বাংলাদেশ থেকে কি ভাবে কাশ্মীরে ভ্রমন করা যায় বিস্তারিত জানুন
প্রিয় পাঠক আপনি কি বাংলাদেশ থেকে কি ভাবে কাশ্মীরে ভ্রমন করা যায় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে নিচের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।কেননা এ আর্টিকেলের মধ্যে আলোচনা করেছি বাংলাদেশ থেকে কি ভাবে কাশ্মীরে ভ্রমন করা যায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
কাশ্মীর ভ্রমনের কারন,কাশ্মীরের হোটেল ভাড়া ও কাশ্মীর কোন সময় ভ্রমন করা ভাল। কাশ্মীর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।কাশ্মীরে ভ্রমন করার আগে আর্টিকেলটি পড়লে আশা করি অনেক উপকৃত হবেন ও কাশ্মীর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের সাথে থাকবেন।
কাশ্মীরের সৌন্দর্য
কাশ্মীর ভারতের সবচেয়ে মনোরম ও সৌন্দর্যময় স্থান।পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরময় স্থান গুলোর মধ্যে অন্যতম স্থান হলো কাশ্মীর।এর প্রকৃতিক সৌন্দর্য অপূর্ব।ছুটির দিন পালন বা অবসর সময় কাটানোর জন্য সবচেয়ে উতম জায়গা হলো কাশ্মীর।
কাশ্মীর তার মনোরম আবহাওয়া,সবুজ বাগান,তুষারে ঢাকা পর্বত,অপূর্ব সুন্দর উপত্যকা,চমৎকার তৃনভূমি,আশ্চর্যকর জলাশয়,ঐতিহ্যবাহী হাউসবোট,দুর্দান্ত স্থাপত্য, ঐতিহ্যবাহী সব খাবার ও নিছক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য সবার কাছে পরিচিত। বিশ্ব-প্রকৃতির মধ্য দিয়ে কাশ্মীরের সৌন্দর্য অপূর্ব। কাশ্মীরের অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পিপাসুদেরকে ভ্রমণ মুগ্ধ করে।
কাশ্মীর ভ্রমনের কারন
কাশ্মীর ভ্রমণের সেরা সময়
কাশ্মীরের প্রকৃতির অপূর্ব রূপ লাবণ্য উপভোগের জন্য সারা বছরই ভ্রমণ পিপাসুদের ভীড় লেগেই থাকে। কেননা কাশ্মীরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অপূর্ব । যারা বরফ পছন্দ করেন বা বরফের জগতে ডুবে থাকতে চান তারা বেছে নিতে পারেন ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস। এ সময় পুরা কাশ্মীর বরফে আচ্ছন্ন থাকে। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে বরফে আচ্ছন্ন কাশ্মীরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অনেক বেড়ে যায়।যদি ভাগ্য ভালো হয় তাহলে স্নোফলে ভেজার অভিজ্ঞতাও মিলে যেতে পারে।
আবার যদি ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে সবুজ বাগান বা সবুজ পাহাড় পছন্দ হয় তাহলে ভ্রমণের উপযুক্ত সময় হচ্ছে এপ্রিল থেকে মে মাস। এ সময় ফুলে ও সবুজ গাছপালাই কাশ্মীরের সৌন্দর্য অপূর্ব মায়াবী সুন্দর। এপ্রিল থেকে মে মাসে কাশ্মীর যে দিকে তাকানো যাই শুধু সবুজ গাছপালা আর ফুলে ফুলে ভরে থাকে।
তবে জুলাই থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত প্যাহেলগামে হিন্দু দেবতা শিবের গুহা মন্দিরে অমরনাথ যাত্রা অনুষ্ঠিত হয় টানা ৬২ দিন জন্য।এর জন্য সারা শহর জুড়ে থাকে বাড়তি যানজট আর প্রচুর মানুষের ভীড়। তাই যদি কাশ্মীরে ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছা থাকলে,সেই ক্ষেত্রে এই সময়টা এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
ভারতীয় ভিসা
কাশ্মীর ঘুরতে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশি দের সর্ব প্রথম ভারতের ট্যুরিস্ট ভিসা প্রয়োজন। এর জন্য ভিসা আবেদনকারীর পাসপোর্ট টির প্রস্থানের দিন থেকে শুরু করে ন্যূনতম ছয় মাসের মেয়াদ থাকতে হবে। সেই সাথে পাসপোর্ট বইয়ে কমপক্ষে দুটি পৃষ্ঠা খালি বা ফাকা থাকতে হবে। পাসপোর্টের পাশাপাশি জাতীয় পরিচয়পত্র সাথে রাখা হবে।
ভিসা আবেদনের জন্য আপনাকে অবশ্যই আপনার নাম, বাসস্থান, চাকরির স্থান, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং স্টেটমেন্টের তথ্য, আইডি কার্ড, পাসপোর্ট, জাতীয়তা এবং পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ, সেই সাথে আপনার যোগাযোগের তথ্য এবং জন্ম তারিখ ঠিক মতো তথ্য প্রদান করতে হবে ও একটি পাসপোর্ট আকারের ছবি জেপিজি বা পিএনজি ফাইলের মাধ্যমে আপলোড করতে হবে।
কাশ্মীরে গিয়ে কোথায় থাকা হবে তার যথেষ্ট প্রমাণ পত্র দেখাতে হবে। হোটেলে থাকার জন্য বুকিংয়ের কাগজ পত্র প্রিন্ট করে রাখতে হবে। ভারতে প্রবেশ এবং ত্যাগ করার সময় আগে থেকে ঠিক করতে হবে। এক্ষেত্রে ট্রেন বা বিমান যেভাবেই যাওয়া হোক না কেন আসা ও যাওয়ার টিকেট দেখাতে হবে। সর্বোপরি, কাশ্মীরে যাবতীয় খরচ চালানোর ও ভ্রমণ করার জন্য টাকা আছে কি না তার একটা যথেষ্ট প্রমাণ দেখাতে হবে।
ঢাকা থেকে কাশ্মীর যাতায়াত
কাশ্মীরের সাথে সংযোগ আছে ভারতের দিল্লী আর চান্ডিগাড়ের। ঢাকা থেকে সরাসরি আকাশ পথে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য গুলোতে যাওয়া যাই তার মধ্যে অন্যতম স্থান কাশ্মীরের শ্রীনগর। ঢাকা থেকে সরাসরি কাশ্মীরের শ্রীনগর এর বিমান ভাড়া ৩৭ হাজার থেকে ৪৮ হাজাড় টাকা। ঢাকা থেকে দিল্লীর বিমান ভাড়া ৮ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা এবং ঢাকা থেকে চাণ্ডিগাড়ের বিমান ভাড়া ১২ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা।
কাশ্মীরের জনপ্রিয় জায়গা গুলো মধ্যে অন্যতম স্থান শ্রীনগর।শ্রীনগর ঘুরতে হলে দিল্লী থেকে যাওয়া যাই। দিল্লী হতে শ্রীনগর বিমান এ যেতে সময় লাগে সর্বোচ্চ ৯ ঘণ্টা। প্রায় বিমান ভাড়া ২৫ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৫৫ হাজার টাকা।
ঢাকা থেকে কাশ্মীর স্থলপথে যেতে হলে রেলপথে বা বাসে কলকাতার মধ্যদিয়ে ভারতে প্রবেশ করতে হয়। কলকাতার রেলপথে যাওয়ার জন্য মৈতী ট্রেন রয়েছে। ঢাকা থেকে সরাসরি কলকাতার হাওড়ার ট্রেনটি যায়। ট্রেনটি শ্রেণিভেদে জনপ্রতি ভাড়া এসি চেয়ার ৩ হাজার ৬০০ আর এসি স্লিপার ৪ হাজার ৯০০ টাকা।
তারপর হাওড়া থেকে ট্রেন বদলে করে অন্য ট্রেনে যাওয়া যায় জম্মু টাওী। এখানে ননএসি স্লিপার গুলোর ভাড়া ৭৫৫ থেকে ৭৯০ রুপি,এসি ইকনোমি ভাড়া ১৮৯০ থেকে ১৯৫৫ তৃতীয় এসি ভাড়া ২০০৫ থেকে ২০৬৫ রুপি,দ্বিতীয় এসি ভাড়া ২৯১৫ থেকে ২৯৮০ রুপি এবং প্রথম এসি ভাড়া ৫০৮০রুপি (১ ভারতীয় রুপি = বাংলাদেশের ১ দশমিক ৩২ টাকা)।
ঢাকা হতে কলকাতা পর্যন্ত বাসের ভাড়া পড়বে জন প্রতি ১ হাজার ১০০ থেকে ২ হাজার ৬০ টাকা। তারপর রেলপথে জম্মু যাওয়ার পর শ্রীনগরের বাকিটা পথ গাড়িতে শেয়ার করে যে কোন গাড়িতে কিংবা বাসে করে যেতে হবে। সব মিলিয়ে এভাবে শ্রীনগর পর্যন্ত যেতে সময় লাগতে পারে সর্বোচ্চ ২ দিন ১৯ ঘণ্টার মত।
কাশ্মীরের থাকার জন্য হোটেল ভাড়া
কাশ্মীরের ঐতিহ্যবাহী খাবার
কাশ্মীর তার ঐতিহ্যবাহী খাবারের জন্য অনেকটাই পরিচিত। কাশ্মীরের মশলা ও রন্ধন শিল্পের কারণে এখানকার খাবারের অনেক স্বাদ ও রয়েছে এক স্বতন্ত্র সংস্কৃতির ছাপ। কাশ্মীরে নানা ধরনের তাজা ফল তার মধ্যে অন্যতম অ্যাপেল। অন্যান্য যে কোনো পাহাড়ি ফলের স্বাদকে হার মানাতে সক্ষম কাশ্মীরের ফল। কাশ্মীরের যে কোন ফল অনেক খেতে সুস্বাদু।
আবার কাশ্মীরের বিখ্যাত মাটন বিরিয়ানি সবাই অনেক পছন্দ করে থাকে। ভোজন প্রিয় পর্যটকরা একবার হলেও চেখে দেখার চেষ্টা করেন কাশ্মীরের বিখ্যাত মাটন বিরিয়ানি । এখান কার আরও বিশেষ ধরনের খাবারের বিদ্যমান রয়েছে।তার মধ্যে অন্যতম খাবার হলো কাশ্মীরি কাবাব, মাটন রোগান জোশ, ভেড়ার মাংস, পনির চামান, আলুর দম ওজওয়ান, এবং নাদরু ইয়াখনি। এলাচ, দারুচিনি, জাফরান এবং বাদাম দিয়ে বানানো এক ধরনের চা আছে, যাকে কাহভা বলা হয়। এ ছাড়া এখানকার গুড়, গুড় চা নামের বাটার চাও বেশ জনপ্রিয়।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url