চুলের যত্ন ও সমস্যা সমাধানের প্রাকৃতিক উপায় সম্পর্কে পড়ুন

আপনি হয়তো চুলের যত্ন ও সমস্যা সমাধানের প্রাকৃতিক উপায় সম্পর্কে জানতে গুগলে সার্চ করেছেন। চুলের যত্ন প্রাকৃতিক ভাবে নেওয়ার অনেক নিয়ম। কিন্তু আমরা অনেকেই চুলের যত্ন প্রাকৃতিক ভাবে নেওয়ার  সম্পর্কে জানি না । তবে সমস্যা নেই আজকে আমি নখের যত্নে প্রাকৃতিক ভাবে নেওয়ার সম্পর্কে আপনাকে স্পষ্ট ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব।

যেহেতু আপনি চুলের যত্ন প্রাকৃতিক ভাবে নেওয়ার  সম্পর্কে জানেন না সে ক্ষেত্রে চুলের যত্ন প্রাকৃতিক ভাবে নেওয়ার সম্পর্কে আমাদের ভালো জ্ঞান রাখা জরুরি। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে আমরা চুলের যত্ন প্রাকৃতিক ভাবে নেওয়ার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করি।

চুল দ্রুত বড় করার উপায়

সঠিক যত্নে চুল বড় হওয়া সম্ভব। আর এরজন্য রয়েছে প্রতিষ্ঠিত কিছু উপায় নিচেসে গুলো দেওয়া হল। 

  • শুকনা মাথারত্বকে মালিশ করুন
  • ভেজাচুল মালিশকরা
  • আগাছাঁটুন
  • যথার্থ সম্পূরকগ্রহণ করা
  • কন্ডিশনার ব্যবহার
  • ঠাণ্ডা পানি দিয়ে চুলধোয়া
  • স্টাইলিং টুলস ব্যবহার নাকরা

চুল পড়ার কারণ

আমাদের মাথায় অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা,শরীরে পুষ্টির অভাব ইত্যাদি কারণে চুলপড়ে যেতে পারে। এছাড়াও কিছু কিছু বাহ্যিক কারণেও চুল পড়া বেড়ে যেতে পারে। আবার বদঅভ্যাস, ‘হেয়ার স্টাইলিং’ ইত্যাদি কারণেও চুল পড়ে। স্বাস্থ্য বিষয়ক একটি সাইটে চুল পাতলা হয়ে যাওয়ার কিছু কারণ উল্লেখ করা হয়। 

গরম পানিতে গোসল করা

গরম পানিতে গোসল করলে চুলের অনেক ক্ষতি হয় । আমরা প্রতিনিয়ত গরম পানিতে গোসল করার কারণে ত্বকের মতো চুল ও শুষ্ক হয়ে যায়। তাছাড়া এতে করে চুলের গোড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং চুল পড়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। 

গরম স্টাইলিং মেশিন ব্যবহার

আমরা জানি  চুলের বিভিন্ন স্টাইল করার জন্য প্রায়ই কিছু মেশিন ব্যবহার করা। আর এসব মেশিনের গরমতাপ চুল গজানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন ও মাথার ত্বকের বাইরের স্তরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ফলে ত্বকের আদ্রতা কমে যায় এবং চুলফেটে যাওয়ার প্রবণতা অনেক গুণ বেড়ে যায়। হেয়ার স্ট্রেইটনার, হেয়ার ড্রাইয়ার ইত্যাদি হেয়ার স্টাইলিং টুলস ব্যবহার যতটা সম্ভব এড়িয়ে যাওয়া উচিত। 

শক্ত করে চুল বাঁধা

শক্ত বেশি করে চুল বাঁধা যাবে না । বাইরে বের হওয়া বা ঘুমানোর সময় চুলে শক্ত করে বেণি করার অভ্যাস আছে অনেকেরই। তবে এটি চুলেরজন্য ক্ষতিকরকারণ শক্ত করে চুল বাঁধলেচুলের গোড়ায় বেশি পরিমাণে চাপ পড়ে যা ত্বকের লোমকূপ ক্ষতি গ্রস্ত করে। এতে করে অনেক সময়লোমকূপ স্থায়ীভাবে দুর্বল হয়ে যায় এবং চুল গজানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। ফলস্বরূপ, মাথায় টাকও পড়ে যেতে পারে। এ পরিস্থিতি এড়াতে যথাসম্ভব হালকা করে চুল বাঁধতে হবে। বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর সময় চুল শক্ত করে বাঁধা উচিত নয়। 

হেয়াজেজস্টাইলিংয়ে ব্যবহৃত প্রসাধনী

যেন কোন চুলে হেয়ারস্প্রে বা জেল ব্যবহার করলে চুল অনেক সময়রুক্ষ হয়ে যায়। কেননা হেয়ারস্প্রে বা জেলে অ্যালকোহলের মাত্রা বেশি থাকে যা চুল শুষ্ক ও ভঙ্গুর করে ফেলে। তাছাড়া এই প্রসাধনীগুলো দীর্ঘ সময় চুলের উপর আস্তরণের মতো লেগে থাকে। এতে করে চুল দুর্বল হয়ে যায়। যার কারণে চুল আঁচড়ানোর সময় চুল পড়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। চুল শক্ত বা চটচটে করে এমন পণ্য ব্যবহার না করে চুলের আদ্রতা রক্ষাকারী স্টাইলিং ক্রিম ব্যবহার করা উচিত। এতে করে চুল আঁচড়ানোর সময় চুল পড়ে যাবে না। 

চুল ঠিকভাবে পরিষ্কার না করা

চুল ভাল ভাবে পরিষ্কার না করলে চুল পরে যেতে পারে তাই চুলে পরিষ্কার রাখতে একদিন পরপর শ্যাম্পু করা উচিত। কেননা চুল নিয়মিত পরিষ্কারনা করলে চুলে খুশকির পরিমাণ বেড়ে লোমকূপবন্ধ হয়ে যাতে পারে। যা নতুন করে চুল গজাতে বাঁধা সৃষ্টি করে। 

ভিজা চুল আঁচরানো

ভিজাচুল আঁচ রিয়ে থাকেন তবে ভিজা অবস্থায় চুলেরগোড়া অনেক দুর্বল থাকে তাই সহজেই চুল ভেঙে যায়। আবার ভিজাচুল মোছার ক্ষেত্রে জোরে টাওয়াল দিয়ে ঘষে চুল মুছলেওচুল ঝরে পড়তে পারে। তাই ভিজা চুল মোছার জন্য নরম টাওয়াল দিয়ে হালকা করে চেপে চুল মুছতে হবে।

পাতলা চুল নিয়ন্ত্রণে উপায়

পাতলা চুলঘন ও স্টাইল করার উপায় সমূহ-

সঠিক প্রসাধনী নির্বাচন

পাতলা চুল ঘন করার জন্য সঠিক প্রসাধনী ব্যবহার করতে হবে।তাই চুলে ঘনভাব ফুটিয়ে তুলতে ‘ভলিউম’ বা ঘনত্ব বৃদ্ধির শ্যাম্পু এবং চুলের গোঁড়ায় ‘ঘনত্ব-বৃদ্ধিকারক রুট-লিফট স্প্রে’ ব্যবহার করতে পারেন। চুলের কন্ডিশনার ও ভারী স্প্রে’র ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। না হলে চুল আরও বেশি চিটচিটে ও চ্যাপ্টা মনে হবে। 

সঠিক সম্পূরক খাবার

চুলপাতলা হয়ে যাওয়ার প্রাথমিক কারণহল খাবারে জিঙ্ক ও লৌহের ঘাটতি। যদি দৈনন্দিন খাবার তালিকায় এসব উপাদান সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করানা যায় সেক্ষেত্রে সম্পূরক খাবার বা ভিটামিন ট্যাবলেট হিসেবে এইগুলো খাওয়া যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। 

খুশকি ও চুল পড়ার সমাধান

আজকাল খুসকি ও চুল পরার জন্য সবাই বেশ চিন্তিত। খাদ্যভাস, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, পরিবেশ দুষণ চুল পড়ার অন্যতম কারণ। এ জন্য চেষ্টা করুন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করতে। মনে রাখবেন, একদিনেই ফল পাবেন না। তাই ধৈর্য ধরুন। নিয়মিত চুলের যত্ন নিন। মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখুন।

চুল পড়া বন্ধ করতে পেঁয়াজের রস

  • চুলেরযত্নে পেঁয়াজ এররস অনেক উপকারি।
  • পেঁয়াজের রসচুল পড়াবন্ধ করতে অনেক সহায়তা করে। 
  • পেঁয়াজের রসএর সাথে আলভেরা মিশিয়ে মাথায়দিলে চুল অনেক ভালো হয়।
  • পেঁয়াজের রস ও লেবু মাথায় দিলে নতুন চুলগজাতে সাহায্য করে। 
  • মাথায়রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে পেঁয়াজেররস সাহায্য করে। 

চুল পাকা কমাবে তুলসী পাতা

আমরা জানি তুলসীচুলের জন্য অনেক উপকারি ও পাকা চুল কমাতে সাহায্য করে।এতে ভিটামিনসি রয়েছে। যা চুল পড়া কমায়। তুলসীতে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান মাথারত্বক কে ভাল রাখতে সহায়তা করে। এতে চুল বৃদ্ধি পায়। অকালে চুলপাকা কমাতে তুলসী হেয়ার প্যাক ব্যবহার করুন। ২ টেবিল চামচ তুলসী পাতা ব্লেন্ড করে নিন। 

অ্যালোভেরা চুলের পুষ্টি জোগায়

আমরা যারা মাথারচুল পড়ায় নিয়ে ভুগছেন তাদের জন্য অ্যালোভেরা এটি দুর্দান্ত কাজ করে থাকে। অ্যালোভেরা জেল মাথারত্বকের জন্য খুবই উপকারি। স্বাস্থ্য কর চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। অ্যালোভেরা খুশকি কমায়। মাথারত্বকে চুলকানি দূর করে। এটি চুলকে হাইড্রেটেড রাখে। চুলকে শক্তিশালী রাখার জন্য নিয়মিত অ্যালোভেরার হেয়ার প্যাক ব্যবহার করুন। অ্যালোভেরার হেয়ার প্যাক বানাতে, ১ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল, ১ টেবিল চামচ নারকেল তেল এবং ১ চা চামচ মধু একসাথে মিশিয়ে নিন। 

আমাদের চুলকে কন্ডিশন করতে সহায়তা করে থাাককে। তাই মাথারত্বকে যেকোনো জ্বালা দূর করে থাকে।আবার অ্যালোভেরা ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ বিদ্যমান থাকে যা মাথারত্বক এবং চুলের ফলিকল গুলিতে পুষ্টি জোগায়।এ ছাড়া মাথায়রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে। চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখে। চুলকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে। চুল পড়ার জন্য একটি প্রাকৃতিক সমাধান খুঁজে থাকলে, অ্যালোভেরা হেয়ার প্যাকটি একটি দুর্দান্ত কাজ করবে।

চুলের যত্নে প্রাকৃতিক উপাদান

আমাদের ত্বকের যেমন ময়েশ্চারা ইজেশন জরুরি,তাই তেমনই জরুরিচুলের জন্য। শুষ্ক ও ভঙ্গুর চুলের যত্নে ময়েশ্চারা ইজেশন দরকার। এ জন্য শুধু যে তেল দিতে হবে, এমন নয়। তেল ছাড়াও আপনি বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে চুলকে ঘন-কালো ও মসৃণ করতে পারেন। ভারতের জীবন ধারা বিষয়ক ওয়েবসাইট ফেমিনা এক প্রতিবেদনে তেল ছাড়াই চুলের যত্নে পাঁচ প্রাকৃতিক উপাদানের গুণাগুণ বর্ণনা করেছে। 

আসুন, একঝলকে দেখে নেওয়া যাক রুক্ষ চুলের ঘরোয়া যত্ন-

পানি

পানি চুলের জন্য অনেক উপকারি। আপনার চুলের গঠনের এক-চতুর্থাংশই পানি। পর্যাপ্তপানি না খেলে স্বাভাবিক ভাবেই তাই চুল রুক্ষ হতে শুরু করে। চুলের ডগা ফাটা আটকাতে চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখা খুব দরকার। চুল আর্দ্র ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল রাখতে তাই দিনে কমপক্ষে আট গ্লাস পানিপান করুন। 

নারকেল তেল

আমরা জানি চুলের রুক্ষতা দূর করার জন্য নারকেল তেলের বিকল নেই। নারকেল তেলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে ব্যবহার করুন চুল ও মাথার ত্বকে। সপ্তাহে কয়েকদিন ব্যবহার করতে পারেন এ তেলের মিশ্রণ। রাতে তেল লাগিয়ে সকালে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। 

অ্যালোভেরা

অ্যালোভেরা আর্দ্র তায় ভর পুর প্রাকৃতিক উপাদান চুলেরস্বাস্থ্য আর জৌলুস বাড়িয়ে তুলতে খুব ভালো কাজ করে। অ্যালোভেরা জেলেরসাথে কয়েক ফোঁটা মধু মিশিয়ে মাথারত্বকে ম্যাসাজ করুন। আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করেশ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।ভালো উপকারপাবেন। 

দই

আমরা জানি প্রোটিন ও ক্যালসিয়ামের দুর্দান্ত উৎস দই। এতে আরো রয়েছে ভিটামিন এ, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম, যা চুলের যত্নে মোক্ষম। রুক্ষ চুলকে কোমল করে দই এবং চুলের ময়েশ্চারাইজেশনে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। দইয়ে আরো রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান, যা খুশকি দূর করতে সহায়ক। 

অ্যাভোকাডো

পলিয়ান স্যাচুরেটেড ও মনোনস্যা চুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডে পূর্ণ করে থাকে অ্যাভোকাডো। তাই এটি শুধু রুক্ষ, শুষ্ক ও অনার্দ্র চুলের জন্যই মোক্ষম নয়, সব ধরনের চুলের জন্য কার্যকর উপাদান। এটি মাথার ত্বকের যত্নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অ্যাভোকাডো ব্যবহারে চুল হয় স্বাস্থ্যকর ও উজ্জ্বল। 

কলা

কলাতে  রয়ছে প্রাকৃতিক তেল ছাড়াও রয়েছে কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন ও পটাশিয়াম যা আমাদের মাথার চুলের জন্য অতি প্রয়জনিয়। এই পরম পুষ্টি উপাদান চুলকে কোমল করতে সহায়তা করে এবং ভঙ্গুর হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। শুধু তা-ই নয়, খুশকি নিয়ন্ত্রণ, মাথার ত্বকের যত্ন এবং রোদে রুক্ষ চুলের যত্নে দারুণ কার্যকর কলা। 

মধু

আমরা জানি যে  মধুর যেমন স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে, তেমনই চুলের যত্নে এটি মোক্ষম উপাদান রয়েছে । এটি চুলকে ময়েশ্চারাইজ করে। এতে থাকা প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক উপাদান চুল ও মাথার ত্বকের যত্ন নেয়। ফলে খুশকি দূর হয়। 

ডিম

ডিম শুধু চুলকে ময়েশ্চা রাইজই করে না । মাথারত্বকের যত্ন নিয়ে দূর করেভঙ্গুরতা। ডিম প্রোটিন ও বায়োটিনসমৃদ্ধ, যা মাথার ত্বক ও চুলেরযত্নে মোক্ষম উপাদান। এটি চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এ ছাড়া চুলকে শক্তি শালী করতে ডিম কার্যকর উপাদান।

পুরুষের চুল পড়া বন্ধের উপায়

আমরা জানি কম বয়সে অনেক পুরুষই চুলপড়ার সমস্যায় ভোগেন। মাথায় চুল পড়ে টাক হয়ে যায়। আর মাথার চুল কমে গেলে আত্মবিশ্বাসও কমে যেতে থাকে। তাহলে উপায় চুল পড়ার সমস্যা নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই। জীবনযাত্রার পরিবর্তন ও ঘরোয়া উপায়েও অনেক ক্ষেত্রে চুল পড়া বন্ধ করা যায়। তবে অনেকেরই জিনগত কারণে চুল পড়ে, সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। 

ঘরোয়া চুলপড়া বন্ধ করা যায় । চুল পড়ার পরিমাণ বেড়ে গেলে ঘরোয়া উপায়েই হারানো চুল ফিরে পেতে পারেন। তাও আবার মাত্র ২ সপ্তাহেই চলুনতবে জেনে নেওয়া যাক চুল পড়া বন্ধের কার্যকরী  উপায়- 

চুল পড়ার সমস্যা সমাধানে ভিটামিন ই চুলের গোড়ায় ব্যবহার করুন। ভিটামিন ই মাথারত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয়। ফলে চুলের ফলিকল উত্পাদনশীল থাকে। এছাড়াও ভিটামিন ই চুলের স্বাস্থ্যকর রং বজায় রাখে।অনেক সময় খাদ্যাভাসে পরিবর্তন হলে বা শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি হলে চুল পড়ে। তাই খাদ্যতালিকায় চর্বিযুক্ত, মাংস, মাছ, সয়াসহ প্রোটিন রাখুন। এগুলো চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে ও চুল পড়া বন্ধ করে। 

আমাদের নিয়মিত চুল পরিষ্কার রাখা জরুরি। কেননা এতে চুলের গোড়ায় জমে থাকা ময়লা সহজেই দূর হয়। ফলে চুল পড়া বন্ধ হয়। মনে রাখবেন, চুল অপরিষ্কার থাকলে খুশকি ও মাথার ত্বকে সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়ে যায়। কখনও ভেজা চুল আঁচড়াবেন না। অনেক পুরুষই হয়তো এ বিষয়টি মানেনা। ভেজা অবস্থায় চুলের গোড়া নরম থাকে। ফলে চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ানোর সময় চুলপড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। 

ঘরোয়াউপায়ে চুলপড়াবন্ধ করতে ব্যবহার করতেপারেন রসুন, পেঁয়াজ বা আদাররস। এই উপাদানগুলোর রসরাতে মাথার ত্বকে ব্যবহার করুন। সারা রাত রেখে সকালে চুল পরিষ্কার করে ফেলুন। এক সপ্তাহ নিয়মিত এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে ফলা ফল পাবেন হাতেনাতে। 

যদি মানব শরীরে পানি শূন্যতার সৃষ্টি হয় তাহলে চুল পড়ার পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই চুলপড়ার সমস্যা বেড়ে গেলে বুঝবেন আপনার শরীরে হয়তো পানিশূন্যতা হয়েছে। তাই দৈনিক অন্তত ২-৩ লিটার পানি অবশ্যই পান করুন। 

অনেক গবেষণায় দেখা গেছে গ্রিনটি ব্যবহারে চুল পড়ারসমস্যা কমে। গ্রিনটি ব্যবহারে নিয়ম এককাপ পানিতে দু’টি গ্রিনটি ব্যাগ মিশিয়ে নিন। তারপর তাঠান্ডা করে চুলের আগা থেকেগোড়া পর্যন্ত ব্যবহার করুন। ঘণ্টাখানেক পর ধুয়ে ফেলুন। ৭-১০ দিন একটানা ব্যবহারে চুল পড়ার সমস্যা সমাধান হবে। 

সাঁতার কাটা অথবা সাইকেল চালাতে পারেন। এতে হরমোনের ভার সাম্য বজায় থাকবে ও স্ট্রেসের কমবে। ফলে চুল পড়া দূর হবে। টানা দুই সপ্তাহ এই নিয়ম গুলো মানলেই চুল পড়ার সমস্যার সমাধান হবে। তারপরও যদি না কমে, তাহলে ডাক্তারেরে  পরামর্শ নিন।

শীতকালীন চুলের কিছু কার্যকরী উপায়

চুলের যত্ন শুধুমাত্র মহিলাদের প্রয়োজন নয় বরং পুরুষদের জন্যও প্রয়োজনীয়। পুরুষরা প্রায়শই চুলের যত্নকে উপেক্ষা করেন কারণ তাদের ধারণা যে ছোট চুলের রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয় না। শুষ্ক চুল, খুশকি, চুল পড়া, স্প্লিট এন্ড এবং স্কাল্পের শুষ্কতা রোধ করতে এবং চুলের রেশমি প্রকৃতি ধরে রাখতে শীতের মরশুমে চুলের অনেক যত্নের প্রয়োজন। 

চুলে তেল দিন 

শীতকালে, আপনার ত্বকের মতো আপনার মাথার ত্বকও শুষ্ক হয়ে যায়। স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য চুলকে পুষ্টিকর এবং ময়শ্চারাইজড রাখা জরুরি । অয়েলিং সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতিগুলির মধ্যে একটি। আপনার মাথার ত্বকে নারকেল, জলপাই বা বাদাম তেল ম্যাসাজ করুন, এক দুই ঘন্টা রেখে তারপরে ধুয়ে ফেলুন। 

চুলের কন্ডিশনিং করা আবশ্যক

চুলের কন্ডিশনিং চুলকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে । এটি আপনার চুলের স্থিতিস্থাপকতা এবং আর্দ্রতা বজায় রাখে। তাই চুলে শ্যাম্পু করার পর সব সময় কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। 

প্রয়োজনীয় পুষ্টির পরিমাণ বাড়ান

শীতের মাস গুলিতে হেলথি ডায়েট মেনে চলুন। আপনার ডায়েট আপনার চুলের স্বাস্থ্যের উপর উল্লেখ যোগ্য প্রভাব ফেলে। প্রচুর জল পান করুন এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খান। জাঙ্ক ফুড, ভাজা খাবার এবং বেশি চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। এটি শুধু মাত্র আপনার চুলের স্বাস্থ্যের জন্যই নয়, আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্যও প্রয়োজনীয়। 

হেয়ার জেল গুলিকে দূরে রাখুন

চুলের স্টাইল বাড়াতে আপনি প্রতিদিন যে হেয়ার জেল ব্যবহার করেন তা চুলের ক্ষতি করতে পারে। হেয়ার জেল আপনার চুলকে ডিহাইড্রেট করে এবং চুলের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করে। শীতের ঠান্ডা বাতাস চুলের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। তাই, প্রতিদিন হেয়ার জেল ব্যবহার করবেন না।

মেয়েদের চুলের যত্নে করণীয়

মেয়েদের সৌন্দর্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে সুন্দর চুল। মাথা ভর্তি খুশকি, ফাটা, রুক্ষ ও চিট চিটে হয়ে যাওয়া চুলের সাধারণ সমস্যা। ঋতু পরিবর্তনের জন্য অনেক সময় ত্বকের সহনশীলতা বদলে যাওয়ায় এসব সমস্যা হয়ে থাকে। তাই ঝলমলে চুলের জন্য যত্ন নেওয়া জরুরি। 

খুশকির দূর করার কার্যকরী পদ্ধতি হলো লেবু ও পেঁয়াজের রস এক করে চুলে ম্যাসাজ করা। আসুন জেনে নিই ছেলেদের চুলের যত্নে করণীয় কী? চুলের খুশকি দূর করার জন্য মাথায় গরম তেল ম্যাসাজ করাও বেশ উপকারী। 

প্রতিদিন চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার না করে সপ্তাহে দুই বার শ্যাম্পু ব্যবহার করা ভালো। খুশকির সমস্যা বেশি হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এ সময়ে অনেকেরই চুল রুক্ষ হয়ে যায় এবং চুলে এক ধরনের চিটচিটে ভাব চলে আসে। ফলে অনেক সময় চুলের আগা ফেটে যায়। তাই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে যা করবেন। 

রাতে ঘুমানোর পূর্বে চুলে নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েল গরম করে ম্যাসাজ করে নিতে পারেন। একটি স্টিলের বাটিতে নারিকেল তেল অথবা অলিভ অয়েল নিয়ে একটা কাঁচা আমলকি কেটে মিশিয়ে নিতে হবে। এটাকে চুলার ওপর একটা কাপড় দিয়ে ধরে কিছুক্ষণ গরম করে নিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন।

কুসুম গরম থাকতে চুলের আগায়-গোড়ায় ভালোভাবে আঙুল দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে তেল ম্যাসাজ করতে হবে। মনে রাখবেন,গরম তেল চুলে লাগাবেন না। এর জন্য চুল পড়ে যেতে পারে। সারা রাত চুলে তেলের উপস্থিতিতে চুলের রুক্ষ ভাব কেটে যাবে এবং চুল ঝলমলে উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।

পুরুষদের চুলের যত্নের পরামর্শ

আপনি সর্বদা প্রচারের জন্য বিজ্ঞাপনগুলি সন্ধান করতে পারেন স্বাস্থ্যকর চুল পণ্য। অবশ্যই স্বাস্থ্যকর চুলের চেয়ে সুন্দর এবং আকর্ষণীয় আর কিছুই নেই। চুল মূলত প্রোটিন এবং কেরেটিন যার কোনও রক্ত সরবরাহ বা স্নায়ুতন্ত্র নেই এবং কোনও পুনঃস্থাপনযোগ্য গুণ নেই। চুল বেঁচে নেই, তাই এটি স্বাস্থ্যকর হতে পারে না, এ কারণেই বহু সংখ্যক ব্যক্তি এই শব্দটি ব্যবহার করতে পছন্দ করেন সুসজ্জিত চুল।

একবার ক্ষতি হয়ে গেলে, এর একমাত্র উপায় চুল মেরামত ভাঙ্গনের দৈর্ঘ্য কাটা হয়। অবশ্যই, আপনার যদি খুব ক্ষতিগ্রস্থ চুল হয় তবে আপনি একটির সন্ধান করবেন হিয়্যারকাটিং আপনাকে তাদের থেকে বাঁচাতে এবং তারা যে কুৎসিত চেহারা দেয় তা সরিয়ে নিতে। এছাড়াও, আপনার চুলের শক্তি, স্থিতিস্থাপকতা এবং চকচকে সংরক্ষণ করার জন্য রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন। 

গরমে পুরুষের চুলের যত্নে পরামর্শ

আমরা জানি বেশি ভাগ পুরুষদের নিয়মিত ঘরের বাইরে যেতে হয়। ফলে বাইরের ধুলা বালি ও অতিরিক্ত সূর্যের আলোর জন্য তাদের চুল হয়ে পড়ে মলিনতা ও চুল হারায় সৌন্দর্য। গরমে পুরুষের চুলের যত্নে কিছু পরামর্শ জানিয়েছে ওয়েবসাইট ম্যানসএক্সপি। আসুন জানি সেগুলো। 

শুকানো চুলের

তোয়ালে শুকানো এর অন্যতম বড় কারণ চুল ক্ষতি পুরুষদের মধ্যে। চুল ভিজে গেলে এটি ক্ষতির পক্ষে অত্যন্ত সংবেদনশীল। তোয়ালে দিয়ে ঘষলে, কিছু চুল তোয়ালে থ্রেডগুলিতে জড়িয়ে যায় এবং ব্রেকিং পয়েন্টে প্রসারিত হয়, যা ছত্রাকের ক্ষতি করে। আপনি এই ছেড়ে যেতে পারেন চকচকে চুল।

শুকনো তোয়ালে ব্যবহার এড়াতে তোয়ালে দিয়ে চুল ঘষার পরিবর্তে ধুয়ে ফেলার পরে আপনার অতিরিক্ত জল ঝরিয়ে নিন। শুকনো এইভাবে কিছুটা বেশি সময় নেয় তবে কয়েকটি চুল কাটার পরে, আপনি আপনার চুলের চেহারাটির পার্থক্যটি লক্ষ্য করবেন। 

বাকি চুল শুকানোর উপায় এগুলি চুল ক্ষতি হওয়ার ঘন ঘন কারণ। ঘা শুকানোর সময় অতিরিক্ত তাপ স্ট্রোক চুল এবং মাথার ত্বক শুকিয়ে যেতে পারে। তবে চুলটি ক্ষতি কমাতে এবং এটি সম্ভাব্য ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে, একটি ডিটাঙ্গলিং বা তাপ স্টাইলিং স্প্রে প্রয়োগ করুন। টানা এড়াতে প্রশস্ত দাঁতযুক্ত চিরনি ব্যবহার করুন । এটি আপনার চুলগুলি আরও বেশিক্ষণ শুকানো থেকে রোধ করবে।

পুষ্টির দিকে খেয়াল রাখুন

মানব দেহে ভিটামিন ও মিনারেলের ঘাটতি হলে এটি সবার আগে চুলে প্রভাব ফেলে। চুল ভালো রাখতে বেশি বেশি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান।প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কাট বাদাম, কাজু বাদাম,বাদাম, মাছ ও বিভিন্ন ধরনের ফল রাখুন। 

ক্যাপ পরুন

চুল ভালো রাখতে সূর্যের আলো থেকে সুরক্ষা প্রয়োজন। সূর্যের অতি বেগুনি রস্মি থেকে বাঁচতে তাই বাইরে গেলে ক্যাপ ব্যবহার করুন। অতিরিক্ত পণ্য ব্যবহারচুল সুন্দর বা নরম করতে গিয়ে অতিরিক্ত চুলের সৌন্দর্য বর্ধনকারী পণ্য ব্যবহার করবেন না। এতে উপকারের বদলে অপকার বেশি হয়। আর ব্যবহার যদি করতেই হয় সামান্য পরিমাণে করুন।

চুলের যত্ন ও সমস্যা সমাধানের প্রাকৃতিক উপায়-শেষ কথা

উপরে উক্ত আর্টিকেলে আজ আপনাদের সাথে আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিলচুলের যত্ন ও সমস্যা সমাধানের প্রাকৃতিক উপায় সে সম্বন্ধে। সাথে আরো আলোচনা করেছি শীতকালে ওগরমে কি ভাবে চুলের যত্ন নেওয়া যায় সে  সম্বন্ধে বিভিন্ন তথ্য। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি অনেক উপকৃত হয়েছেন এবং আপনার অনেক ভালো লেগেছে।এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url