কিডনির রোগ নিরাময়ে প্রাকৃতিক উপায় ও ভেষজ উদ্ভিদের কার্যকারিতা

কিডনি মানবদেহের অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ । কিডনি ছাড়া মানুষ জীবিতো থাকেতে পারে না । কিডনি ভালো রাখতে আমাদের প্রতিদিন প্রচুর পরিমান পানি পান করতে হয় । তাহলে কিডনি ও শরীর ভালো থাকে ।

কিডনির রোগ নিরাময়ে প্রাকৃতিক উপায় ও ভেষজ উদ্ভিদের কার্যকারিতা

কিডনি হল এক প্র্রকার ছাকনী যা আমাদের দেহের তরল সব পদাথ পরিষ্কার করে থাকে । আমাদের প্রস্রাবে পানি, লবন ও খনিজ পদার্থের সঠিক ভারসাম্য বজায় না থাকলে কিডনিতে পাথর ও বিভিন্ন রোগ হতে পারে। নিচে কিডনি রোগ নিরাময়ে প্রাকৃতিক উপায় দেওয়া হল ।

কিডনি রোগ নিরাময়ে উপায় ও ভেষজ উদ্ভিদ

মানবদেহের অতি প্রয়োজনীয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যে কিডনি অন্যতম। এটি কোমরের কিছুটা উপরের দুইপাশে দুটি কিডনি থাকে। পরিণত বয়সে ১টি কিডনি ১১-১৩ সেন্টি মিটার লম্বা, ৫-৬ সেন্টি মিটার চওড়া এবং ৩ সেন্টি মিটার পুরু হয়। একটি কিডনির ওজন প্রায় ১৫০ গ্রাম।

তবে ডান কিডনির চেয়ে বাম কিডনি একটু বড় ও কিছুটা উপরে থাকে। প্রতিটি কিডনি প্রায় ১২ লাখ নেফ্রন দিয়ে তৈরি। নেফ্রন হলো কিডনির কার্যকরী ও গাঠনিক একক। কোনো কারণে এগুলো নষ্ট হলে কিডনি দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। আক্রান্তের ক্ষেত্রে সাধারণত একসঙ্গে দুইটিই হয়ে থাকে।

যেসব খাবারে কিডনি ভালো থাকে

প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস (২ লিটার) বিশুদ্ধ পানি পান করা। তবে ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রমের ক্ষেত্রে বেশি পানি পান করা প্রয়োজন।দানা বা বীজজাতীয় খাদ্য ব্রেড, নুডুলস, বাদাম ইত্যাদি বেশি বেশি খেতে হবে। সপ্তাহে অন্তত একটি কচি ডাবের পানি পান করুন।

প্রতিদিন অন্তত চারটি থানকুনি পাতা খান। শসা, তরমুজ, লাউ, বাঙ্গি, কমলা লেবু, লেবু, মাল্টা, ডালিম, বিট, গাজর, আখরস, বার্লি, পিঁয়াজ, সজিনা ইত্যাদি পরিমাণ মতো খেতে হবে।

ভেষজ উদ্ভিদ

গবেষণায় দেখা যাই যে , যাদের প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায় এবং হাত-পায়ে পানি জমে, তারা নিয়মিত গোক্ষুর চূর্ণ ৩ গ্রাম মাত্রায় সেবন করলে মূত্রের পরিমাণ ঠিক হয়ে যায় এবং শরীরে জমে থাকা পানি বা ইউরিক এসিডের পরিমাণ কমে আসে। রক্তচন্দন কিডনি রোগীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ। এটি প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া বন্ধ করে এবং প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।

পাথরকুচি পাতার নির্যাস কিডনি পাথর ধ্বংস করতে খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে। পুদিনা পাতা কিডনির পাথরের রোগ নিরাময়ের জন্য খুবই কার্যকর। যদি আপনি কিডনি পাথরের সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে এক চামচ পুদিনার রসের সাথে মধু মিশিয়ে পান করুন। এভাবে কমপক্ষে ৬ মাস সকালে খেতে হবে। কিডনির পাথরের চিকিৎসায় শাক হচ্ছে সর্বোৎকৃষ্ট ভেষজ চিকিৎসা।

আরো পড়ুনঃ কিডনিতে পাথর হওয়ার কারন বিস্তারিত জানুন

প্রতিদিন সকালে খালি পেটে শাক খেতে হবে। এভাবে প্রতিদিন শাক খেলে ভবিষ্যতে কিডনিতে পাথর জন্মানো প্রতিরোধ হবে। কিডনির পাথরের চিকিৎসায় খাঁজকাটা পাতাবিশিষ্ট সিংহদন্তি হচ্ছে ধন্বন্তরি ভেষজ ওষুধ। সিংহদন্তির মূলে রয়েছে পটাশিয়াম, যা প্রস্রাব প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। কিডনির পাথরের চিকিৎসায় ডালিম খুবই উপকারী। ডালিমের পাতা দানা জুস একটি স্বাস্থ্যসম্মত জুস।

সপ্তাহে এক দিন সকালে খালি পেটে খেলে উপকার পাওয়া যাবে। কিডনিতে পাথর হওয়া বর্তমানে একটি সাধারণ রোগে পরিণত হয়েছে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, এসিডিটি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ইউরিক এসিডের মতো রাসায়নিকের কারণে কিডনিতে পাথর সৃষ্টি হয়। তবে কিছু ভেষজ অর্থাৎ বনাজী ওষুধ সেবনে কিডনিতে পাথর নির্মূল করা সম্ভব হতে পারে।

কিডনি পাথর নিরাময়ে হোমিওপ্যাথি

প্রস্রাবে দ্রবীভূত ফসফেট, অক্সালেট, ইউরিক এসিড, ক্যালসিয়াম, ইউরেট প্রভৃতি পদার্থ থেকে গিয়ে মূত্রের সঙ্গে কিডনিতে দীর্ঘসময় অবস্থান করে। এভাবে দীর্ঘসময় অবস্থানের পর পাথরের আকার ধারণ করে এবং দিনে দিনে আরো বড় হতে থাকে। এক্স-রে পরীক্ষায় অনেক সময় ধরা না পড়লেও কিডনির ইউএসজি (আল্ট্রাসনোগ্রাফি) করলে পাথরের অবস্থান ধরা পড়ে।

রোগ লক্ষণাদি

কিডনি এলাকায় তীব্র ব্যথা (পিঠের দিকে) অনুভূত হয়। বেশি জোরে হাঁটাচলা বা ঝাঁকিতে ব্যথা বাড়ে। পাথর আপনা হতেই নিচের দিকে অর্থাৎ বের হওয়ার চেষ্টা করে তখন ব্যথা তীব্রতর হয় এবং কুচকি, পেটে ও লিঙ্গে ব্যথা ছড়িয়ে পড়ে। রোগী ঘামতে থাকে এবং বমি করে। ঘনঘন অল্পমাত্রায় তীব্র জ্বালাকর প্রস্রাব হয় এবং মূত্র বন্ধও হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ পিরিয়ডের সময় কি মিলন করা যায়

প্রচণ্ড শীত অনুভব এবং জ্বর আসে। রোগীর মুখে ফ্যাকাশে ভাব ও অস্থিরতায় ভোগে, মূত্রের সাথে কখনো কখনো রক্তও আসতে পারে। কিডনির স্থানে টিপলে পিঠ ও তল পেটের মাংস পেশি শক্ত মনে হয়। ব্যথার তীব্রতা থেমে গেলেও রোগী ক্লান্ত হয়ে পড়ে।

হোমিওপ্যাথিক প্রতিবিধান

কিডনি রোগে হোমি ও প্যাথিক ওষুধ অত্যন্ত কার্যকরী। নিম্নে তা সংক্ষেপে বর্ণনা করা হলো-

প্রদাহ বা পাথুরীজনিত কিডনি শূল। কিডনি প্রদেশের প্রচণ্ড বেদনা ইউরেটার বাহিরে মূত্রস্থলীতে বিস্তৃত হয়। শ্বাস গ্রহণেও বৃদ্ধি। হঠাৎ মূত্রবেগ এবং মূত্র ত্যাগকালে জ্বালা ও মূত্রনালীর মধ্যে স্ফীতিবোধ। মূত্রের বর্ণ ঘোর এবং রক্ত বা কিডনির এপিথেলিয়াম এবং ইউরিক এসিড যুক্ত। রোগীর মুখমণ্ডল শুষ্ক ও ঘোর বর্ণে আর্জেন্টাম নাইট্রিকাম ভালো ফলদায়ক।

তীব্র বেদনা মূত্র স্থলীর মধ্য দিয়ে পাদ দেশ পর্যন্ত প্রবাহিত হলে বার্বেরিস নির্দিষ্ট। কটি দেশে চাপ বোধ। ঝাঁকনি লাগলে কিডনি ও কটি দেশে বেদনা বোধ। মূত্র স্থলীর মধ্যে পাথুরী। মূত্র স্থলী মধ্যে কুন্থন বেগ ও পুনঃ পুনঃ মূত্র বেগও নালী মধ্যে জ্বালা বোধে ক্যাল কেরিয়া কার্ব ভালো কাজ দেয়। ক্যাল কেরিয়া পাথুরী পীড়ার একটা প্রতিষেধক ওষুধ।

আরো পড়ুনঃ মিষ্টি আলু যেভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

ক্যান্থা রিস- কিডনি শুল নিবারণের পক্ষে এটি শ্রেষ্ঠ ওষুধ গুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি স্থানীয় উত্তেজনা হ্রাস করে বিনা ক্লেশে পাথুরী নির্গমনে সহায়তা করে। বিন্দুবিন্দু মূত্র ত্যাগ। মূত্রে শ্লেষ্মা ও লিথেটস এর আধিক্য। উভয় কিডনিতে ও মূত্রস্থলীতে অতীব্র, গভীর বেদনা ও জ্বালা যন্ত্রণাতে ইউপেটেরিয়াম পার্পিউরিয়াম ফলদায়ক। মূত্র ত্যাগের পূর্বে কটিদেশে তীব্র বেদনা এবং তা মূত্র ত্যাগের পর উপশম।

মূত্র ঘোলা, দুগ্ধবৎ এবং দুর্গন্ধময় তলানি যুক্ত। মূত্রমধ্যে পাথুরী নির্গমন ও প্রদাহে লাইকো পোডিয়াম ভালো কাজ দেয়। মূত্রনালী মধ্যে তীব্র যন্ত্রণা এবং পাথুরী নির্গমনবৎ অনুভূতি ও যন্ত্রণার সময়ে বরফ পানের ইচ্ছা ও লিঙ্গমূলে আড়াআড়ি ভাবে কর্তনবৎ তীব্র বেদনায় মেডোরিনাম ব্যবহৃত হয়। মূত্রে যদি অক্সালিক এসিড বর্তমান থাকে ।

এটিই যদি পাথুরীর প্রধান উপাদান হয় তবে কিডনিতে নাইট্রিক এসিড ব্যবহার্য। এ ছাড়া ক্যালকেরিয়া রিনালিস, এপিজিয়া রেপেন্স, এরিজেরন, নাক্সভমিকা, সার্সাপ্যারিলা, প্যারেরা ব্রেভা, সলিডেগো, ট্যাবাকাম, ডায়োস্কোরিয়া, ইকুইসেটাম, বেলেডোনা, বেজ্ঞায়িক এসিড উল্লেখযোগ্য। তারপরও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থেকে ওষুধ সেবন করা উচিত।

তুলশী পাতা ও দুধ এর উপকারিতা

অধিকাংশ মানুষ জানে না যে, অসুখে নিয়মিত প্রাকৃতিক চিকিৎসা নিলে তা বেশ কার্যকর। সবচেয়ে বড় কথা হল প্রাকৃতিক ঔষুধের কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। আপনি কি জানেন তুলসী পাতায় অসংখ্য ঔষধি গুণ রয়েছে তুলসী পাতা অনেক রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে। যখন তুলশীর সঙ্গে দুধ মিলিত হয় তখন এটি একটি শক্তি শালী উপাদানে পরিনত হয়।

যা বিভিন্ন রোগের মহা ঔষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। মাত্র ৩ - ৪টি তুলসী পাতা নিন। ভাল করে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। এবার গরম দুধে তুলসী পাতা ছেড়ে দিন। এরপর মিশ্রণ টি দুধ ও তুলসী পাতা এক কাপে নিন। মিশ্রণ টি রোজ সকালে খালি পেটে এক গ্লাস করে খাবেন।

কিডনি পাথর দূর করে

দুধ ও তুলসী পাতার ইউরিনে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমিয়ে দেয়, যা কিডনি পাথর দূর করে থাকে। রক্তের ইউরিক এসিড এর লেভেল কে কমতে সাহায্য করে কিডনি কে পরিষ্কার করে তুলে তুলসী পাতা। তুলসীর অ্যাসেটিক এসিড এবং এসেনশিয়াল অয়েল এর উপাদান থাকে। 

যে গুলো কিডনির পাথর ভাঙতে সাহায্য করে থাকে ও ব্যাথা ভাল করে। আমদের কিডনির পাথর দূর করার জন্য  তুলসী পাতার রসের মধ্যে মধু মিশ্র করে খেতে হবে। এভাবে নিয়মিত ৬ হতে ৭ মাস খেলে কিডনি পাথর দূর হবে। এ ছাড়া তুলসী কিডনি কে শক্তি শালী করে থাকে । 

পাথরকুচির আশ্চর্য গুণাবলী

পাথরকুচি গাছের সাথে আমাদের সকলেই কম বেশী পরিচিত হয়েছে । নানা রকম ঔষধি গুনা গুন সমৃদ্ধ এ গাছের পাতা অনেক আগে থেকে ব্যবহার করে আসছে চিকিৎসার জন্য । তাই চলুন তাহলে আজ জেনে নেই পাথরকুচি গাছ ও এর নানা রমক ঔষধি গুনা গুন সম্পর্কে।

কিডনির পাথর অপসারণে পাথরকুচি পাতা

  • পাথর কুচি পাতা কিডনি পাথর অপসারণ করতে সাহায্য করে। দিনে দুই বার ২ থেকে ৩ টি পাতা  রস করে খান।
  • এছাড়া ও উচ্চ রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে এবং মুত্র থলির সমস্যা থেকে পাথর কুচি পাতা মুক্তি দেয়। 
  • শরীরের জ্বালা পোড়া বা আর্থ্রাইটিস থেকে রক্ষা করে। 
  • যদি পাথর কুচি পাতা বেটে কয়েক ফোঁটা রস কানের ভেতর দিলে কানের যন্ত্রণা কমে যায়। 
  • কলেরা ও ডাইরিয়া  রোগ সারাতে পাথর কুচি পাতার জুড়ি নেই।পাথর কুচি পাতার জুসের সাথে জিরা এবং ঘি মিশিয়ে খেলে এ ধরনের অসুখ থেকে উপকার পাওয়া যায়।
  • পাথর কুচি পাতার রস সাথে গোল মরিচ মিশিয়ে পান করলে পাইলস রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • যারা পাথর কুচির গাছ চিনেন না পাথর কুচি অনেক জাইগাতে কফ পাতা নামে পরিচিত। এর আরেকটি নাম পাটিয়া পুরি। হিন্দিতে জখমী হায়াৎ ও সংস্কৃতে পাষাণভেদ বলে।
  • প্রাকৃতিক উপায়ে নিজেই করুন সমাধান যারা ছুরি-কাঁচির নাম শুনলেই ভয়ে গায়ে জ্বর আসে। তারা বিনা অপারেশনে কিডনি স্টোন থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তাদের জন্য রইল তরমুজ আর পাথরকুচি দিয়ে তৈরি ২ টি প্রাকৃতিক উপায়।
  • আধ লিটার ফুটন্ত পানিতে এক টেবিল চামচ তরমুজের বীজের গুঁড়া করে মিসিয়ে খান।

  • একই ভাবে এক টেবিল চা চামচ টাটকা পাথরকুচি বীজের গুঁড়া করে বা কুঁচিয়ে আধ লিটার ফুটন্ত পানিতে মিশিয়ে দিন। ঠাণ্ডা হলে চায়ের মতো পান করুন।
  • তবে গর্ভবতীদের ক্ষেত্রে পাথরকুচি খাওয়া যাবে না।

কিডনির পাথর দূর করতে রাশিয়ান ভেষজ

আপনারা অনেকেই কিডনিতে পাথরের সমস্যায় ভুগে থাকেন। অনেক সময় ঔষধে সেরে যায় আবার অনেক ক্ষেত্রে পাথর ভেঙে বের করতে হয়।আবার বড় পাথর বা অবস্থা গুরুতর হলে অপারেশনও করতে হয়। কিন্তু কিছু প্রাকৃতিক উপায়ে সেটা অনেকসময় সমাধান করা সম্ভব। তাই আজ সবাইকে জানাতে চাই কিডনিতে পাথর সমস্যা প্রতিকারের জন্য সত্যিকার ভাবে কার্যকরী ও ফলপ্রসূ একটি রাশিয়ান ভেষজ রেসিপি।

এই রেসিপি টি কিডনি কে পরিষ্কারে সাহায্য করে, মিউকাস নিঃ সরণে এবং বালি ও ছোটছোট পাথর বের করতে সাহায্য করবে মাত্র ১৫ হতে ২০ দিনের ভিতরে। বাজরা হচ্ছে এক প্রকার সাশ্রয়ী খাদ্য শস্য যা কিডনি তে থাকা পাথর অপসারণের চিকিৎসায় এর ভূমিকা অসামান্য। অনেকেই হয়তো একে চেনেন না, অনেকে আবার পাখির খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করেন।

আরো পড়ুনঃ কোমর ব্যাথা সারানোর সহজ উপায়

রাশিয়ান ভেষজ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের বাজরা ও রুটি তৈরি করা যায়।আবার অনেকেই দাবি করে যে এই বাজরা কিডনির বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধ বা দূর করতে সাহায্য করে। গ্রাম্য ঔষধে এই বাজরা রোগের (প্রস্রাবের সাথে পাথর বের হয়ে ইউরিনারী সিস্টেমে সমস্যার সৃষ্টি করে যে রোগে) সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক সমাধান হিসেবে কাজ করে।

আবার রাশিয়ান ভেষজ রেসিপি কার্যকরী ভাবে কিডনিকে পরিস্কার করে থাকে। আবার বালি ও বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়। আর কিডনি ও মুত্রা শয়ের ছোট ছোট পাথর গুলি বের করে দেয় এবং মহিলাদের cystitis রোগের চিকিৎসায় সাহায্য করে। এছাড়া এই জোয়ার হচ্ছে উচ্চ পুষ্টি মান ও ঔষধি গুণ সম্পন্ন এক বিশেষ ধরনের খাদ্য শস্য।

কিডনিতে থাকা পাথর দূরীকরণের পদ্ধতি

২০০ গ্রাম (১ কাপ) বাজরা নিয়ে কুসুম গরম পানিতে খুব ভালোভাবে ধুয়ে রাখতে হবে। এটা করতে হবে রাতেরবেলা তাহলে ভালভাবে ভিজবে। তারপর সেই ভেজানো বাজরা গুলো ৩ লিটার ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন একটি পাত্রে নিয়ে এর ২/৩ অংশে ফুটন্ত গরম পানি দিতে হবে এবং পাত্র টির মুখ খুব ভালোভাবে বন্ধ করে একটি কাপড় দিয়ে ঢেকে সারা রাত রেখে দিতে হবে।

পর দিন সকালে পাত্র টিতে এক ধরনের সাদা ঘোলাটে তরল পাওয়া যাবে। এ টাই হচ্ছে সেই কাঙ্খিত ঔষধ। এখন এই পানি টি অন্য একটি পাত্র বা বোতলে নিয়ে নিন এবং সারা দিন যে কোনো সময় যে কোনো পরিমাণে পান করুন কোন বাধা নিষেধ ছাড়াই। আর বাজরা গুলো ফেলে না দিয়ে পরিজ রান্না করে সকালের স্বাস্থ্য সম্মত নাস্তা হিসেবে খেতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ রুট ক্যানেল করতে কত সময় লাগে

এক কাপ বাজরার সাথে ৩ কাপ পানি দিয়ে ১৫ মিনিট ফুটালেই তৈরি হয়ে যাবে সকালের নাস্তা। প্রতিদিন রাতে আবার পরবর্তী দিনের জন্য নতুন করে বাজরার পানি তৈরি করে রাখুন একই প্রক্রিয়াতে। এভাবে প্রত্যাশিত ফলাফল পেতে ১০-১৫ দিন নিয়মিত এই পানীয়টি খেতে হবে। এই ১০-১৫ দিনের মাঝে কিডনি পরিস্কারের পাশাপাশি এতে থাকা পাথর নরম হয়ে গলে প্রসাবের সাথে বেড়িয়ে যাবে।

যদি কিডনিতে থাকা বালি ও পাথর সব দূর হয়ে তখন কষ্ট হয়ে যাবে। ফোলা কমে যেয়ে কিডনী ও মূত্রতন্ত্রের বিভিন্ন অঙ্গ গুলো সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিয়ে আসবে। এই খাদ্যশস্যটি প্রতেকের জন্য প্রযোজ্য, সাশ্রয়ী এবং সহজলভ্য এবং এটি যদি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যুক্ত করা হয় তবে তা অবশ্যই কিডনির জন্য স্বাস্থ্যকর হবে।

যে কোনো রোগের জন্যই প্রতি রোধ প্রয়োজন বিশেষ করে শরীরের সম্ভাব্য রোগ । এ ছাড়া রোগ এড়ানোর জন্য এবং প্রাকৃতিক উপায়ে একে পরিষ্কার রাখার জন্য। এছাড়া আমরা যদি লেবু এবং জলপাই তেলের মিশ্রণ তৈরি করে খেলে তা পিত্ত থলি এবং কিডনির পাথর গলাতে সাহায্য করে।

কিডনির রোগ নিরাময়ে প্রাকৃতিক উপায়-শেষ কথা

উপরে উক্ত আর্টিকেলে আজ আপনাদের সাথে আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিল কিডনি রোগ নিরাময়ে প্রাকৃতিক উপায় ও ভেষজ উদ্ভিদ সে সম্বন্ধে। সাথে আরো আলোচনা করেছি কিডনি পাথর নিরাময়ে হোমিওপ্যাথি ও তুলশী পাতা ও দুধ এর উপকারিতা এর বিভিন্ন তথ্য সম্বন্ধে।

আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন এবং আপনার ভালো লেগেছে।এমনই গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষনীয় আর্টিকেল প্রতি দিন পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করবেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।  


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url