সৌদি আরবে কোন কাজের বেতন বেশি
প্রিয় পাঠক আপনি কি সৌদি আরবে কোন কাজের বেতন বেশি সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন?তাহলে নিচের পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।কেননা আমারা এ পোস্টটের মধ্যে আলোচনা করেছি সৌদি আরবে কোন কাজের বেতন বেশি সম্পর্কে তথ্য।সাথে আরও আলোচনা করেছি সৌদি আরবের কাজের বেতন ও সর্বনিম্ন বেতন বিস্তারিত তথ্য।
সৌদি সরকার প্রতিনিয়ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অনেক অনেক কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকে।বিশ্বের প্রবাসীদের সবচেয়ে বেশি বেতন দিয়ে থাকে সৌদি আরবে সরকার ।কিন্তু গত বছরের কর্মীদের বেতন অনুযায়ী তিন শতাংশ কমেছে তার পরে ও তারা বেতন প্রদানের দিক দিয়ে বিশ্বের শীর্ষ স্থানে রয়েছে।
কাজের ধরন অনুযায়ী অনেক রকমের ক্যাটাগরির ভিসা অফার করে থাকে এই দেশের সরকার। আর বিশেষ করে কাজের ধরন অনুযায়ী কর্মীদের বেতন আলাদা হয়ে থাকে। এছাড়া কর্মীদের দক্ষতা, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা অনুযায়ী বেতন কম বেশি হয়ে থাকে।
সৌদি আরবে কোন কাজের বেতন বেশি
সৌদি আরবে বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে।কিন্তু সব কাজের বেতন এক নয়। কাজের ধরন বা ক্যাটাগরি অনুযায়ী বেতন কাঠামো আলাদা হয়ে থাকে। এ ছাড়া একজন কর্মীর কাজের অভিজ্ঞতা, যোগ্যতা ও দক্ষতার উপর ভিত্তি করে কাজের বেতন কম-বেশি হয়।
আরো পড়ুনঃ সৌদি আরবের ভিসা ছবি ও সৌদি ই-ভিসার প্রয়োজনীয় কাগজ
আপনারা যদি সৌদিতে কাজের বেতন বেশি চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে একজন অভিজ্ঞ ও দক্ষ কর্মী হতে হবে।তাহলে সৌদি আরবের বিভিন্ন কোম্পানিতে বেশি বেতন কাজের সুযোগ পাবেন। অদক্ষ শ্রমিকদের সৌদি আরবে বেতন কম হয়ে থাকে।
প্রবাসীদের সৌদি আরবে যে সব কাজের বেতন বেশি সে সব কাজের উল্লেখ নিচে করা হলো-
সৌদি আরব হোটেল ভিসা বেতন
বর্তমান সময়ে সৌদি আরবে হোটেল ভিসার সর্ব নিম্ন বেতন ১,৩০০ রিয়াল। এই চাকরিতে মোট ডিউটি সময় আট ঘন্টা।কিন্তু আপনি যদি ওভার টাইম করতে চান করার সুযোগ রয়েছে। আবাসিক হোটেল ভিসায় আপনি ফুল টাইম কাজ করতে পারবেন কিন্তু খাওয়া-দাওয়া সবকিছু সম্পূর্ণ নিজের হতে হবে।
আরো পড়ুনঃ সৌদি আরব থেকে ইতালি যাওয়ার উপায়
সৌদি আরব হোটেল ভিসা পেতে হলে আপনার বয়স সীমা হতে হবে ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। এই ভিসা ধারীদের আকামা, বাসস্থান, মেডিকেল ও ইন্সুরেন্স খরচ সম্পূর্ণ কোম্পানি বহন করে থাকে। এছাড়া কোম্পানি দুই বছর পর পর বাংলাদেশে আসা যাওয়ার বিমানের টিকিট খরচ দিয়ে থাকে ।
সৌদি আরব ড্রাইভিং ভিসা বেতন
যারা ড্রাইভিং ভিসা নিয়ে সৌদি আরবে যেতে চান তাদের জন্য অবশ্যই বেতন সম্পর্কে জানতে হবে।কেননা সৌদি আরবে এ রকমের কাজে অনেক চাহিদা রয়েছে। তাই এই ভিসা নিয়ে গেলে তুলনা মূলক বেতন বেশি পাবেন এবং বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। এই দেশে একজন ড্রাইভারের বেতন ১,৩৫০ রিয়েল থেকে ১,৫০০ রিয়াল হয়ে থাকে। এই ভিসা নিয়ে সৌদি আরবে গেলে ভালো বেতনে কাজ করতে পারবেন।
সৌদি আরব রেস্টুরেন্ট ভিসা বেতন
রেস্টুরেন্ট কাজে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়। সাধারণত বেসিক ডিউটি সময় দশ ঘন্টা হয়ে থাকে।কিন্তু অতিরিক্ত দুই ঘন্টা ওভার টাইম হিসেবে কাজ করা যায়। এ সন ধরনের কাজে সাধারণত থাকা খাওয়া সম্পূর্ণ ফ্রি থাকে।আর খুব অল্প খরচে রেস্টুরেন্ট ভিসা পাওয়া যায়। সৌদি আরবে রেস্টুরেন্ট জবের বেতন ১২০০ থেকে ২০০০ রিয়াল পর্যন্ত হয়ে থাকে। পাশাপাশি যদি কাস্টমারদের সন্তুষ্ট করতে পারেন তাহলে অতিরিক্ত টিপস পাওয়া যায়।
সৌদি আরব ক্লিনার ভিসা বেতন
প্রতিবছর সৌদি সরকার বিভিন্ন দেশ থেকে ক্লিনার নিয়োগ দিয়ে থাকে। ক্লিনারের কাজ হলো বাসা-বাড়ি, অফিস, আদালত, বিমানবন্দর, রাস্তাঘাট এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা। এই ভিসার মাধ্যমে দক্ষ এবং অদক্ষ কর্মীরা কাজের সুযোগ পায়। সরকারিভাবে গেলে খুব কম খরচে যেতে পারবেন। যাদের কোন দক্ষতা নেই তাদের জন্য এই ভিসাটি ভালো হবে। সৌদি আরবে একজন ক্লিনারের বেতন হয়ে থাকে ১০০০ থেকে ১৫০০ রিয়াল।
সৌদি আরবে কাজের বেতন
বাংলাদেশ হতে কাজের উদ্দেশ্যে প্রতি বছর মানুষ সৌদি আরব যায় । সৌদি আরব যাওয়ার আগে কোন কাজের কত টাকা বেতন জানা উচিত। নিচে সৌদি আরবে কাজের বেতন বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হলো-
কাজের ধরন | কাজের বেতন |
ইলেকট্রিশিয়ানের বেতন | ১৩৫০ থেকে ১৫০০ রিয়াল |
কোম্পানি ভিসা | ২০০০ থেকে ৩০০০রিয়াল |
কনস্ট্রাকশন শ্রমিক | ১২০০ থেকে ১৫০০রিয়াল |
অটো মোবাইল | ১৫০০ থেকে ১৮০০রিয়াল |
টেকনিশিয়ান | ১৩০০ থেকে ১৮০০রিয়াল |
প্লাম্বার | ১৫০০ থেকে ২০০০ রিয়াল |
ফ্যাক্টরি শ্রমিক | ১৫০০ থেকে ২০০০ রিয়াল |
ওয়েল্ডিং শ্রমিক | ১২০০থেকে ১৬০০ রিয়াল |
গৃহকর্মী | ১০০০ থেকে ১৫০০ রিয়াল |
আরো পড়ুনঃ মালয়সিয়ার কাজের ভিসা ও কাজের বেতন সম্পর্কে জানুন
বিভিন্ন ধরনের কোম্পানিতে সৌদি আরবে কাজ করতে পারেন। এখানে যাদের শিক্ষাগত যোগত্যা ভালো ও অভিজ্ঞতা রয়েছে তারা চাকরি করলে প্রতি দিনের বেতন ৪০০ থাকে ৫০০ (সৌদি রিয়াল) বাংলাদেশী টাকায় ১১ হাজার ৭২০ টাকা থেকে ১৪ হাজার ৬৫০ টাকা।সংশ্লিষ্ট যে কোন কাজের কমপক্ষে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে বয়স ৩৫ থেকে ৪০ এর মধ্যে থাকতে হবে।
সৌদি আরবে এ রকম বিভিন্ন ধরনের কোম্পানিতে আপনারা কাজ করতে পারেন। এখানে শিক্ষা গত যোগ্যতা ভালো হলে ও অভিজ্ঞতা থাকলে অনেক বেশি বেতনের আপনি চাকরি করতে পারেন। বিশ্বে প্রবাসী কর্মীদের সবচেয়ে বেশি বেতন দেওয়া হয়। সৌদি আরবে যুক্তরাজ্যের পরামর্শ প্রতিষ্ঠান এই তথ্য জানিয়েছেন।
সৌদি আরবের সর্বনিম্ন বেতন কত
আপনি কোন কাজের ভিসা নিয়ে কি সৌদি আরবে কাজে যাচ্ছেন? তাহলে আপনার কাজটা কি সেটার উপর নির্ভর করে আপনার কত টাকা বেতন হবে তা নিধারন করা হবে। সৌদি আরবে বেসরকারি খাতে কর্মরত নাগরিকদের নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা হয়েছে দেশটির মানব সম্পদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
আরো পড়ুনঃ ওমানের ভিসা অনলাইন আবেদনের নিয়ম সমুহ
বেসরকারি বিভিন্ন খাতে কর্মরত সৌদি আরবে কর্মীদের প্রতিদিন ন্যূনতম বেতন হবে ২০০ থাকে ২৫০ রিয়াল। অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭ হাজার ৩২৫ টাকা। বেতন বাড়ানোর জন্য প্রত্যেক কর্মীর মাথাপিছু আয় ৩২০০ রিয়াল ভর্তুকি দেবে মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়।
এই সৌদি আরবে সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারিত হয় ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা। তবে বাংলাদেশ থেকে যে কোন ভিসায় শ্রমিক হিসেবে সেখানে গিয়ে কাজ করতে পারেন। এছাড়াও এসি মেকানিক অটোমোবাইলসহ বিভিন্ন শ্রমিকদের সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণ করা হয় ৫০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা।
এছাড়াও সৌদি আরবের বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট কাজের বেতন অন্য কাজের চাইতে একটু বেশি হয়ে থাকে। যেমন, ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। অতএব সৌদি আরবের সর্বনিম্ন বেতন ৮০০ থেকে ১৫০০ রিয়াল অথবা ১৫০০ থেকে ৩০০০ রিয়াল।
সৌদি আরবে সর্বোচ্চ বেতন কত
বাংলাদেশের অনেক নাগরিক বর্তমানে শ্রমিকসহ বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। তবে বেশিরভাগই সৌদি আরবে বর্তমান বাংলাদেশের শ্রমিকরা বসবাস করছেন। তবে শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন এবং সর্বোচ্চ বেতন ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২ থেকে আড়াই লক্ষ টাকা নির্ধারিত হয়।
কিন্তু আপনি যদি প্রকৃত অর্থে সৌদি প্রবাসী হিসেবে একজন চিকিৎসক, কোন ইঞ্জিনিয়ার, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কোন একজন ব্যাংকার, এবং বিনিয়োগকারী হয়ে থাকেন তাহলে প্রতি মাসে আপনি কয়েক লক্ষ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
সৌদি আরবে কোন কাজের বেতন বেশি-শেষ কথা
উপরে উক্ত আর্টিকেলে আজ আপনাদের সাথে আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিলসৌদি আরবে কোন কাজের বেতন বেশি সে সম্বন্ধে।সাথে আরো আলোচনা করেছি সৌদি আরবের কাজের বেতন ও সর্বনিম্ন বেতন সে সম্পর্কে। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন এবং আপনাদের কাছে অনেক ভালো লেগেছে। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url