মুখের কালো দাগ দূর করার জন্য কিছু টিপস
আপনারা অনেকেই জানতে চান মুখের কালো দাগ দূর করা যায়।কিন্তু সঠিক ভাবে কথাও জানতে পারেন না।মুখের কালো দাগ দূর করা যায় সঠিক ভাবে জানতে আমাদের পোস্টটি সম্পূন পড়ুন।কারন এ পোস্টে বিস্তারিত ভাবে মুখের কালো দাগ দূর করা যায় উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিদিনের জীবন যাত্রায় এতো ধূলোবালিতে আমরা চলাফেরা করি যে সকালে সুন্দর ত্বক বের হওয়ার পরদিন শেষে দেখা যায় চেহারা কালো হয়ে যাচ্ছে । তাই আমাদের উচিত মুখের কালো দাগ দূর করা যায় সেই সম্পকে জানা । আর এই কালো দাগ যদি ঘরোয়া পদ্ধোতিতে প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে দূর করা যায় সেই সম্পকে নিচে দেওয়া হল।
মুখের কালো দাগ দূর করার উপায়
১ মুখের কালো দাগ দূর করার জন্য মধু, লেবু, গোলাপ ফুলের পাতা অনেক কার্যকরী।আপনি যদি নিয়মিত ব্যবহার করেন এক সাপ্তাহের মাঝেই তার ফলাফল পাবেন।আর এই উপাদান গুলি আপনি পেস্ট করে এক সাপ্তাহ ফেইসে লাগাবেন দেখবেন অনেক ভাল লাগবে।
২. মুখের কালো দাগ দূর করার জন্য আপনি ডিমের কুসুমের সাথে অলিভ অয়েল আর লেবুর রস দিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।এরপর মুখে লাগিয়ে ১০ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন।তারপর শুকিয়ে গেলে প্রথমে হালকা গরম পানি তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৩. প্রথমে শুকনো হলুদের গুড়ার সঙ্গে দেশি ঘি মিশান।তারপরে মিশ্রিত গুড়া মুখের যে খুঁত বা দাগ গুলো আছে তার ওপর আলতো ভাবে মাখুন।কিছুক্ষন বা ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এভাবে পরিপূর্ণভাবে দাগ দূর করা সম্ভব।
রাতের রূপচর্চা কিছু টিপসঃ
ব্যস্ত এই সময়ে নিজের যত্ন কতটুকুই বা নেয়া যায়।পরিবারের গৃহিণীদের ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায় সেই সাত সকালেই। আর কর্মজীবী নারীদের তো সারাদিন কাজ করে বাসায় ফিরেও শেষ নেই কাজ,সংসার দেখাশোনার সঙ্গে সঙ্গে পরের দিনের কাজের প্রস্তুতি নিতে নিতেই ঘুমের সময় হয়ে যায়।
শিক্ষার্থীরা আরও ব্যস্ত, সারা দিনে নিজের দিকে একটু তাকানোর সুযোগটা কোথায়! প্রতিদিনের নিয়মিত পরিচর্যার কোটা তাই খালিই পড়ে থাকে। ফলাফল ত্বক-চুলের নানাবিধ সমস্যা, মুটিয়ে যাওয়া, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া, আরও কত কিছু! নিজের যত্ন কোন মেয়ের না নেয়ার ইচ্ছা থাকে! অভাব শুধু সময়ের। এই যখন অবস্থা, তখন এর আদর্শ সমাধান হতে পারে ঠিক ঘুমাতে যাওয়ার আগের সময়টুকুতে রূপচর্চার কাজটুকু সেরে ফেলা।
আরো পড়ুনঃ মেকাপ ছাড়া কি ভাবে সুন্দর হওয়া যায় বিস্তারিত জানুন
এ প্রসঙ্গে গ্রেট লুক বিউটি পার্লার ও হারবাল কেয়ার-এর রূপ বিশেষজ্ঞ হাসিনা মমতাজ বলেন, মৌলিক কিছু পরিচর্যা আছে, যা প্রতিদিনই মেয়েদের করা উচিত। এই নিয়মিত যত্নটুকু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রোজ রাতে একটু নিজের পরিচর্যা করে ঘুমালে জীবনভর সুস্থ-সুন্দর থাকা খুবই সম্ভব।’ ত্বক সুন্দর ত্বকের মূলমন্ত্রই হলো পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতা। ত্বকের ময়লা ঠিকমত পরিষ্কার করা না হলে পিম্পল, ব্রণ (অ্যাকনে), র্যাশ হতে পারে।
ত্বক অযত্নের অভাবে হয়ে পড়ে খসখসে, রুক্ষ, অমসৃণ। তাই রাতে ঘুমানোর পূর্বে মুখ ভালো ভাবে পরিষ্কার করে ঘুমালে সারা রাতের ত্বক একে বারে তরতাজা থাকবে।’তবে সবকিছুর আগে বুঝে নিতে হবে নিজের ত্বকের ধরন, যা নিজেই পরীক্ষা করে নিতে পারেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে যদি দেখেন নাকের দুই পাশ, গাল অতিরিক্ত তেলতেলে হয়ে আছে, তাহলে ত্বক অবশ্যই তৈলাক্ত।
যদি মুখ টান টান বা শুকনো থাকে তাহলে পিম্পলের তেমন প্রবণতা না।যদি নাক তৈলাক্ত থাকে আর বাকি মুখে টান টান ভাব থাকে ত্বকের ধরন মিশ্র। তারপরও অবশ্যই কোনো বিশেষজ্ঞের পারামর্শ নিয়ে আপনার ত্বকের ধরন আগে যাচাই করে নিতে পারেন। ধরন বুঝে করতে হবে যত্ন। ত্বকের যত্নে ক্লিনজিং, টোনিং ও ময়েশ্চারাইজিং করতে হবে ঘুমানোর আগে।
ফেসওয়াশ
সর্ব প্রথমে রাতে ঘুমানোর পূর্বে মুখ ধুয়ে নিন। এরপর আপনার ত্বকের সাথে যেন সুর্ট করে এমন ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে হবে।আর যদি স্পর্শকাতর ত্বক হলে ব্যবহার করতে পারেন ভেষজ ফেসওয়াশ।
ফেসপ্যাক
ফেসপ্যাক মুখ এর জন্য অনেক উপকারি।নিয়মিত ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে আপনার ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে।আর ফেসপ্যাক ঘরেই বানাতে পারেন।আপনি শুষ্ক ত্বকের জন্য ১ টেবিল চামচ উপটান + ১ চা চামচ টকদই+১ চা চামচ দুধের সর বা দুধ।
তৈলাক্ত ও মিশ্র ত্বকের জন্য
তৈলাক্ত ও মিশ্র ত্বকের জন্য লেবু,মধু ও বেসন মিস করে ফেসপ্যাক তৈরি করে মুখে লাগান।এতে মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর হবে।আবার মুখে গোলাপজল ব্যবহার করতে পারেন যা সব ধরনের ত্বকের জন্য ভালো।
ময়েশ্চারাইজার
ময়েশ্চারাইজার হিসেবে শুষ্ক ত্বকের আপনারা যারা আছেন তারা ভেজা মুখে ২-৩ ফোঁটা বেবি অয়েল মুখে লাগান।ত্বক যদি তৈলাক্ত হয় তাহলে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করাই উচিত। ব্রণের জন্য যাদের ত্বক তৈলাক্ত ও ব্রণ আছে, তারা প্যাক ধুয়ে ফেলে ময়েশ্চারাইজারের বদলে ব্যবহার করুন অ্যাসট্রিনজেন্ট। ঘরোয়া অ্যাসট্রিনজেন্ট হলো গোলাপজল ও শসার রস।
এগুলো ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে নিতে হবে।এরপর শসার রস করে আপনি ফ্রিজে বরফ জমানোর পাত্রে রেখে আইস-কিউব করে নিতে পারেন।তাহলে আপনার প্রতি রাতে রস বানানোর ঝামেলায় না গিয়ে একটি কিউব মুখে ঘষে নিন। সমপরিমাণে পুদিনা পাতা ও নিমপাতা বেটে শুধু ব্রণ ও দাগের ওপর লাগিয়ে ঘুমান। সকালে উঠে ধুয়ে ফেলুন। পুদিনা পাতা ব্যবহার করতে পারেন ফেসপ্যাকেও। ব্রণের জন্য ভীষণ উপকারী।
চোখ
চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল পরলে দেখতে অনেক খারাপ লাগে।তাই চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল কমাতে ঘুমানোর আগে কুরানো শসা বা আলু ঠাণ্ডা হলে ভালো বা ঠাণ্ডা টি- ব্যাগ চোখের ওপর দিয়ে রাখুন ১০-১৫ মিনিট।
ঠোঁট
সবাই চাই ঠোঁট যেন দেখতে সুন্দর লাগে। যদি আপনি নরম গোলাপি ঠোঁট পেতে চান তাহলে প্রতি রাতে ভ্যাসলিনের সাথে অল্প করে লবণ মিশিয়ে ঠোঁটে লাগান।কিছুক্ষন পর ধুয়ে ফেলুন। এতে করে আপনার ঠোঁটের মৃত কোষ ঝরে উজ্জ্বলতা আসবে।
হাত ও পা
প্রতি রাতে পা ধুয়ে লোশন লাগিয়ে ঘুমাতে যান। এছাড়া নিয়মিত যত্ন হিসেবে সপ্তাহে দু-একবার যেটা করতে পারেন তা হলো— রাতে পা প্রথমে সাবানদিয়ে পরিষ্কার করে, ২ টেবিল চামচ কুসুম গরম অলিভ অয়েল+১ চা চামচ লবণের মিশ্রণ তৈরি করে সেটা পায়ে ভালো করে ম্যাসাজ করুন। এতে মৃতকোষ ঝরে যাবে, গোড়ালি নরম হবে, ম্যাসাজে রক্ত চলাচল ভালো হবে। এর বদলে মুখের জন্য যে স্ক্রাব ব্যবহার করেন, তা দিয়েও ম্যাসাজ করতে পারেন। ধুয়ে লোশন লাগিয়ে শুয়ে পড়ুন। সারাদিন পর পা দুটোকে যথোপযুক্ত আরাম দিন। হাতের যত্নও নিতে পারেন একইভাবে। মুখ, হাত, পা যে কোনো ম্যাসাজই করতে হবে হালকা হাতে, আলতোভাবে। তা না হলে হিতে বিপরীত হয়ে যেতে পারে।
নখ
নখ ফেটে বা ভাঙার সমস্যা অনেকের থাকে।এ সমস্যা দূর করার জন্য রাতে ঘুমানোর পূর্বে হাত ও পায়ের নখে অলিভ অয়েল দিয়ে ঘুমান।এতে সারা রাত নখ ভিজে থাকবে ফলে নখ ফেটে বা ভেঙে যাবে না।
খাদ্যাভ্যাস
আমাদের দেশের প্রথা অনুযায়ী সবাই একত্র হওয়ায় রাতের খাবারই হয় সারাদিনের মূল ও বেশ ভারি আহার। তাই ঘুমানোর আগে হালকা খাবার খাওয়াটা বাঞ্ছনীয় হলেও চাইলেও আলাদা করে নিজের জন্য মেয়েরা এক বাটি স্যুপ বা ফল নিয়ে বসতে পারেন না।
রাতের খাওয়ার মেনু বদলের ঝঞ্ঝাটে না গিয়ে পরিবারের সবাই মিলে ঘুমানোর অন্তত ঘণ্টা তিনেক আগে খাওয়ার অভ্যাস করুন, যাতে খেয়েই শুয়ে না পড়তে হয়, যা খুব ক্ষতিকর। খেয়ে নিয়ে আধ ঘণ্টা হাঁটুন।
ছোটখাটো ব্যায়াম
আপনার যদি জানা থাকে অন্যান্য ছোটখাটো ব্যায়াম,ইয়োগা বা মেডিটেশন করতে পারেন। তার আধ ঘণ্টা পর শুতে যান। এতে শরীর বেশ ঝরঝরে লাগবে। খাওয়ার পর খেতে পারেন এক কাপ চায়নিজ জেসমিন টি, এতে শরীরে মেদ জমবে না।
নিয়ম মাফিক পরিচর্যা, সুষম খাবার, সুন্দর জীবনযাপন আপনাকে ভালো ও সুস্থ রাখবে। আর সুস্থতা প্রতিফলিত হবে আপনার বাহ্যিক সৌন্দর্যে। তাই আপনার বিরামহীন কর্মব্যস্ততার মধ্যেও ঘুমের আগে এটুকু ঘরোয়া পরিচর্যায়ই আপনি থাকবেন একদম সুস্থ, প্রাণবন্ত,সুন্দর।
মুখের কালো দাগ দূর করার জন্য-শেষ কথা
উপরে উক্ত আর্টিকেলে আজ আপনাদের সাথে আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিল মুখের কালো দাগ দূর করার জন্য কিছু টিপস সে সম্বন্ধে। সাথে আরো আলোচনা করেছি রাতের রূপচর্চা কিছু টিপস বিভিন্ন তথ্য সম্বন্ধে। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি অনেক উপকৃত হয়েছেন এবং আপনার অনেক ভালো লেগেছে।এমনি গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষনীয় আর্টিকেল প্রতি দিন পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করবেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url