প্রাকৃতিক ভাবে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায়

প্রতিদিনের জীবন যাত্রায় এতো ধূলোবালিতে চলাফেরা করতে হয় যে সকালে সুন্দর ত্বক বের হওয়ার পর দিন শেষে দেখা যায় কালো চেহারা। এমন অবস্থাতে বাজার থেকে আমরা নানারকম ক্রিম কিনে ব্যবহার করি। কিন্তু বাজারের বেশিরভাগ ক্রিমেই থাকে চড়া রাসায়নিক পদার্থ। ফলে ত্বকে দেখা দিতে পারে কিছু ক্ষতিকারক পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া। তাই নিচে প্রাকৃতিক ভাবে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্বির উপায় দেওয়া হল ।

প্রাকৃতিক ভাবে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্বির উপায়

গায়ের রঙটা একটু কেমন যেনো কালো দেখাচ্ছে আরেকটু যদি ফর্সা হতো তাহলে সুন্দর দেখাতো।সুন্দর দেখানোর জন্য আপনি চাইলেই ঘরোয়াভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি করে নিতে পারেন ত্বক ফর্সা করার ক্রিম। ঘরে তৈরি করা ক্রিমগুলো ত্বকের জন্য বেশ কার্যকরী এবং কোনো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নেই। রান্নাঘরের কিছু উপাদান দিয়ে তৈরি এ মিশ্রণ ত্বকের অনেক সমস্যারও প্রতিকার করবে। দূর করবে মুখের ব্রণ বা ফুসকুড়ি।

প্রাকৃতিক ভাবে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্বির উপায়

দুধের সর

দুধের সর ত্বকের জন্য অনেক উপকারি। নিয়মিত রাতের ঘুমানোর পূর্বে ফর্সা হওয়ার ক্রিম হলো দুধের সর (মিল্ক ক্রিম)। সারারাতের জন্য দুধের সর মুখে লাগিয়ে ঘুমান, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবেই।

অ্যালোভেরা

আমাদের দেশে অ্যালোভেরা অন্যতম সেরা ও নিরাপদ ত্বক চর্চার ক্রিম। ত্বক বর্ণোজ্জ্বল বানাতে সাহায্য করে।অ্যালোভেরা ও ল্যাভেন্ডার তেল মিশিয়ে প্যাক বানান। মিশ্রণটি মুখে লাগান সারারাতের জন্য।

আরো পড়ুনঃ ত্বকের যত্নে অলিভ ওয়েল কিভাবে ব্যবহার করবেন

অলিভ অয়েল

আমরা অনেকে ভেবে থাকি যে তৈলাক্ত ত্বকে তেল দেওয়া যায় তাহলে ত্বকের আরো বেশি ক্ষতি হবে কিংবা ব্রণ উঠবে। কিন্তু আপনারা জানেন কি অলিভ অয়েলে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ত্বককে সজীব এবং পরিষ্কার করে। সূর্যরশ্মির ক্ষতির থেকেও ত্বককে রক্ষা করে এ তেল। অলিভ অয়েল সেনসিটিভ স্কিনের জন্যও নিরাপদ। তাই আমরা যদি নারকেল তেল এবং ফিস অয়েলের মাধ্যমে এক সপ্তাহ ব্যবহার করলে ফল পাবেন।

গ্রিন টি

গ্রিন টি ত্বকের রং ও বর্ণ উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে অবিশ্বাস্য ভাবে কাজ করে। এক কাপ গ্রিন টি এর সাথে নারকেল তেল, লেবু আর আলমণ্ড তেল দিন তার পর ভাল করে মিশিয়ে নিন । উজ্জ্বল ত্বকের জন্য সপ্তাহে একবার লাগান।

গোলাপ জল

ব্রণ এ আক্রান্ত ও ফেটে যাওয়া মুখের জন্য গোলাপ জল অত্যন্ত কার্যকরী। গোলাপ জলে আছে আর্দ্রতা রক্ষাকারী উপাদান। বিষণ্ণতা দূর করে ত্বকের  শিথিলতা এনে দিতে এর কোনো বিকল্প নেই। তবে গোলাপ জল রাতে ব্যবহার করাই ভালো।

কারণ দিনের বেলা যে জীবাণুগুলো মুখের মধ্যে বাসা বাঁধে এগুলোকে ধ্বংস করতে এর কোনো বিকল্প নেই। এমনকি এ জল ব্যবহারে মুখের বিষাক্ত উপাদানও দূর হয়। গোলাপ জলের সঙ্গে নারকেল তেল মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন। গোলাপ জল বর্ণ উজ্জ্বল করে আর নারকেল তেল ত্বককে বানায় কোমল।

আরো পড়ুনঃ বরফ দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায়

গোলাপ ফুল

আমরা বাজার থেকে সাধারণত গোলাপ ফুল কিনে এনে পাপড়িগুলো আলাদা করে একদিন পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর প্রতিদিন মুখে ব্যবহার করুন। সম্ভব হলে যতোবার মুখ ধোবেন, ততোবারই গোলাপ জল ব্যবহার করবেন। মনে রাখবেন এ জলে মুখ ধোয়ার সময় কোনো ধরনের সাবান ব্যবহার করবেন না।

কোকো বাটার

আমরা সবাই জানি যে লোশন বা ময়েশ্চারাইজার নামে ব্যবহার করা হয় কোকো বাটার।কোকো বাটার  খাওয়াও যায় এর জন্য কোকো বাটার দিয়ে তৈরি লিপ বাম ব্যবহারে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে না। কোকো বাটারের সঙ্গে ভার্জিন অয়েল বাড়িতে বানানো সবচেয়ে ভালো রাতের ক্রিম। দু সপ্তাহ প্রয়োগ করে দেখুন, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বেই। 

ত্বকের রং ফর্সা করার কিছু প্রয়োজনীয়তা

পৃথিবীতে মসৃণ ফর্সা ত্বক চান না এমন নারী খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর। প্রিয় ব্যক্তির আকর্ষণ ধরে রাখাসহ পরিচিতদের কাছ থেকে প্রশংসা পেতে প্রচেষ্টার অন্ত থাকে না অনেকেরই। তাই সব চেষ্টাকে অব্যহতি দিয়ে ত্বকের রং ফর্সা করতে অবলম্বন করুন জাদুকরী উপায়।

আরো পড়ুনঃ রূপচর্চায় টক দইয়ের ব্যবহার

বাদাম-হলুদ পেস্ট

আপনারা সকালে ২৫ গ্রাম দুধের সাথে ২থেকে ৩টি বাদাম ও জাফরান মিশিয়ে রাখুন।তারপর রাতে হলুদ সাথে বাদাম দিয়ে প্যাক তৈরি করে এবং রাতে ঘুমানোর আগে এই পেস্ট মুখে ও গলায় লাগিয়ে ঘুমাতে পারেন। সকালে উঠে পর্যাপ্ত ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। পর পর ২ সপ্তাহ করে দেখুন আপনিও হয়ে গেছেন দুধে আলতা বরণী মেয়ে।

বেসনের পেস্ট

বেসন, লেবুর রস ও কাঠবাদাম একসঙ্গে পেস্ট করে ১২ থেকে ১৫ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখুন।এরপর পানি দিয়ে আপনার মুখ ধুয়ে ফেলুন। বেসন ও লেবুর রস মুখের ব্রণ ও কালোদাগ দুর করতে সহায়তা করে। বাদাম ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রেখে রং করে ফর্সা দীপ্তিমান

মসুর ডালের পেস্ট

মসুরের ডাল ত্বকের জন্য অনেক ভাল।আর তার সাথে কাঁচা দুধ সামান্য, লেবুর রস এবং চালের গুড়া একসঙ্গে পেস্ট করে তৈরি করুন স্ক্রাব। সপ্তাহে তিন দিন ব্যাবহার করুন। আপনার ত্বক হবে আরো পরিষ্কার এবং উজ্জ্বল।

আরো পড়ুনঃ রূপচর্চায় তুলসী পাতার ব্যবহার

দই-মধুর পেস্ট

ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃন করতেও মধু খুব কার্যকর।আর টকদই, মধু ও লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ধরে মুখে লাগন।তারপর শুকিয়ে গেলে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।এ ভাবে  নিয়মিত করলে কিছুদিন পরেই দেখতে পাবেন আপনার ত্বক আগের থেকে অনেক বেশী উজ্জ্বল হয়ে গেছে।

প্রাকৃতিক ভাবে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্বির উপায়-শেষ কথা

উপরে উক্ত পোস্টটির আজ আপনাদের সাথে আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিল প্রাকৃতিক উপায়ে সুন্দর ও ফর্সা ত্বক সে সম্বন্ধে। সাথে আরো আলোচনা করেছি ত্বকের রং ফর্সা করার কিছু প্রয়োজনীয় বিভিন্ন তথ্য সম্বন্ধে। আশা করি আজকের পোস্টটির পড়ে আপনি অনেক উপকৃত হয়েছেন এবং আপনার ভালো লেগেছে।

আজকের পোস্টটির পড়ে আপনার কোন কোন বিষয় গুলি ভালো লেগেছে এবং আপনি কত টুকু উপকৃত হয়েছেন তা আপনার নিকটস্থ বন্ধুদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করবেন। এমনই গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষনীয় পোস্টটি কেল প্রতি দিন পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করবেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url