সৌদি আরবের ফ্রি ভিসা
আপনারা কি সৌদি আরবের ফ্রি ভিসা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন বা গুগলে সার্চ দিয়েছেন? তাহলে নিচের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।কেননা এ আর্টিকেল এর মধ্যে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছি সৌদি আরবের ফ্রি ভিসা সম্পর্কে। আশাকরি,আর্টিকেলটি পরলে আপনি যে তথ্য সম্পর্কে জানতে চান বিস্তারিত জানতে পারবেন।
সৌদি আরব বিশ্বে আয়তনের দিক থেকে এশিয়ার সব চেয়ে বড় আরব দেশ হিসাবে ধরা হয়। বর্তমান সময়ে সৌদি আরবে ২০ লক্ষেরও বেশি বাংলাদেশী নাগরিক রয়েছে। যারা সৌদি আরবে ফ্রি ভিসায় আসতে চাচ্ছেন বা আসার পরিকল্পনা করছেন।তাদের জন্য সৌদি আরবের ফ্রি ভিসা কি, ভিসা কেমন এবং ফ্রি ভিসার দাম কত ও কি কি ধরনের কাজ করতে হবে এই সকল বিষয় জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সৌদি ফ্রি ভিসা কি
আপনারা অনেকে জানতে চান সৌদি আরবের ফ্রি ভিসা কি? তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে জেনে নেওয়া যাক সৌদি ফ্রি ভিসা কি? প্রথমত ফ্রি ভিসা বলতে আপনারা যদি মনে করেন কোন টাকা লাগবেনা ভিসার জন্য তাহলে ভুল ভাববেন।কেননা ফ্রি ভিসা করতেও টাকা লাগে।শুধু নাম হিসাবে ফ্রি ভিসা পরিচিত।
আরো পড়ুনঃ সৌদি আরবে কোন কাজের বেতন বেশি
ফী ভিসা হচ্ছে এমন একটি ভিসা যেখানে, আপনাকে কোম্পানির অধিনে ভিসা করবে। ভিসা করার পরে আপনার পাসপোর্ট কোম্পানির জমা না রাখে আপনোকে দিয়ে দিবে এবং আপনি ঐ কোম্পানিতে কাজ না করে আপনি যে কোন জায়গায় যে কোন ধরনের কাজ আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী করতে পারবেন।
ফী ভিসাতে যাওয়ার জন্য আপাকে যে কোন ধরনের কাজ শিখে যেতে হবে এবং আপনার কাজের অভিজ্ঞাতা থাকতে হবে।
সৌদি আরব ফ্রি ভিসার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট
সৌদি আরব ফ্রি ভিসা নিয়ে ইতিমধ্যে আমরা উপরের আলোচন করেছি। আপনার ইতিমধ্যে হয়তো জানতে পেরেছেন সৌদি আরব ফ্রি ভিসা বলে আসলে কিছু নাই। সব ভিসার জন্যই অর্থ প্রদান করতে হয়।মূলত ফ্রি ভিসায় সৌদি আরব যেতে হলে আপনার কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে তাহলেই আপনি ফ্রি ভিসায় যেতে পারবেন বা কাজ পাবেন । যাই হোক এ পর্যায়ে আমরা সৌদি আরব ফ্রি ভিসা পেতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
- ভিসা আবেদন পত্র
- জাতীয় পরিচয় পত্র
- বৈধ বাংলাদেশী পাসপোর্ট (সর্বনিম্ন এক বছর মেয়াদ)
- মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
- পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট
- কাজের দক্ষতার সার্টিফিকেট
- কাজের অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট
- করোন ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট
- অন্যান্য সহায়ক কাগজপত্র
নোট ভিসার ক্যাটাগরী অনুযায়ী কাগজপত্র ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। আর মনে রাখবেন এই দেশে কাজের সর্বনিম্ন বয়স ২১ বছর।
সৌদি আরবের ফ্রি ভিসা পাওয়ার উপায়
মূলত সৌদি আরবের সরকার কর্তৃক কোন ধরনের ফ্রি ভিসা সার্ভিস এখন পর্যন্ত চালু হয়নি এবং কখনো এমন ফ্রী ভিসা পাওয়া যাবে কিনা তা নিশ্চিত নয়।আপনাকে অর্থ প্রদান করে কোম্পানির মাধ্যমে ফ্রি ভিসা নিতে হবে।
আর সৌদি আরবের ফ্রি ভিসা যেতে চান তাহলে অটোমোবাইল, টেকনিশিয়ান,ইলেকট্রিশিয়ান, রেস্টুরেন্ট বা ওয়েল্ডিং কাজ শিখে যেতে হবে তাহলে খুব সহজে ফ্রী ভিসায় যেতে পারবেন।
এছাড়া সৌদি আরবের যদি আপনার কোন আত্মীয় থাকে যেমন বাবা, ভাই এদের মাধ্যমে যেতে পারেন।তাহলে তারা যে কাজ করে তাদের আন্ডারে সৌদি আরব যেয়ে কাজ করতে পারবেন।
সৌদি আরবের ফ্রি ভিসার দাম কত
সৌদি আরবের ভিসা যখন থেকে দেওয়া শুরু হয় তখন থেকে এক জনের জন্য মাত্র ২,০০০ রিয়াল থেকে ২,৫০০ রিয়ালের মতো খরচ হত। আর ভিসা এজেন্সির মাধ্যমে হলে ৩ হাজার রিয়াল। কিন্তু সেই ভিসাটা যদি কপিল এর কাছ থেকে আমরা ডাইরেক্ট নিতে চাই তখন ৫,০০০ থেকে ৬,০০০ হাজার রিয়াল লেগে যায়।
আরো পড়ুনঃ সৌদি আরব থেকে ইতালি যাওয়ার উপায়
বর্তমান সময়ে যেহেতু টাকার মান অনেক বেশি এর জন্য সৌদি আরব ইকামার খরচ আনুমানিক মেয়াদ ভেদে ৯,০০০ হাজার রিয়াল থেকে ১৫,০০০ হাজার রিয়াল হয়ে থাকে। মেয়াদ সাধারণত এক বছরের বেশি হয়ে থাকে। তবে সর্বনিম্ন মেয়াদ তিন মাস পর্যন্ত করা যায়। এ ক্ষেত্রে খরচ অনেক কম পড়ে। পরিচিত ব্যক্তিদের মাধ্যমে সৌদি আরবে ফ্রি ভিসায় আসলে আনুমানিক খরচ প্রায় ৪ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা।
সৌদি আরবের ফ্রি ভিসাতে যাওয়া যায় তাহলে সৌদি আরব যাওয়ার পর তিন মাস পর্যন্ত ফ্রি ভিসার মেয়াদ থাকে।তারপর আপনাকে ইকামা বানাতে হবে।কারন ইকামা ছাড়া আপনি সৌদি আরবে থাকতে পারবেন না।আর এই ইকামা ১ বছর মেয়াদে বানাতে হলে প্রায় ৩ লক্ষ টাকার কাছাকাছি লাগতে পারে।
সৌদি আরবের ফ্রি ভিসার বেতন কত
আপনি যদি সৌদি আরবে ফ্রি ভিসায় যান তাহলে বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পাবেন। এই ভিসায় আপনি স্বাধীন ভাবে যে কোন জাইগাতে কাজ করতে পারবেন। তবে কাজের ভরসা কম কিন্তু আপনার কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে কাজের সমস্যা হবে না।
কাজের ধরন | কাজের বেতন |
ইলেকট্রিশিয়ানের | ১৩৫০-১৫০০ রিয়াল |
কোম্পানি ভিসা | ২০০০-৩০০০রিয়াল |
কনস্ট্রাকশন শ্রমিক | ১২০০-১৫০০রিয়াল |
অটো মোবাইল | ১৫০০-১৮০০রিয়াল |
টেকনিশিয়ান | ১৩০০-১৮০০রিয়াল |
প্লাম্বার | ১৫০০-২০০০ রিয়াল |
ফ্যাক্টরি শ্রমিক | ১৫০০-২০০০ রিয়াল |
ওয়েল্ডিং শ্রমিক | ১২০০-১৬০০ রিয়াল |
গৃহকর্মী | ১০০০-১৫০০ রিয়াল |
আরো পড়ুনঃ সৌদি ভিসা অনলাইনে আবেদনর নিয়ামবলি
এখন আপনি সৌদি আরবের ফ্রি ভিসায় এ যে ধরনের কাজ পাবেন সে কাজের অনুযায়ী আপনি কাজের বেতন পাবেন।
সৌদি আরবের ফ্রি ভিসা সুবিধা
সৌদি আরবের ফ্রি ভিসার সব থেকে বড় সুবিধা হল আপনি যে কোন ধরনের কাজ যে কোন সময় করতে পারবেন।আপনাকে একটি কাজের মধ্যে সিমাবদ্ধ থাকতে হবে না আপনার ইচ্ছা বা স্বাধীনতা অনুযায়ী কাজ করতে পারবেন।
সৌদি আরবের ফ্রি ভিসা অসুবিধা
সৌদি আরবের ফ্রি ভিসার সব থেকে বড় অসুবিধা হল ভিসার মেয়াদ শুধু ৩ মাস থাকে।আপনাকে সৌদি আরবের যাওয়ার ৩ মাস পর আবার ইকামা করতে হয়। আর এই ইকামা ১ বছর মেয়াদে বানাতে হলে প্রায় ৩ লক্ষ টাকার কাছাকাছি লাগতে পারে। এ আপনার খরচ বেশি টাকা পরে যায়।আবার অনেক সময় সঠিক কাজ খুজে পাওয়া যায় না।
সৌদি আরবের ফ্রি ভিসা কেমন
যারা সৌদি যাওয়ার কথা ভাবছেন অনেকেরই মনে একটি প্রশ্ন জাগে সৌদি আরবের ফ্রি ভিসা পাওয়া যায় কিনা।আবার ফ্রি ভিসায় কেমন সুযোগ সুবিধা এই সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন এই পোস্টের মধ্যে। একদম ফ্রি বলতে কোন ভিসা নাই মালিকের অনুমতি নিয়ে অন্য কাজ করাকেই বলে ফ্রি ভিসা।
আপনি যদি এই ফ্রি ভিসা সৌদিতে যান তাহলে বাসা ভাড়া, চলাচল,খাওয়,বিমান ভাড়া সব কিছু আপনাকে নিজে খরচ করতে হবে।এবং মালিককে মাসিক বা বছরিক হিসেবে টাকা দিতে হবে এবং যখন ছুটিতে যাবেন তখন সরকারকে মাসিক একটা টাকা দিতে হয় যে ২ মাস ৩ মাস আপনি যত মাস থাকবেন ওই হিসাব করে সরকারকে টাকা দিতে হয় তো টাকাটা আপনাকে নিজেকে বহন করতে হবে।
বাংলাদেশে বিভিন্ন কাজের মৌসুমে শ্রমিকরা সাধারণত বাজারে উঠে থাকে। সেখান থেকে মালিকেরা ভাড়া নিয়ে থাকে। এই ভিসায় মূলত এই ভাবে কাজ করা হয়। আমাদের পরামর্শ হচ্ছে আপনি এ ধরনের ভিসা নেওয়া থেকে বিরত থাকবেন যদি আপনার সৌদি আরবের পরিচিত কেও না থাকে।
সৌদি আরবের ফ্রি ভিসায় যাওয়ার পরামর্শ
যদি পরিচিত লোকের মাধ্যমে হয় বা আপনার পরিচিত কেও থাকে তাহলে সৌদি আরবের ফ্রি ভিসায় যাবেন।না হলে কফিলের সাথে কাজের চুক্তি করে যাবেন। তাহলে সৌদি আরবে যেয়ে কাজের কোন অসুবিধা হবে না।
আরো পড়ুনঃ সৌদি আরবের ভিসা ছবি ও সৌদি ই-ভিসার প্রয়োজনীয় কাগজ
এ ছাড়া আপনার যদি বিভিন্ন ধরনের কাজের অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে আপনি সৌদি আরবের ফ্রি ভিসায় যেতে পারেন।কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে বিভিন্ন সপে সেলস ম্যান এর জব, রেস্টুরেন্টে কাজ বা টেকনিশিয়ান এর কাজ করতে পারবেন ।ইয়
সৌদি আরবের ফ্রি ভিসা শেষ কথা
আমাদের আজকের আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিল সৌদি আরবের ফ্রি ভিসা সম্পর্কে। সাথে আরো আলোচনা করেছি সৌদি আরবের ফ্রি ভিসার দাম ও বেতন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হবেন এবং আপনার কাছে অনেক ভালো লাগবে। এমনি গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষনীয় আর্টিকেল প্রতিদিন পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েব সাইটটি ভিজিট করুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url