তুলসী গাছ ও নিম গাছ এর ঔষধি গুণাগুন

আপনি হয়তো তুলসী গাছ ও নিম গাছ প্রাকৃতিক গুনাগুন সম্পর্কে জানতে গুগলে সার্চ করেছেন। তুলসী গাছ ও নিম গাছ প্রাকৃতিক গুনাগুণ অনেক । কিন্তু আমরা অনেকেই তুলসী গাছ ও নিম গাছ প্রাকৃতিক গুনাগুন সম্পর্কে জানি না । তবে সমস্যা নেই আজকে আমি তুলসী গাছ ও নিম গাছ প্রাকৃতিক গুনাগুন সম্পর্কে আপনাকে স্পষ্ট ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব।

তুলসী গাছ ও নিম গাছ এর ঔষধি গুণাগুন

যেহেতু আপনি তুলসী গাছ ও নিম গাছ প্রাকৃতিক গুনাগুন সম্পর্কে জানেন না সে ক্ষেত্রে তুলসী গাছ ও নিম গাছ কি এবং তুলসী গাছ ও নিম গাছ প্রাকৃতিক গুনাগুন সম্পর্কে আমাদের ভালো জ্ঞান রাখা জরুরি। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে আমরা তুলসী গাছ ও নিম গাছ প্রাকৃতিক গুনাগুন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করি।

তুলসী গাছ  

তুলসী গাছ হল এক ধরনের ঔষধি গাছ । তুলসী অর্থ যার তুলনা নেই। সুগন্ধি যুক্ত, কটু তিক্তরস, রুচিকর।এটি সর্দি, কাশি, কৃমি এবং মুত্রকর, হজম কারক ও এন্টি-সেপটিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।তবে বিশেষ করে কফের প্রাধান্যে যে সব রোগ সৃষ্টি হয় সে ক্ষেত্রে তুলসী বেশ ফলদায়ক হয় ।

চিনবেন কি করে তুলসী গাছ

তুলসী গাছ হল একটি গুল্ম জাতীয় গাছ। তুলসী গাছ গাছটিতে অনেক পাতা হয়। তুলসী গাছ থেকেও অনে ফল ধরে । তুলসী গাছ থেকে অনেক সুন্দর ঘ্যান পাওয়া যায় । 

তুলসী গাছ এর উপকারিতা

সর্দি-ঠাণ্ডা কমানোর জন্য সব মায়েরাই ব্যাবহার করে তুলসী। পেট খারাপ হয় তাহলে তুলসীপাতার ১০ টা পাতা সামান্য জিরার সাথে বেঁটে ৩-৪ বার খান ৷ পায়খানা এক বারে বন্ধ হয়ে যাবে, মানে পায়খানার ওই সমস্যাটা আর কি! মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে দিনে ৪-৫ বার তুলসী পাতা চেবান ৷ শরীরের কোন অংশ যদি পুড়ে যায় তাহলে তুলসীর রস এবং নারকেলের তেল ফেটিয়ে লাগান, এতে জ্বালা কমবে ৷

পোড়া জায়গা তাড়া-তাড়ি শুকিয়ে যাবে৷ সেখানে কোন দাগ থাকবে না ৷ বুদ্ধি ও স্মরণশক্তি বাড়ানোর জন্য প্রতি দিন ৫-৭ টা তুলসী পাতা চিবান৷ তুলসী একটি ঔষধি গাছ। তুলসী অর্থ যার তুলনা নেই। সুগন্ধি যুক্ত কটু তিক্ত রস রুচিকর। এটি সর্দি কাশি,  কৃমি এবং মুত্রকর,  হজম কারক ও এন্টি-সেপটিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

আরো পড়ুনঃ কালো জিরার ও জিরা ঔষধি গুনাগুণ

তবে বিশেষ করে কফের জন্য রোগ সৃষ্টি হয় সে ক্ষেত্রে তুলসী বেশ ফল দায়ক। শিশুদের সর্দি কাশির জন্য মহা ঔষধ হলেও যে কোন বয়সের মানুষই এ থেকে উপকার পেয়ে থাকে । শুধু পুজো- অর্চনাতেই লাগে না  এর পাতার অনেক গুণ রয়েছে ৷

জ্বর বা জ্বর সর্দি হলে জলের মধ্যে তুলসী পাতা ও গোল মরিচভাল করে সেদ্ধ করতে হবে ৷ অথবা এ দ্রব্য মিশিয়ে বড়ি তৈরি করত হবে ৷ দিনের মধ্যে তিন-চার বার ঐ বড়িটা জলের সাথে খান তাহলে  জ্বর খুব তাড়া-তাড়ি সেরে যাবে।

তুলসী গাছ এর ঔষধিগুণ

  • কাশি যদি না কমে সেই ক্ষেত্রে তুলসীপাতা ও আদা বেঁটে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খান ৷ এতে উপকার পাবেন ৷
  • পেট খারাপ হলে তুলসীর ১০ টা পাতা সামান্য জিরের সঙ্গে বেঁটে ৩-৪ বার খান ৷পায়খানা একে বারে বন্ধ হয়ে যাবে।
  • মুখের র্গন্ধ দূর করার জন্য দিনে ৪-৫ বার তুলসী পাতা চেবান ৷
  • ঘা যদি দ্রুত কমাতে চান তাহলে তুলসীপাতা এবং ফিটকিরি এক সাথে বেঁটে ঘা এর স্থানে লাগান, কমে যাবে ৷
  • দেহের কোন অংশ যদি পুড়ে যায় তাহলে তুলসীর রস ও নারকেলের তেল এক সাথে মিসিয়ে  লাগান, এতে জ্বালা কমবে ৷আর পোড়া জায়গা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে ৷ সেখানে কোন দাগ থাকবে না ৷
  • ত্বকের চমক বাড়ানোর জন্য, এছাড়াও ত্বকের বলীরেখা এবং ব্রোন দূর করার জন্য তুলসী পাতা পিষে মুখে লাগান ৷
  • বুদ্ধি এবং স্মরণ শক্তি বাড়ানোর জন্য প্রতিদিন ৫-৭ টা তুলসী পাতা চিবান ৷
  • প্রস্রাবে জ্বালা হলে তুলসীপাতার রস ২৫০ গ্রাম দুধ এবং ১৫০ গ্রাম জলের মধ্যে মিশিয়ে পান করুন উপকার পাবেন ৷
  • ত্বকের সমস্যা দূর করার জন্য তেলের মধ্যে তুলসীপাতা ফেলে হালকা গরম করে ত্বকে লাগান ৷

তুলসী গাছ এর ব্যবহার

আমাদের দেশে ছেলে মেয়েদের সর্দি-কাশিতে তুলসী পাতার রস ব্যাপক ভাবে ব্যবহার করে থাকে । এসব ক্ষেত্রে কয়েকটি তাজা তুলসীপাতার রসের সাথে একটু আদাররস ও মধুসহ খাওয়ানো হয়ে থাকে । বাচ্চাদের সর্দি-কাশিতে এটি বিশেষ ফলপ্রদ। তাজা তুলসী পাতার রস মধু, আদা ও পিঁয়াজের রসের সাথে এক সাথে পান করলে সর্দি বের হয়ে যায় এবং হাপানিতে আরাম পায়।

নিম গাছ এর ঔষধি গুণাগুন

নিম একটি ঔষধি গাছ, । এর ডাল, পাতা, রস, সবই কাজে লাগে। নিম একটি বহু বর্ষজীবি ও চির হরিত বৃক্ষ। কৃমিনাশক হিসেবে নিম রস খুবই কার্যকর।নিমের কাঠ খুবই শক্ত। এ কাঠে কখনো ঘুণ ধরে না। পোকা বাসা বাঁধে না। উইপোকা খেতে পারে না। এ কারণে নিম কাঠের আসবাব পত্রও তৈরি করা হচ্ছে আজকাল।

এছাড়া প্রাচীন কাল থেকেই বাদ্যযন্ত্র বানানোর জন্য কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে।এতে অন্যায় ভাবে নিম গাছ ধ্বংস করছে। নিমের এই গুনাগুনের কথা বিবেচনা করেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘একুশ শতকের বৃক্ষ’ বলে ঘোষনা করেছে। নিম একটি বহু বর্ষজীবি ও চির হরিত বৃক্ষ।

আরো পড়ুনঃ আমলকীর প্রাকৃতিক গুনাগুন সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

নিম গাছের পাতা, ফল, ছাল বা বাকল, নিমের তেল,বীজ। এক কথায় নিমের সব কিছু ব্যবহার করা যায়। বিশ্ব ব্যাপী নিম গাছ, গাছের পাতা, শিকড়, নিম ফল ও বাকল ওষুধের কাঁচামাল হিসেবে পরিচিত। বর্তমান বিশ্বে নিমের কদর তা কিন্তু এর অ্যান্টি-সেপটিক হিসেবে ব্যহারের জন্য।

নিম ছত্রাক নাশক হিসেবে, ব্যাকটেরিয়া রোধক হিসেবে ভাইরাস রোধক হিসেবে, কীট-পতঙ্গ বিনাশে চ্যাগাস রোধ নিয়ন্ত্রণে, ম্যালেরিয়া নিরাময়ে,দন্ত চিকিতসায় ব্যাথা মুক্তি ও জ্বর কমাতে, জন্ম নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হয়।

নিম গাছ এর ব্যবহার

কফজনিত বুকের ব্যথা-

অনেক সময় বুকে কফ জমে বুক ব্যথা করে থাকে । এ জন্য ৩০ থেকে ৪০ ফোটা নিমপাতার রশ সামান্য গরম পানিতে মিশিয়ে দিতে ৩/৪ বার খেলে বুকের ব্যথা কমবে। গর্ভবতী,শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য এ ঔষধটি নিষেধ।

কৃমি-

পেটে কৃমি হলে শিশুরা রোগা হয়ে যায় ও পেটে বড় হয় এবং চেহারা ফ্যকাশে হয়ে যায়। এ জন্য ৫০ মিলি গ্রাম পরিমাণ নিম গাছের মূলের ছালের গুড়া দিন ৩ বার সামান্য পানি গরম সহ খেতে হবে।

উকুন নাশ-

নিমপাতা পিষে হালকা করে মাথায় লাগান।তার ঘন্টা খানেক পর মাথা ধুয়ে ফেলুন। ৩/৪ দিন এভাবে লাগালে উকুন মরে যাবে।

অজীর্ণ-

অনেক দিন ধরে পেটে অসুখ দেখা দিয়েছে বা পাতলাপায়খানা হলে ৩০ ফোটা নিমপাতার রস, সিকি কাপ পানির সাথে মিশিয়ে দিনে ২ বার খাওয়ালে উপকার পাওয়া যাবে।

খোস পাচড়া-

নিমপাতা সিদ্ধ করে পানি দিয়ে গোসল করলে খোস পাচড়া চলে যায়। পাতা বা ফুল বেটে গায়ে কয়েক দিন লাগালে চুলকানি ভালো হয়।

পোকা-মাকড়ের কামড়-

পোকামাকড় কামল দিলে বা হুল ফোটালে নিমের মূলের ছাল বা পাতা বেটে ক্ষতস্থানে লাগালে ব্যথা কমে যায়।

দাতের রোগ-

নিমপাতা ও ছালের গুড়া কিংবা নিমচাল দিয়ে নিয়মিত দাত মাজলে দাত হবে মজবুত, রক্ষা পাবে রোগ।

জন্ম নিয়ন্ত্রণে নিম

নিম তেলা একটি শক্তিশালী শ্রক্রানু নাশক হিসেবে কাজ করে। নিম তেল মহিলাদের জন্য নতুন ধরনের কার্যকরী গর্ভ নিরোধক হতে পারে। এটি ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই শুক্রানু মেরে ফেলতে সক্ষম। মুখের দাগ দূর করার সব থেকে ভাল ওষুধ হল নিম ৷

মুখে ব্রনের সমস্যায় ভুগছেন? চিন্তা করার দরকার নেই৷ নিম পাতার প্যাক মেখেই আপনি এর থেকে পরিত্রান পেতে পারেন৷ কি করে তৈরি করবেন এই প্যাকটা চলুন জেনে নিই৷ চার পাঁচটা নিম পাতা ভাল করে ধুয়ে মিক্সিতে পিষে নিন ৷

আরো পড়ুনঃ রূপচর্চায় তুলসী পাতার ব্যবহার

এর মধ্যে এক চামচ মূলতানি মাটি, অল্প গোলাপজল মিশিয়ে তৈরি কপেস্ট রুন৷ পেস্ট টা যদি গাঢ় হয়ে যায় তাহলে ওর মধ্যে গোলাপ জল মিশিয়ে নিন।মুখে লাগিয়ে বেশ কিছুক্ষন রেখে দিন৷ প্যাকটা মুখে শুকিয়ে গেলে হালকা উষ্ণ জল দিয়ে মুখটা ধুয়ে ফেলুন৷

তুলসী গাছ ও নিম গাছ এর-শেষ কথা

উপরে উক্ত আর্টিকেলে আজ আপনাদের সাথে আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিল তুলসী গাছ ও নিম গাছ এর ঔষধি গুণাগুন সে সম্বন্ধে। সাথে আরো আলোচনা করেছি তুলসী গাছ ও নিম গাছ এর উপকরিতার বিভিন্ন তথ্য সম্বন্ধে। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন এবং আপনার ভালো লেগেছে।এমনই গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষনীয় আর্টিকেল প্রতি দিন পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করবেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।  

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url