পুরুষের ফ্যাশন কেমন হতে পারে বিস্তারিত পড়ুন
আপনি হয়তো পুরুষের ফ্যাশন সম্পর্কে জানতে গুগলে সার্চ করেছেন। কিন্তু আমরা অনেকেই পুরুষের ফ্যাশন সম্পর্কে জানি না।তবে সমস্যা নেই আজকে আমি পুরুষের ফ্যাশন সম্পর্কে আপনাকে স্পষ্ট ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব।
যেহেতু আপনি পুরুষের ফ্যাশন সম্পর্কে জানেন না সে ক্ষেত্রে পুরুষের ফ্যাশন কি এবং পুরুষের ফ্যাশন সম্পর্কে আমাদের ভালো জ্ঞান রাখা জরুরি। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে আমরা পুরুষের ফ্যাশন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করি।
কেমন হতে পারে পুরুষের ফ্যাশন
বিশিষ্ট ফ্যাশন ডিজাইনার চন্দ্রশেখর সাহা বলেছেন, ফ্যাশনের জন্যন দুইটি বিষয়ে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন হয়ে থাকে। একটি ব্যক্তিগত স্বাচ্ছন্দ্য,অন্যটি হলো পরিবেশগত স্বাচ্ছন্দ্য। ফ্যাশান এমন হওয়া উচিত সবাই যাতে পছন্দ করে এবং আপনার ফ্যাশন এমন হওয়া উচিত যাতে আপনার আশপাশের মানুষের চোখে বিরক্তির সৃষ্টি না করে। ধরুন আপনি কোন রবীন্দসংগীতের অনুষ্ঠানে গোলাপি শার্ট আর বেগুনী প্যান্ট পরে গেলেন? মানাবে মানুষ অবশ্যই না। কিন্তু আপনি ডিস্ক পার্টিতে এরকম সাজ দিতেই পারেন।
তাই ফ্যাশন অনেকটা পরিবেশের অবস্থা সাপেক্ষে হওয়া উচিত। কিন্তু বিভিন্ন প্রফেশন, শিক্ষা-দীক্ষা, স্ট্যান্ডার্ডে তার ফ্যাশন বিভক্ত হবে। যখন সে ব্যবসায়ী তখন তার এক ফ্যাশন, যখন সে কর্পোরেট কর্মকর্তা তখন একরকম আবার যখন সে কবি সাহিত্যিক তখন আরেকরকম। তমাল সাইফুল্লাহ এর মতে, “আপনাকে যে পোশাকে বা লুকে মানাচ্ছে সেটি আপনার ফ্যাশন”।
তাই বাজারে নতুন কোন ট্রেন্ড এসেছে। আপনি ও তার সাথে তাল মিলিয়ে সে ট্রেন্ড দেখে চলবেন। কিন্তু আপনাকে সেটি মানাচ্ছে না। তাই ট্রেন্ড বদল করে নিজেকে আয়নায় দেখে যেটি আপনাকে ভালো লাগবে সেটিই হওয়া উচিত আপনার ফ্যাশন। ফ্যাশনকে আসলে কোন ধরাবাঁধা নিয়মে বাঁধা উচিত না। শুধু পোশাকে নয়, পুরুষের ফ্যাশন রয়েছে ব্যক্তিত্বেও।
আরো পড়ুনঃ ত্বক পরিচর্যায় করার প্রাকৃতিক ভাবে ১০ টি উপায়
আপনি বলেন সুন্দর পরিপাটি করে পোশাক পড়ে আজে-বাজে কথা বলছেন, খিস্তি ছাড়ছেন সেই ক্ষেত্রে যেকোনো ফ্যাশনই লবডংকা হয়ে থাকে। আপনার ব্যক্তিত্বই আপনাকে করে তুলবে সুন্দর পুরুষ। তবে সুন্দর করে চুল আঁচড়ানো, নিজের ত্বকের যত্ন নেওয়া এগুলো কিন্তু ফ্যাশনের আওতায় পড়ে না। এগুলো একজন মানুষকে সুস্থ থাকতে চাইলে করতেই হবে।
সেইভাবে সব পুরুষের উচিত নিজের শরীর নিয়ে সচেতন হওয়া। পুরুষের সৌন্দর্য নিয়ে এই সমাজে ভ্রান্তি মূলক ধারণা রয়েছে। সিগারেট খাওয়া বা বউ পেটানো যে কোন পুরুষালি আচরণ নয় তা এই সমাজকে বুঝতে শিখতে হবে।
তাই বলা যায় যে, পুরুষের সৌন্দর্য মানেই যে সিক্স প্যাক নয়। সেই ধারণাও ছাড়তে হবে। পুরুষের সৌন্দর্য মানে একজন পুরুষের সুস্থ শরীর, পজিটিভ আচরণ আর তার ব্যক্তিত্ব ভালো থাকে । আমাদের চারপাশের সব পুরুষ সুন্দর হয়ে উঠুক ।
ছেলেদের শীত ফ্যাশন
আগে এক সময় ভাবতাম যে ফ্যাশন শব্দটা শুধু মেয়েদের বেলায়। ছেলেরা যাই পরুক না কেন, তাতে কি এসে যায়। কিন্তু এখন সময় বদলে গেছে । সময়ের সঙ্গে পালটে গেছে ফ্যাশনের ধারণা। শুধু নামি-দামি ব্র্যান্ডের পোশাক গায়ে জড়ালেই যেমন ফ্যাশন সচেতন হওয়া যায় না, তেমনি ফ্যাশন শব্দটা এখন আর শুধু নারীর মাঝেই সীমাবদ্ধ নেই। পুরুষও ফ্যাশন নিয়ে খুব সচেতন এখন।
পুরুষও ফ্যাশন নিয়ে খুব সচেতন এখন। তাই তো কখনো লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও, কখনো ব্রযাড পিট, কখনো বা টম ক্রুজের স্টাইল আমাদের মুগ্ধ করে। অনেক তরুণকেই ফ্যাশনে তাদের অনুসরণ করতে দেখা যায়। ফ্যাশন সচেতন মানুষের জন্য প্রয়োজন নিজের ব্যক্তিত্ব আর অভি ব্যক্তির সঠিক প্রকাশ এবং পোশাকের বিন্যাস।
আমরা জানি যে শীতকাল যেন পোশাকে নিজের রুচি আর স্বাচ্ছন্দ্য প্রকাশের মোক্ষম সময় হয়ে থাকে। ছেলেদের শীত কালের পোশাক বলতেই চোখে ভেসে আসে কনভার্স, জিন্স ও ফুল স্লিভ টি-শার্ট, ফুল স্লিভ পোলো শার্ট, জ্যাকেট, শাল, চাদর, মাফলার ও হুডি। প্রকৃতিতে এখনো শীত সেভাবে না এলেও মাঝে মাঝে উত্তরের হিম হাওয়া জানান দেয়, শীত আসছে। চলুন দেখে নিই এই শীতে কেমন হবে তরুণদের পোশাক।
ঢিলেঢালা পোশাক
শীতে ট্রেন্ডে থাকবে ঢিলে-ঢালা ফ্যাশন এর মাধ্যমে। ভারসাইজড কার্ডিগান আর বয়ফ্রেন্ড জ্যাকেট দিয়ে ওভার সাইজ পোশাকের প্রতি আগ্রহ শুরু হয়েছিল। সেই ধারা এখন ছেলেদের জিনস, শার্ট, টি–শার্ট, সোয়েটার সবখানেই ঢুকে পড়েছে। মানুষ এখন আঁটসাঁট পোশাকের চেয়ে স্বস্তিদায়ক পোশাকে ফ্যাশন করতে আগ্রহী।
হুডি
আমরা ছোট বড় কিশোরকিশোরী থেকে তরুণতরুণী সবারই পছন্দের শীতের পোশাক হিসাবে হুডি। তাই তো সবাই শীত আসতে থাকলেই শপিং মল ও অনলাইনে হুডি কেনা বেচার হিড়িক পড়ে যায়। হালকা শীতে এ পোশাকটির চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। শীতের তীব্রতা অনুযায়ী নরম উল থেকে শুরু করে ভারি সিন্থেটিক সব রকমের হুডিই এখন পাওয়া যায়l
জ্যাকেট
শীতের সময় ফ্যাশন-এ্যবল পুরুষের অন্যতম পছন্দ হল জ্যাকেট। এগুলো ফর্মাল থেকে ক্যাজুয়াল যে কোনো উপলক্ষেই সবাই পরা যায়। কর্মক্ষেত্র থেকে শুরু করে বন্ধুদের আড্ডা সবখানেই জ্যাকেট মানানসই। যারা মোটর সাইকেল ব্যবহার করেন তাদের জন্য জ্যাকেট সবচেয়ে স্বস্তিদায়ক পোশাক। কারণ এটি যেমন ফ্যাশনেবল, তেমনি শীত থেকে রক্ষা করে দারুণভাবে। জ্যাকেট সিন্থেটিক লেদার, ডেনিম, ফ্লিচ এবং পলিয়েস্টার যে কোনো কাপড়ের পাওয়া যায়।
কোট ও ব্লেজারা
আমরা শীতের পোশাক হিসেবে অনেকেই কোট ও ব্লেজার পরতে ভালবাসি। এ গুলো কর্ম ক্ষেত্রে যেমন পরা যায়, তেমন কোনো পার্টিতে ও বেশ মানিয়ে পরা যায়। ব্লেজারের কাপড়, কাট-ছাঁট, বেতাম, রং ইত্যাদি বিষয়ে এবার বৈচিত্র্যের ছোঁয়া লেগেছে বেশি। কালচে, ছাই রং অথবা নেভি ব্লু ব্লেজারের পাশাপাশি এখন বিভিন্ন রঙিন ব্লেজার ব্যবহারের প্রবণতা বেশ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জিনস, লেদার, সুতির বাইরে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে মখ-মলের জ্যাকেট বা ওয়েস্ট কোট।
মাফলার-টুপি
আমাদের সোয়েটার, জ্যাকেট আর অন্য সব শীতের পোশাককের আরও আকর্ষণীয় করে তোলে অন্যান্য ফ্যাশন অনুষঙ্গ, যার মধ্যে অন্যতম মাফলার ও টুপি। তবে এগুলো পোশাক বুঝে পরতে হবে।
বর্ষায় পুরুষের ফ্যাশন
আমাদের এই ঋতুতে ছিমছাম বেশভূষার জন্য নারীদের পাশাপাশি পুরুষদেরও কিছু বিষয় খেয়াল রাখা দরকার আছে। বিভিন্ন অনুসঙ্গ মিলিয়ে উজ্জ্বল রংয়ের পোশাক পরলে ব্যক্তিত্বে আসবে অনেক রকম চমক। মেঘলা আবহাওয়ায় উজ্জ্বল সবুজ, নীল, হলুদ বা লাল শার্ট ভালো মানাবে। ‘ফাংকি’ বা মজাদার প্রিন্টের শার্ট গায়ে চড়াতে পারেন বিনা সংকোচে।
তাই আমাদের হালকা কাপড়ের জন্য আরামদায়ক প্যান্ট পরে থাকতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, প্যান্টের নিচের অংশ যাবে গোড়ালির উপর বরাবর কিংবা ঠিক উপরে। এতে রাস্তার কাদা, পানি থেকে কিছুটা রক্ষা পাওয়া যাবে। সাদা ও অন্যান্য হালকা রংয়ের পোশাক এড়িয়ে চলাই ভালো। কারণ এগুলোতে দাগ বেশি বোঝা যায় এবং পানিতে ভিজলে স্বচ্ছ হয়ে যায়, যা আপনাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে পারে।
শুধু শীতকাল নয়, তবে আবহাওয়া ঠাণ্ডা থাকার ফলে অফিসিয়াল বেশভূষা হিসেবে হালকা কোট বা ব্লেজার পরার সুযোগ রয়েছে এই ঋতুতে আমাদের। পানিরোধক ট্রেঞ্চ কোট যে কোনো অফিসিয়াল মিটিংয়ে মানাবে বেশ। বর্ষায় পোশাক পরিচ্ছদের ক্ষেত্রে প্রধান বিষয় হল বৃষ্টিতে ভেজার হাত থেকে বাঁচা। তাই পানিরোধক কাপড়ে তৈরি রেইনকোট হতে পারে আদর্শ।
আমদের কে প্যান্টের পা ছোট রাখতে হবে, প্রয়োজনে প্যান্টের পা সুন্দরভাবে ভাঁজ করে গুটিয়ে নিয়ে থাকতে হবে। শখ করে কেনা দামি হ্যাট বা ক্যাপটা ব্যবহার করার এখনই সুবর্ণ সুযোগ। তবে খেয়াল রাখতে হবে হ্যাট বা ক্যাপ যাতে বাকি পোশাকের সঙ্গে মানানসই হয়। বৃষ্টিতে নিজে ভিজে যাওয়ার পাশপাশি ব্যাগ ভিজে যাওয়ার আশঙ্কা মনের মধ্যে কাজ করে।
ল্যাপটপ, ক্যামেরা, কাগজপত্র ইত্যাদি বিভিন্ন আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র থাকে ব্যাগে। শরীর ভিজলে কিছুক্ষণ পর শুকিয়ে যাবে, হয়ত একটু সর্দি লাগবে। কিন্তু ব্যাগ ভিজে গেলে কয়েক হাজার টাকার প্রয়োজনীয় জিনিস কিংবা তার চাইতেও গুরুত্বপূর্ণ কাগজ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
তাই পানিরোধক একটি ব্যাগ এই ঋতুতে খুবই জরুরি। এক্ষেত্রে ভালোমানের ব্যাকপ্যাক বেছে নিতে পারেন। অথবা ব্যাগের উপর পানিরোধক কভার পরিয়ে নিতে পারেন।
পুরুষদের গ্রীষ্মকালীন ফ্যাশন টিপস
ফ্যাশন শুধুমাত্র নারীদের জন্যই নয় পুরুষে জন্য ফ্যাশন।আজ-কাল পুরুষরাও এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। যদিও গ্রীষ্মকালে পুরুষদের জন্য গরমে এমন কিছু পোশাক রয়েছে যা কিনা তাপকে উপেক্ষা করতে পারে।
আরো পড়ুনঃ মুখের কালো দাগ দূর করার জন্য কিছু টিপস
যেমন- পাতলা কাপড় থেকে স্মার্ট লেয়ারিং কৌশল।সর্বশেষ ট্রেন্ডস, আউটফিট আইডিয়া এবং গ্রুমিং টিপস শেয়ার করেছেন। যা আপনাকে গরমকালে করে তুলবে আত্মবিশ্বাসী ও স্টাইলিশ।
সাদা রঙের পোশাক
আমরা গরমকালে নিজেকে সবচেয়ে বড় যে উপহারটি দিতে পারেন তা হল সাদা রঙের পোশাকটি বেশি। জিন্স বা প্যান্টের সঙ্গে সাদা শার্ট বা টি-শার্টই পড়ুন। প্রচণ্ড গরমে এটি আপনার শরীরকে ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করবে। সাদা রঙের মতো হালকা রঙগুলো সূর্যের আলোকে প্রতিফলিত করে। যার ফলে আপনার শরীর চরম তাপ থেকে মুক্ত থাকে। শার্ট এবং টি-শার্ট ছাড়াও সাদা জোড়া স্নিকারস সুপার স্টাইলিশের লুক দিবে।
ট্রাউজার
আমরা গরমে মধ্যে জিন্সের বদলে আরামদায়ক ট্রাউজার পড়তে ভালোবাসি। এগুলো আপনাকে বাইরের তাপ থেকে রক্ষা করবে। তাছাড়া, স্তাইলিশ লুক আনতেও সাহায্য করবে।
টুপি
আমরা গরমে মধ্যে টুপি পড়তে ভালোবাসি। এতে বাইরের তাপ থেকে মাথা ও চুল রক্ষা পাবে। পোশাকের সাথে মানানসই টুপি পড়ুন। এতে দেখতেও ভাল লাগবে।
দাড়ি
আমরা গরমে মধ্যে দাড়ি নিয়ে স্টাইল করতে পারি। নানা ভাবে দাড়ি কাটতে পারেন। যেমন- ইম্পেরিয়াল স্টাইল, শর্ট টেইলরড কিংবা ট্রিম করা। এতে আপনার গরম কম লাগবে। লুকও পরিবর্তন হবে।
পুরুষের ফ্যাশন কেমন হতে পারে-শেষ কথা
উপরে উক্ত আর্টিকেলে আজ আপনাদের সাথে আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিল পুরুষের ফ্যাশন সে সম্বন্ধে। সাথে আরো আলোচনা করেছি পুরুষের ফ্যাশন ও অনেক রকম পোশাক এর বিভিন্ন তথ্য সম্বন্ধে। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি অনেক উপকৃত হয়েছেন এবং আপনার অনেক ভালো লেগেছে।
আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনার কোন কোন বিষয় গুলি ভালো লেগেছে এবং আপনি কত টুকু উপকৃত হয়েছেন তা আপনার নিকটস্থ বন্ধুদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করবেন। এমনই গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষনীয় আর্টিকেল প্রতি দিন পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করবেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url