গোলাপ ফুল কি ভাবে টবে চাষ করা যাায় জানুন
প্রিয় পাঠক আপনি কি গোলাপ ফুলের চারা তৈরি ও চাষ সম্পর্কে জানতে চান তাহলে নিচের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন । কেননা এ আর্টিকেলের মধ্যে আলোচনা করেছি গোলাপ ফুলের চারা তৈরি ও চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।সাথে আর বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছি গোলাপ ফুলের সৌন্দর্য ও কি ভাবে গোলাপ ফুল সংগ্রহ করা যায়।
গোলাপ ফুল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।কেননা এ আর্টিকেলটি মধ্যে গোলাপ ফুল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। গোলাপ ফুল সম্পর্কে না জানলে আর্টিকেলটি পড়লে আশা করি অনেক উপকৃত হবেন। আশা করি গোলাপ ফুল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের সাথে থাকবেন।
গোলাপর সৌন্দর্য্য
গোলাপ ফুল সবার কাছে ভালোবাসার ফুল হিসাবে পরিচিত। আবার গোলাপ পরিচিতি সৌন্দর্য্য ও লাবন্যের প্রতীক হিসাবে। এ ফুল একটি শীতকালীন মৌসুমী ফুল। তবে বর্তমানে গোলাপ সারা বছর ধরেই চাষ করা হচ্ছে। বর্ণ, গন্ধ, কমনিয়তা ও সৌন্দর্যের বিচারে গোলাপকে ফুলের রানী বলা হয়। পুষ্প প্রেমীদের সবচেয়ে প্রিয় ফুল গোলাপ।
আমরা জানি গোলাপ প্রায় দেশের অনেক ধরনের জলবায়ুতে খুব ভাল ভাবে মানিয়ে নিতে পারে। পৃথিবীর সব দেশেই সারা বছর কমবেশি গোলাপ ফুলের চাষ করা হয়ে থাকে। গোলাপ সবার কাছে অনেক পছন্দের ফুল। গোলাপ সাধারণত কাট ফ্লাওয়ার হিসেবে বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে, বাগান, লন, কেয়ারী, বারান্দা সাজাতে গোলাপের জুড়ি নাই। আতর ও সুগন্ধি শিল্পেও গোলাপের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।
গোলাপের জাত
আমরা গোলাপ ফুল অনেক ভালোবাসি । সাড়া বিশ্বে বর্তমান সময়ে অনেক ধরনের জাতের গোলাপ রয়েছে।তার মধ্যে বাংলাদেশে চাষ হয় এ রাকম বিভিন্ন ধরনের জাত হলোঃ মিরান্ডি, পাপা মেলান্ড, ডাবল ডিলাইট, তাজমহল, প্যারাডাইস, মন্টেজুমা, টাটা সেন্টার, সিটি অব বেলফাষ্ট ইত্যাদি
গোলাপ চাষের জলবায়ু ও মাটি
গোলাপ ফুলের চাষ মূলত শীত ও নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুর ফুল। আমরা গোলাপ ফুল অনেক ভালোবাসি । তাই বেশি উষ্ণ ও আর্দ্রতায় গোলাপ ফুলের চাষ ভাল হয়না। ২২-৩০ ডিগ্রী সে. তাপমাত্রা, ৮৫% আপেক্ষিক আর্দ্রতা এবং ১০০-১২৫ সেমি গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত গোলাপ চাষের জন্য উপযোগী। গোলাপ চাষের জন্য ৬.০-৬.৫ pH মানযুক্ত সুনিষ্কাশিত এবং উর্বর দোঁ-আশ মাটি উত্তম। ফুলের গুনগতমান সূর্যালোকের উপস্থিতির উপর অনেকাংশে নির্ভর করে। এক্ষেত্রে বিকাল অপেক্ষা সকালের রোদ বেশি কার্যকর।
গোলাপের রোপণ সময়
গোলাপের চারা রোপণ সঠিক সময়ে করা উচিত।কেননা সঠিক সময়ে চারা রোপণ না করলে গাছের সঠিক ভাবে বারবেনা। বাংলাদেশে গোলাপ ফুলের চারা লাগানোর সঠিক সময় সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত।
গোলাপের বংশবৃদ্ধি
গোলাপ ফুলের বীজ থেকে,কলম বা চোখ কলমের থেকে নতুন গাছ তৈরি হয়ে থাকে।নতুন গাছ তৈরি করার উপায় বাডিং বা চোখ কলম। যার মাধ্যমে বাণিজ্যিক ভাবে কাটা ফুলের উৎপাদন করা হয়ে থাকে। যে জাতটির বংশবৃদ্ধি করা হয় তার চোখ অপর একটি সুবিধামত আদিজোড় এর উপর স্থাপন করা হয়।
আমরা জানি আদিজোড় গাছের সজীবতা, উৎপাদনশীলতা, ফুলের গুনাবলী, ঝোপের স্থায়ীত্ব, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং মাটি ও আবহাওয়ার সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আদিজোড়ের কাটিং সমূহ (পেন্সিল আকৃতি) গ্রীষ্মের শেষে তৈরী করা হয়ে থাকে এবং নার্সারীতে সারি করে ২৫-৩০ সেঃ মিঃ দুরত্বে রোপন করা হয়। প্রায় ৬ মাস পর এইসব কাটিংসমূহ বাডিং এর জন্য উপযুক্ত আকৃতির কান্ড তৈরী করে থাকে।
টবে গোলাপের চাষ
টবে গোলাপের চাষ করা অনেক সহজ।গোলাপ সবার কাছে পরিচিত ফুল।এ ফুল দেখতে অনেক সুন্দর হয়। সবার কাছে ভালোবাসার প্রতিক হিসাবে পরিছিত।গোলাপ টবে চাষ করে ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব।
টবের স্থান
গোলাপের টব সবসময় খোলা-মেলা আলো বাতাসপূর্ণ এমন স্থানে রাখতে হবে যাতে সকালের সূর্য কিরণ পায়।আবার যেন দিনে অন্তত ৬-৮ ঘন্টা রোদ পায়। বিকেলের রোদ (বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে) না লাগানোই ভাল, কেননা এতে ফুলের রং ফ্যাকাসে হয়ে যায়।আর যদি ভালো আলো বাতাস ও রোদ পায় ফুলর রং অনেক সুন্দর হয় ।
আমরা জানি গোলাপ গাছটিতে যাতে চারিদিক হতেই আলো পড়ে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। যদি চারিদিকে আলো না পরে শুধু যে দিকেআ লো পরবে গাছটি কেবল আলোর দিক দিয়েই বাড়বে। এজন্য টবসহ গাছটি মাঝে মাঝে ঘুরিয়ে নিতে হয়। গ্রীষ্মের প্রখর রোদ থেকে টবের গোলাপ গাছকে রক্ষা করার জন্য পর্যায়ক্রমে রোদ ও ছায়ায় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে টব রাখলে গাছ ভাল থাকবে। ফুলও বেশি দিন ধরে পাওয়া যাবে।
মাটি তৈরি
সঠিক ভাবে মাটি তৈরি করা যায় তাহলে ফুল চাষ ভাল হবে।গোলাপ চাষের জন্য দো-আঁশ মাটি ভালো।এ মাটিতে গোলাপ চাষের ভালো হয়।গোলাপ চাষের জন্য এঁটেল মাটি খুব একটা ভালো নয়। গোলাপ গাছের টব তৈরি জন্য সার মাটি এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে মাটি বেশি করে ঝুড়ালো করতে হবে যাতে করে মাটিতে পানি না দাঁড়ায়।
সবাই মাটি তৈরির জন্য ১ ভাগ দো-আঁশ মাটি, ৩ ভাগ গোবর সার বা কম্পোষ্ট, ১ ভাগ পাতা পচা সার, আধ ভাগ বালি (নদীর সাদা বালি হলে ভাল হয়) দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে তাতে এক মুঠো সরিষার খৈল ও এক চামচ চুন মিশিয়ে ১টি ২০ সেঃমিঃ (৮ ইঞ্চি) টবে একমাস রেখে দিতে হবে।প্রথম একমাস টবেপানি দিয়ে মাটি উল্টে পাল্টে দিতে হয়।তাহে মাটির মিশ্রণ ভাল হবে।
আমরা জানি অনেকে মাটির মিশ্রণে ব্যবহৃত চা পাতা ব্যবহার করেও ভাল ফল পেয়েছেন। টবে নিচের কয়েক সেঃমিঃ পরিমাণ অংশে ইট বা মাটির হাড়ি পাতিলের ভাংগা টুকরা এমন ভাবে বিছিয়ে দিতে হয় যাতে টবের মাটি এগুলোর উপর থাকে। এতে বাড়তি পানি নিকাশের সুবিধা হবে ও গলাপের চারা ভালো ভাবে বাড়বে সঠিক ভাবে মাটি তৈরি করা হয়।
টবে চারা বসানোর সময়
বাংলাদেশে বছরের যে কোন সময়ই টবে গোলাপের চারা বসানো যায়। তবে গলাপের চারা শীতকালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ও জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে লাগানোর ভালো সময়। এসময় চারা লাগালে বেশী দিন ধরে ফুল পাওয়া যায়, গাছের পরিচর্যা করতে সুবিধা হয, রোগ পোকার আক্রমণও কসিতকালে
চারা সংগ্রহ
গোলাপ ফুল চারা সংগ্রহের সময় সুন্দর চারা কি না দেখতে হবে। চারা সংগ্রহের সময় চারার গোড়ার মাটির আছে কিনা তা ভাল করে দেখে নিতে হবে। বিশ্বস এবং পরিচিত নার্সারি থেকে চারা সংগ্রহ করা উচিত। চারা সংগ্রহের ব্যাপারে অভিজ্ঞ লোকের পরামর্শ নেয়া যেতে পারে।
টবে চারা বসানো
টবে চারা বসানো অনেক সহজ।চারাটি টবের মধ্যে সোজা করে বসাতে হবে।তারপর টবের ওপরে কিছু সার দিয়ে গাছের গোড়ার মাটি চাপ দিতে হবে।এরপর চারা এমনভাবে বসাতে হবে যাতে কুঁড়ি বের হবার গিট পর্বটি মাটির ওপরেই থাকে।
সেচ পদ্ধতি
গোলাপ গাছ টবে বসানোর পর অন্তত ২/৩ বার পানি সেচ দিতে হবে। চারা গাছ যাতে রোদ বা বৃষ্টির ঝাপ্টা থেকে রক্ষা পায় সে দিকে খেয়াল রাখা দরকার। প্রথম অবস্থায় ৩/৪ ঘন্টা এবং ধীরে ধীরে বাড়াতে বাড়াতে ৭/৮ ঘন্টা রোদ পাওয়ার ব্যবস্থা করলে গোলাপ ভাল হবে।
পানি সেচ দেবার সময় খেয়াল রাখতে হবে যে গাছের গোড়ায় পানি না থাকে।আর নতুন পাতা ও ফুলের কুঁড়ি সময় বেশি পানি দরকার হয়। আর এ সময় সকাল বা সন্ধ্যা সেচ দেয়া উচিত। ঝাঁঝরি দিয়ে ডাল-পালাসহ সমস্ত গাছটিই পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিতে হবে।
সার প্রয়োগ
গোলাপ গাছ টবে লাগানোর পর গাছ মাটির সাথে লেগে গেলে ১৫ দিন বা এক মাস পর পর সার দিতে হয়। শীত কালের পরেই টবের উপরের ৮/১০ সেঃমিঃ মাটির স্তর তুলে দিয়ে খালি জায়গায় পচা গোবর সার ও নতুন ফাঁপা মাটি দিয়ে ভরে দিতে হয়। এর পর খড় বা পাতা দিয়ে ঢেকে গ্রীষ্মের প্রখর রোদ থেকে গাছের শিকড়কে রক্ষা করত হয়। শীতকালে গাছ ছাটার পর, প্রতি টবে ৩ মুঠা গুঁড়া গোবর সার ও ১ মুঠা স্টিমড্ হাড়ের গুঁড়া বা স্টেরামিল প্রয়োগ করিতে হইবে।
গোলাপ গাছে সার প্রয়োগের জন্য পুরো শীতকাল ধরে ১ মাস অন-র অন-র ১ মুঠা করে স্টেরামিল প্রয়োগ করতে হবে।গোলাপ ফুল ভাল উৎপাদনের জন্য পাতার সার ও ফলিয়ার স্প্রের জনপ্রিয়তা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কয়েকটি রাসায়নিক সার মিশিয়ে এই সার প্রস্তুত করতে হয়। শীতকালে রৌদ্রোজ্জ্বল দিনের সকাল ৮টার মধ্যে ফলিয়ার স্প্রে করতে হয়।
আরো পড়ুনঃ ডালিয়া ফুলের চারা তৈরি ও চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন
আমরা জানি দুই ধরনের পাতা সার গাছে দেওয়া যায়। এতে করে ফুল ভালো হয়। ১টি গাছের স্বাস্থ্য ও ফুল ভাল করার জন্য অপরটি ট্রেস এলিমেন্টের জোগান দেয়ার জন্য, যেমন- ইউরিয়া, ডাই-অ্যামোনিয়াম সালফেট ও ডাই-পটাশিয়াম ফসফেট প্রতিটি ১০ গ্রাম করে ১০ লিটার পানিতে গুলে স্প্রে দ্রবণ তৈরি করতে হবে। ট্রেস এলিমেন্টের জন্য ম্যাগনেশিয়াম সালফেট ২০ গ্রাম, ম্যাঙ্গানিজ সালফেট ১৫ গ্রাম, ফেরাস সালফেট ১০ গ্রাম, বোরাক্স ৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে প্রতি লিটার পানিতে উল্লেখিত মিশ্রণটির ২ গ্রাম করে গুলিয়ে স্প্রে করতে হবে।
সার প্রয়োগের জন্য কীটনাশক বা বালাইনাশক মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।কিন্তু দুটি সার এক সাথে মিশিয়ে স্প্রে করা যাবে না। পাতার সার টবের গোলাপের জন্য অপরিহার্য এবং জমির গোলাপের জন্য উপকারী। সেপ্র করার সময় যেন পাতার দু'দিকেই ভালভাবে লাগে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। টবের গাছে সারা বছরই তরল সার প্রয়োগ করতে হবে। সঠিক মাত্রা বা প্রয়োগ বিধি না জেনে রাসায়নিক সার ব্যবহার না করাই ভাল।
চুন-পানি প্রয়োগ
চুন-পানি প্রয়োগ জন্য প্রতি লিটার পানিতে ১ চামচ গুড়ো চুন পরিস্কার পিানতে ভাল করে গুলে পাতলা ন্যাকড়ায় ছেঁকে প্রতি ৩ মাস পর পর দিতে হয়। চুন-পানি দেবার ১৫ দিনের মধ্যে অন্য কোন সার না দিয়ে শুধু পানি দিতে হয়
গাছ ছাঁটাই
গোলাপ গাছ ছাঁটাই করার জন্য মৃত ডাল অপসারন করতে হবে। আবার গাছের উপযুক্ত আকৃতি প্রদানের জন্য, প্রত্যকটা ডালে ফুল আসবার জন্য এবং প্রয়োজনীয় রোদ্র পাবার জন্য নিয়মিত গাছ ছাটাইয় করতে হয়। গোলাপ প্রচুর শাখা বিস্তারকারী গুল্ম জাতীয় গাছ। গাছের ফুল দেয়া শেষ হলেই গাছ ছেঁটে দিতে হবে। নিয়মিত গাছ ছাঁটাই করলে বেশী ও বড় আকারের ফুল পাওয়া যায়।
আমারা জানি বর্ষার পর অক্টোবর-নভেম্বর মাস ছাঁটাইয়ের জন্য ভাল সময়। সাধারনত ডাল কিছুটা বড় রেখে ডাল ছেঁটে দিতে হয়। ডাল এমনভাবে কাটতে হবে যাতে থেঁতলে বা ছিঁড়ে না যায়। এ জন্য ধারালো ছুরি ব্যবহার করতে হয়। সাদা, হলুদ, হালকা হলুদ ও দো-রঙা জাতের গোলাপ গাছ খুব হালকা ছাঁট আর লাল জাতের গোলাপ গাছে শক্ত ছাঁট দিতে হয়।গাছ ছাঁটাইয়ের পর ডাইব্যাক রোগের আক্রমণ হতে পারে। সুতরাং গাছ ছাঁটাইয়ের আগে ও পরে কীটনাশক ও ছত্রাক নাশক দুইই প্রয়োগ করা দরকার।
রোগ-পোকা দমন
গোলাপের রোগ-পোকা দমনের জন্য বিভিন্ন কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়। শুঁয়ো পোকা অন্য যে কোন পোকা দেখা মাত্র ধরে মেরে ফেলতে হবে। লাল মাকড়সার আক্রমণ ও ডাইব্যাক রোগই বেশ মারাত্মক।সেচের সময় টবে জল জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করলে লোহার শিক দিয়ে টবের মাটি ছিদ্র করে পানি বের হবার পথ করে দিতে হবে। এ কাজটা একটু সাবধানে করা দরকার যাতে শিকড়ের কোন ক্ষতিনা হয়। পানি দেবার আগের দিন প্রতিবারই টবের ধারের কাছের মাটি বেশী করে এবং মাঝখানের মাটি কম করে খুঁচিয়ে দিতে হয়।
গ্রীষ্মকালীন পরিচর্যা
সাধারণত টব ছাদে বা পাকা স্থানে রাখলে পুরু খড় বিছিয়ে তার উপর ইট বা কাঠের টুকরা রেখে সেগুলোর ওপর টব রাখা উচিত। গ্রীষ্মকালে প্রচন্ড তাপের সময় পানি না দিয়ে রাতের দিকে যখন তাপমাত্রা কমতে থাকে (রাত ৮ টার পর) ছাদের টবে তখন জল দেয়াই ভাল। এসময় পানির তাপমাত্রা আবহাওয়ার সঙ্গে মোটামুটি সামঞ্জস্য পূর্ণ থাকেন
বর্ষাকালীন পরিচর্যা
বর্ষার সময় টবের ভিতরে যেন পানি না জমে সে দিকে ভাল ভাবে লক্ষ করতে হবে।আর গাছের পাতা যেন পচে না যায় এ দিকে ভাল করে খেয়াল রাখতে হবে।
ফুলের চারা রোপণ
ফুলের চারা রোপণের সময় আমাদের ভাল ভাবে পলেথিন ব্যাগ থেকে বার করতে হবে।যাতে করে মাটি ভেঙ্গে না যাই।তারপর গর্তের মধ্যে গাছটি এমনভাবে ঢুকাতে হবে যাতে চারাটির গোড়া আগে যতটুকু মাটির নীচে ছিল ততটুকুই যেন গর্তে লাগানোর পর মাটির নীচে থাকে।
চারা গাছ গর্তের মধ্যে বসানোর পর কিছু পচা গোবর বালি বা দো-আঁশ মাটির সাথে একসাথে মিশিয়ে শিকড়ের চারিদিকে ছিটিয়ে দিতে হয়। তারপর গাছের গোড়ায় মাটি দিয়ে চেপে দিয়ে পানি দিতে হয়। চারা লাগানোর পর প্রথম রোদ থেকে গাছকে রক্ষা করার জন্য ছায়ার ব্যবস্থা করতে হয়।
গাছের শিকর মাটির সাথে ভাল ভাবে লেগে গেলে মাটি বুঝে পানি দিতে হয়।যদি মাটি বেলা হয় তাহলে ঘন ঘন পানি দিতে হবে।আর এঁটেল মাটি সময় ১ থেকে ২ দিন পর পানি দেয়া দরকার। তবে কোনক্রমেই যাতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।গোলাপের শিকড়ে যদি শক্ত মাটি থাকে, তাহলে গাছ লাগানোর আগে পানি দিয়ে ভিজিয়ে মাটি নরম করে নিতে হয় যাতে শিকড় ঠিকমত বাড়তে পারে।
ফুল সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনা
গোলাপ ফুল সংগ্রহ জন্য কিছু নিয়ম অনুসরন করতে হয়।গোলাপ ফুল সদ্য ব্যবহারের জন্য আধফোটা ফুল কাটা উচিত। কাটা ফ্লাওয়ার হিসাবে ফুল লম্বা দন্ড ও কয়েকটি পাতা সহ ধার যুক্ত কাঁচি বা ছুরি দিয়ে কাটতে হয়।তাহলে ফুল দেখতে বেশি ভালো লাগে।
গোলাপ ফুল সংগ্রহ করার কাজ অনেক সকালে বা বিকেলের শেষ সময়ে করা উচিত।বাজারের চাহিদার উপর ফুলের প্যাকেজিং নির্ভরশীল।অনেক উৎপাদনকারী কাছে স্থানীয় বাজার থাকলে প্যাকেজিং ছাড়াই ফুলের আঁটি বা গোছা বাজারে সরবরাহ করে থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আঁটিসমূহ খবরের কাগজ দ্বারা আবৃত থাকে।
ফুলের ফলন
শীতকাল ও গ্রীষ্মকাল উভয় সময়ে গোলাপের চাষ করা হয়। আর গোলাপ ফুলের ফলন প্রধানত আবহাওয়া ও গোলাপের জাতের উপর নির্ভর করে। আদর্শ উৎপাদন পরিবেশে লম্বা কান্ডযুক্ত জাত প্রতি বছর গাছ প্রতি প্রায় ১৫ থেকে ৩০ টি ফুল উৎপন্ন করে। গ্রীষ্মকালীন সময়ে বিশেষ করে যখন ফুলের মান এবং বাজার দর কমে যায়, তখন কুঁড়ি ছাঁটাই করে গাছের দৈহিক গঠন ও বৃদ্ধি ঠিক রাখতে হয়।
গোলাপ ফুল কি ভাবে টবে চাষ করা যাায়-শেষ কথা
উপরে উক্ত আর্টিকেলে আজ আপনাদের সাথে আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিল গোলাপ ফুল কি ভাবে টবে চাষ করা যাায় সে সম্বন্ধে। সাথে আরো আলোচনা করেছি সাথে আর বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছি গোলাপ ফুলের চারা তৈরি ও চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। সাথে আর বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছি গোলাপ ফুলের সৌন্দর্য ও কি ভাবে গোলাপ ফুল সংগ্রহ করা যায়।এমনই গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষনীয় আর্টিকেল প্রতি দিন পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করবেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url