। এছাড়া এতে খরচ কম হয় এবং বিনিময়ে আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
যদি কেউ একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হয়, তারা প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রি করতে এবং আরও বেশি অর্থ উপার্জন করতে তাদের ইমেইল তালিকা ব্যবহার করতে পারে। তাদের কেবল তাদের ইমেইলে প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের লিঙ্ক অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং যাদের প্রয়োজন তারা সহজেই সেই লিঙ্ক ব্যবহার করে বিস্তারিত জানতে পারে।
মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
এফিলিয়েট মার্কেটিং ব্যবসার তাদের পণ্য এবং পরিষেবার প্রচারের উপায়কে যতদিন তারা পরিবর্তন করেছে। বর্তমান সময়ে মোবাইলের ব্যবহার করেই এফিলিয়েট মার্কেটিং করা সম্ভব। কেননা মোবাইল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং মোবাইল চ্যানেল যেমন অ্যাপ, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং ছোট স্ক্রিনের জন্য অপ্টিমাইজ করা ওয়েবসাইট গুলোর মাধ্যমে পণ্য বা পরিষেবার প্রচার জড়িত।
যেহেতু ভোক্তারা তাদের স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেটের উপর নির্ভর করে চলেছেন, এই ধরনের বিপণন যে কোন সফল ডিজিটাল কৌশলের একটি অপরিহার্য উপাদান হয়ে উঠছে। তাই বলা যায় মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা অনেক সহজ।
আমরা মোবাইল দিয়ে কি ভাবে ফ্রিতে এফিলিয়েট মার্কেটিং করবো এর উত্তর হচ্ছে আমাদের সবার কাছে ফেসবুক আইডি রয়েছে আমরা চাইলে খুব সহজেই ফেইসবুকের মাধ্যমে ফ্রিতে এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারি।
তার জন্য আপনাকে ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপে জয়েন হতে হবে চেষ্টা করবেন এমন গ্রুপ গুলোতে জয়েন হওয়ার জন্য যে গ্রুপ গুলোতে বিভিন্ন বেচা কেনা নিয়ে পোস্ট করা হয়। আপনি যে প্রোডাক্ট গুলো মার্কেটিং করতে চান সেই প্রোডাক্ট রিলেটেড বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ গুলোতে জয়েন হবেন এবং সেই গ্রুপ গুলোতে আপনার এফিলিয়েট লিংক মার্কেটিং করবেন।
কিন্তু কখনো ডাইরেক লিঙ্ক শেয়ার করবেন না কারন যদি ডাইরেক্ট লিঙ্ক শেয়ার করেন তখন আপনার আয় হবে না এবং আপনি ফেসবুক থেকে ব্লক করে দেওয়ার সম্ভাবনা থওার। তাই সব সময় চেষ্টা করবেন এমন কিছু লিখে আপনার এফিলিয়েট লিংক শেয়ার করার যাতে করে মানুষ আপনার লেখা গুলো পড়ে সাথে সাথে আপনার এফিলিয়েট লিংক এ ক্লিক করে।
আর আপনার মার্কেটিং করা প্রোডাক্টটি তারা ক্রয় করে। যখন তারা আপনার লিংক থেকে বিভিন্ন প্রোডাক্ট ক্রয় করবে তখন আপনি সেই প্রোডাক্ট গুলোর থেকে একটা কমিশন পাবেন।
শুধু ফেসবুকে মার্কেটিং করা হয় এটা নয় আপনি চেষ্টা করলে টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব এবং পিন্টারেস্ট সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে আপনার এফিলিয়েট লিংক শেয়ার করা এতে করে আপনি কমিশন হিসাবে অনেক টাকা আয় করতে পারেন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে কাজ করে
এফিলিয়েট মার্কেটিং কি ভাবে কাজ করে তা বুঝতে হলে আগে জানতে হবে এফিলিয়েট মার্কেটিং এ সাথে কে কে জড়িত থাকে। সাধারনত আমরা জানি যে, এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সাথে মূলত চারটি পক্ষ জড়িত থাকে। তারা হলো-
- বিক্রেতা/ পণ্য উৎপাদনকারী
- ক্রেতা বা কাস্টমার
- অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক / মার্কেটপ্লেস
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার
ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে মূল কাজটি সম্পাদিত হলেও এখানে এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক অভিভাবকের ভূমিকা পালন করে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটাররা সাধারণত অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক সাইট থেকে পেমেন্ট সংগ্রহ করে। তবে কিছু ক্ষেত্রে সরাসরি, কোনো প্রকার নেটওয়ার্ক বা মার্কেট প্লেসের সহযোগিতা ছাড়াই এফিলিয়েট মার্কেটিং করা হয়। সে ক্ষেত্রে পণ্য উৎপাদনকারী বা সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সরাসরি মার্কেটারদের কে পেমেন্ট করে থাকে।
আপনি যদি এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চান তাহলে প্রথেমে আপনাকে যে কোন এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক গিয়ে আকাউন্ট করতে হবে। এরপর যে কোন পণ্য পচ্ছন্দ করে উক্ত পণ্যের জন্য এফিলিয়েট প্রোগ্রামে অংশ নিয়ে এফিলিয়েট লিংকটি নিয়ে বিভিন্ন যায়গায় মার্কেটিং করতে হবে। যখন কেউ আপনার লিঙ্ক ব্যবহার করে একটি পণ্য কিনবে তখন আপনি কোম্পানির পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট পরিমানের কমিশন প্রদান করা হবে।
এফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট
এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য জনপ্রিয় কিছু প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় প্রোডাক্ট মার্কেটিংয়ের সুযোগ দেয়। এখানে বাংলাদেশের সেরা এফিলিয়েট মার্কেটিং সাইটের তালিকা দেওয়া হলো-
- Daraz Affiliate: Daraz বাংলাদেশের বৃহত্তম ই-কমার্স সাইট গুলোর মধ্যে একটি। Daraz-এর এফিলিয়েট প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করে পণ্য লিঙ্ক শেয়ার করে কমিশন উপার্জন করা যায়।
- Amazon Associates: বর্তমানে অ্যামাজন বিশ্বের শীর্ষের দিকে রয়েছে। তাদের সাইটে রেজিস্ট্রেশন করে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ভালো পরিমাণে টাকা আয় সম্ভব। এখানে আপনি অ্যামাজনের বিভিন্ন পণ্যের অ্যাফিলিয়েট করতে পারবেন। পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে আপনি এ কাজটি করতে পারেন।
- eBay Partner: এটিও মূলত ফিজিক্যাল পণ্য বিক্রয়ের জন্য এফিলিয়েট প্রোগ্রাম। এটিও অ্যামাজনের মতোই অনেকটা এবং এখানেও প্রচুর কেনাবেচা হয়। Ebay এর যে কোন পণ্যের জন্য আপনি এই প্রোগ্রামটি অংশ নিতে পারেন। তাছাড়া Ebay অনেক বড় কোম্পানি হওয়ায় আপনার টাকা লস হওয়ার কোনো সম্ভবনা নেই।
- Clickbank: এটি মূলত লীড জেনারেশন, ডিজিটাল সার্ভিস, রিলেটেড এফিলিয়েট প্রোগ্রাম। এখানে আপনাকে কোন পণ্য বিক্রি করতে হয় না। বরং নির্দিষ্ট টার্গেট অনুযায়ী কোম্পানির গুলোর পণ্য বা সার্ভিস প্রচারের জন্যই আপনাকে টাকা দিয়ে থাকে। এ জাতীয় পণ্যের মধ্যে ওয়েবসাই প্রমোশন, নতুন নতুন অ্যাপ প্রমোশন, এবং বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল সার্ভিস প্রমোশনের জন্য কাজ করা হয়।
- Rokomari: বাংলাদেশের বৃহত্তম অনলাইন বইয়ের দোকান Rokomari। বইয়ের এফিলিয়েট প্রোগ্রামে যোগ দিয়ে কমিশন উপার্জন করা সম্ভব।
- BDShop: দেশীয় ই-কমার্স সাইট BDShop এর এফিলিয়েট প্রোগ্রামের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক্স, ফ্যাশন এবং অন্যান্য পণ্য প্রমোট করে আয় করা সম্ভব।
- Evaly Affiliate: Evaly বাংলাদেশের আরেকটি ই-কমার্স সাইট, যাদেরও এফিলিয়েট প্রোগ্রাম ছিল। যদিও প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম বর্তমানে সীমিত, তবে ভবিষ্যতে এটির প্রোগ্রাম জনপ্রিয় হতে পারে।
- Alibaba Affiliate: Alibaba বাংলাদেশের বাজারে শক্ত অবস্থানে আছে এবং এফিলিয়েট প্রোগ্রাম হিসেবে কাজ করার সুযোগ দেয়। এটি ব্যবসায়িক প্রোডাক্টে কাজ করার জন্য ভালো অপশন।
- Shopnobari: বিভিন্ন প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের অ্যাফিলিয়েট লিংক প্রদান করে থাকে। তারা মূলত আপনাকে বিভিন্ন ক্যাটেগরির পণ্য এবং সেবা প্রোমোট করার সুযোগ দেবে যা আপনি সোশ্যাল মিডিয়া, ব্লগ, ইউটিউব বা অন্যান্য প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে শেয়ার করতে পারেন। সফল বিক্রয়ের ক্ষেত্রে আপনি কমিশন পাবেন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা
এফিলিয়েট মার্কেটিং-এর অন্যতম সুবিধা হলো এর সহজলভ্যতা ও প্যাসিভ ইনকাম। সামান্য প্রচেষ্টার মাধ্যমেও অনেকেই এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে সফলতা অর্জন করতে পারেন। এজন্য বড় কোনো পুঁজি বিনিয়োগের প্রয়োজন নেই এবং সময়ের সঙ্গে আয় বাড়ানো সম্ভব। নিচে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা দেওয়া হলো-
প্যাসিভ ইনকাম: প্যাসিভ ইনকাম করার অন্যতম সেরা এবং জনপ্রিয় মাধ্যম হলো এফিলিয়েট মার্কেটিং। এখানে একবার একটি সফল এফিলিয়েট প্রোগ্রাম স্থাপন করা হলে, আপনি নিয়মিত কাজ না করেও আয়ের সুযোগ পেতে পারেন। আপনার প্রচারিত লিংক থেকে ক্রেতা কিনলে আপনি কমিশন পাবেন।
পণ্য তৈরির ঝুঁকি নেই: এফিলিয়েট মার্কেটিং এ অন্য কারো পণ্য বিক্রি করতে হয় সে ক্ষেত্রে পণ্য তৈরি করার ঝামেলা বা নষ্ট হবার ভয় থাকে না। তাই এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে কোন পণ্য উৎপাদন করতে হবে না। এতে যেমন উৎপাদন খরচ লাগবে না তেমনি বিপণন খরচও দিতে হবে না।
স্বাধীনতা: আপনি আপনার পছন্দ মত সময়ে কাজ করতে পারেন। যেমন, নিজ ইচ্ছে মত সময়ে কাজ করা। তাই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং স্বাধীন পেশা হিসাবে ধরা হয় এখানে অন্য কারো আদেশে বা সিদ্ধান্তে আপনাকে কাজ করতে হবে না।
কোনো স্টক বা ডেলিভারির দায়িত্ব নেই: এফিলিয়েট হিসেবে আপনাকে পণ্য মজুদ করা বা ডেলিভারি নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। কোম্পানি সরাসরি ক্রেতার কাছে পণ্য পৌঁছে দেয়।
বিনামূল্যে পণ্য বা সেবা: অনেক এফিলিয়েট প্রোগ্রাম আপনাকে তাদের পণ্য বা সেবা বিনামূল্যে ব্যবহার করতে দেয়, যা আপনাকে সহজে পণ্যটি প্রমোট করতে সাহায্য করে।
ব্যবসায়িক সম্পর্ক উন্নয়ন: অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে মার্কেটার ও শেয়ার হোল্ডারদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়। এতে করে অনলাইনে বেশি প্রমোশনের কাজ পাওয়া যায় ও ভবিষ্যৎ ব্যবসায়িক সম্পর্কের উন্নতি হয়।
আমাজন এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো
অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামটি অন্য যে কোন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রামের মতোই। অ্যামাজন অ্যাসোসিয়েটদের অর্থ প্রদান করা হয় যখন একজন রেফার করা ব্যবহারকারী তাদের ওয়েবসাইট থেকে অ্যামাজনে কেনাকাটা করে। এটি উভয়ের জন্য একটি জয়-জয় পরিস্থিতি কারণ বিক্রেতারা অতিরিক্ত দৃশ্যমানতা এবং বিক্রয় থেকে উপকৃত হয় এবং আর্থিক শর্তে অনুমোদিত অংশীদাররা উপকৃত হয়।
সব অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম মূলত একই পদ্ধতিতে কাজ করে থাকে। অর্থাৎ আপনি অন্যের প্রোডাক্ট সম্পর্কে একটি ক্লিয়ার ধারণা দিয়ে এর সুবিধা-অসুবিধা সব কিছু তুলে ধরবেন এবং শেষে আপনার অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক দিয়ে দিবেন। সেই লিঙ্কে ক্লিক করে যত মানুষ যত টাকার প্রোডাক্ট কিনবে আপনি প্রতিটা প্রোডাক্ট এর উপর একটি নিদিষ্ট কমিশন পাবেন। এটি মূলত ২ ভাবে করা যায় -
- ওয়েবসাইটের মাধ্যমে
- ইউটিউবের মাধ্যমে
ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মার্কেটিং
ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে হলে আপনার নিজের একটি ওয়েবসাইট মাস্ট থাকা লাগবে হবে এবং নিয়মিত সেখানে নিশ রিলেটেড ব্লগ / আটিকেল পাবলিশ করতে হবে। আপনি অ্যামাজন এর যে প্রোডাক্টটি নিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করবেন, সেই প্রোডাক্ট নিয়ে রিসোর্সফুল, ইনফোরমেটিভ, ইনফোরমেশনাল আটিকেল লিখতে হবে। ভাল-মন্দ, সুবিধা-অসুবিধা সব কিছু সেখানে তুলে ধরতে হবে।
অথবা সেই প্রোডাক্ট রিলেটেড কোন আর্টিকেল লিখা শেষে আপনার Amazon Affiliate লিঙ্ক দিয়ে দিতে হবে। বাংলাদেশের অনেক মানুষ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অ্যামাজনের এই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে থাকে। এই ক্ষেত্রে আপনার ওয়েবসাইটে টার্গেটেড ভিজিটর সংখ্যা যত বেশি হবে, ইনকামের সম্ভবনাও তত বেশি বৃদ্ধি পাবে।
তবে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট করতে গেলে কিছু টাকা আপনাকে ইনভেস্ট করতে হবে। কারন ওয়েব সাইটের জন্য ডোমেইন-হোষ্টিং কিনতে হবে এবং ওয়েবসাইটকে খুব ভালো ভাবে সাঁজাতে হবে। আর্টিকেল লিখতে হবে আর আপনি যদি আর্টিকেল লিখতে না পারেন সে ক্ষেত্রে আর্টিকেল রাইটার হায়ার করতে হবে।
অর্থাৎ বুঝতে পারছেন সম্পূর্ণ ওয়েবসাইট আপনাকে মেনটেইন করে আপনাকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে হবে। সব কিছু ঠিক ঠাক থাকলে ৬-৯ মাস ভালো ভাবে কাজ করলে অ্যামাজন থেকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে কমিশনের মাধ্যমে আয় করা সম্ভব।
তবে শুরুতে আপনাকে আপনার সাইটটা যাতে গুগলে ভালো একটা Rank পায় তার জন্য SEO করতে হবে, সঠিক ভাবে Competition Analysis করে নিশ সিলেক্ট করে কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করতে হবে। আর এই ব্যাপার গুলোতে আপনি যদি অবহেলা করেন তাহলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে পুরাপুরি ফেইল করার সম্ভবনা রয়েছে।
ইউটিউব এর মাধ্যমে মার্কেটিং
অ্যামাজন এফিলিয়েট প্রোগ্রাম থেকে আয় করার জন্য একটি সহজ মাধ্যমে হল ইউটিউব। কারন ইউটিউব হলো বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহৎ সার্চ ইঞ্জিন। সাধারণত গুগলের পরেই ইউটিউবের স্থান। ইউটিউব দিয়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে প্রয়োজন হবে নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেল।
ইউটিউব চ্যানেল অ্যামাজনের বিভিন্ন প্রোডাক্ট এর ভিডিও বানিয়েে আপলোড করতে হবে। এতে করে কাস্টমাররা যখন ভিডিও দেখে আপনার এফিলিয়েট লিঙ্কের মাধ্যমে অ্যামাজন এর ওয়েবসাইটে ভিজিট করে প্রোডাক্ট কিনবে তখন সে প্রোডাক্টের দাম অনুসারে একটা কমিশন আপনি পেয়ে যাবেন।
ইউটিউব দিয়ে এই এফিলিয়েট করতে কোন পুঁজি প্রয়োজন হয় না। কারণ এখানে কোন ইনভেস্টমেন্ট লাগে না। ঠিকমত দুই থেকে তিন মাস কাজ করলে ইউটিউবে Amazon Affiliate মার্কেটিং করে ভাল মানের টাকা আয় করা সম্ভব।
এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো-শেষ কথা
উপরোক্ত আলোচনা থেকে এফিলিয়েট মার্কেটিং কি? এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো সে সম্পর্কে জানলাম। কিন্তু মনে রাখবেন, এফিলিয়েট মার্কেটিং করা সকলের জন্য উপযুক্ত নয়। কারণ,এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে ধৈর্য্য, পরিশ্রম দুটোই লাগবে। আর অনলাইনে নিয়মিত উপস্থিতির মাধমেই এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো? সম্পর্কিত কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করবেন। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য সহায়ক হয়েছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন থাকে অথবা আরও বিস্তারিত কোনো বিষয় জানতে চান তাহলে কমেন্ট বক্সে আমাকে জানাতে পারেন। এতক্ষন আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url