ট্রেন ভ্রমণ বাংলাদেশ থেকে ভারত
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে মানুষ চিকিৎসা ভ্রমণ ব্যবসার কাজে ভারতে যাতায়াত করে। ট্রেন ভ্রমণ সবার কাছে অনেক জনপ্রিয় ও অনেক সাশ্রয়ী । ট্রেন ভ্রমণ আমাদের জন্য অত্যন্ত আরামদায়ক এবং নিরাপদ জার্নি।
বাংলাদেশ থেকে বর্তমানে সরাসরি ভারতে ট্রেনের মাধ্যমে যাতায়াত করা যায় । বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে তিনটি ট্রেনের মাধ্যমে আমরা ভারতে ভ্রমণ করতে পারি। ট্রেনগুলোর নাম মৈত্রী, মিতালী ও বন্ধন এক্সপ্রেস।ট্রেনে যাতায়াতের জন্য অনেক কম খরচে ভারত ভ্রমণ করা যায়।
ট্রেন ভ্রমণ
বাংলাদেশ থেকে ভারত ট্রেন ভ্রমণ অনেক সুবিধাজনক। ট্রেনে যাতায়াতে কোনো প্রকার ঝুঁকি থাকে না।ট্রেনে যাতায়াতের ফলে শরীরে কোনো ক্লান্তি আসে না। ট্রেন ভ্রমণ আমাদের জন্য অনেক আরামদায়ক ও নিরাপদ ভ্রমণ।
আরো পড়ুনঃ ইন্ডিয়ান ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট
টিকিট সংগ্রহের নিয়ম
ঢাকা টু ভারতের টিকিট কাটতে কমলাপুর রেল স্টেশন বা চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে হতে টিকিট কাটতে হবে। আর কোথাও টিকিট বিক্রি হয় না। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টিকিট কাটা যায়। ভ্রমন এর ২৯ দিন আগে থেকে অগ্রিম টিকিট কেনা যায়।
প্রতিটি টিকিট কেনার জন্য কাউন্টারে মূলকপি পাসপোর্টের দেখিয়ে ফরম নিতে হবে এবং ফরমে সিরিয়াল নম্বর লিখে দেওয়া হবে। ফরমটি পূরণ করে দিলে সিরিয়াল অনুযায়ী ডাকা হবে টিকিট এর জন্য। তবে মূল পাসপোর্ট ছাড়া টিকিট কাটা যায় না।
টিকিট ফেরত দেওয়ার নিয়ম
রেল কতৃপক্ষ মতে,কোনো কারনে যদি যাওয়া না হয় তাহলে টিকিট ফেরত দেওয়া যায়।টিকিট ফেরত দেওয়ার জন্য যাতার ১২০ ঘন্টা আগে হলে সার্ভিস চার্জ বাবদ ২৫ শতাংশ টাকা কেটে নেওয়া হয়। ১২০ ঘন্টার কম বা ৯৬ ঘন্টার বেশি সময় হলে সার্ভিস চার্জ বাবদ ৫০ শতাংশ ও ৯৬ ঘন্টার কম বা ৭২ ঘন্টার বেশি হলে ৭৫ শতাংশ।যদি ৭২ ঘন্টার কম হলে টাকা ফেরত যোগ্য নয় ।
মৈত্রী এক্সপ্রেস
বাংলাদেশ থেকে ১৪ই এপ্রিল ২০০৮ সালে সর্বপ্রথম ঢাকা থেকে কলকাতা রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ট্রেনের নাম মৈত্রী এক্সপ্রেস।ট্রেনেটি পয়লা বৈশাখ এর উপলক্ষে এই ট্রেন চালু করা হয়। ট্রেনটির সপ্তাহে ঢাকা থেকে চার দিন কলকাতাতে যাই। শুক্রবার, শনিবার, রবিবার ও বুধবার। ঢাকা ক্যান্টরম্যান স্টেশন থেকে সকাল আট টায় ছেড়ে যায় ও বিকাল ৪ঃ০০ টায় কলকাতার চিতপুর স্টেশনে পৌঁছায়।
আরো পড়ুনঃ সময় নিয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাস
আর কলকাতার চিৎপুর স্টেশন থেকে ট্রেনটি সকাল ৭:১০ মিনিটে ছেড়ে আসে ও বিকাল চারটা পাঁচ মিনিটে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে পৌঁছায়। কলকাতা থেকে সপ্তাহে চার দিন ঢাকায় আসে শুক্রবার , শনিবার, সোমবার, মঙ্গলবার।
বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ের মতে, ঢাকা থেকে ৫৩৮ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে কলকাতায় পৌঁছায়। ঢাকা থেকে কলকাতা এসি সিটের ভাড়া ৪ হাজার ৯০০ টাকা। এসির চেয়ারের ভাড়া ৩ হাজার ৬০০ টাকা। শিশুদের জন্য ৫০ শতাংশ ছাড় রয়েছে পাসপোর্টের বয়স অনুযায়ী এক থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত।
মিতালী এক্সপ্রেস
মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে অনেক ভালো মানের কোচ ব্যবহার করা হয়েছে। ২০২১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন টি উদ্বোধন করেন। ঢাকা থেকে মিতালী এক্সপ্রেস নিউ জলপাইগুড়ি রুটে সোম ও বৃহস্পতিবার চলাচল করে। মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা থেকে রাত ৯ টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে নিউ জলপাইগুড়ি ৭ টা ৫ মিনিটে পৌছায়।
ঢাকা ও চিলাহাটির মধ্যে দূরত্ব ৪৫৩ কিলোমিটার এবং চিলাহাটি ও নিউ জলপাইগুড়ির মধ্যে দূরত্ব ৭১ কিলোমিটার।ঢাকা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি এসি বার্থ ভাড়া ৬ হাজার ৭২০ টাকা। এসির সিট ৪হাজার টাকা ২৯০এসি চেয়ারের ভাড়া ৩ হাজার ৮৬০ টাকা। শিশুদের জন্য ৫০ শতাংশ ছাড় রয়েছে পাসপোর্টের বয়স অনুযায়ী এক থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত।
বন্ধন এক্সপ্রেস
২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর বন্ধন এক্সপ্রেস চালু হয়।ভারত ও বাংলাদের মধ্যে বন্ধুত্ব সম্পর্ক স্থাপন করে বন্ধন এক্সপেস ।বন্ধন এক্সপেস ট্রেনটি খুলনা-কলকাতা রুটে সপ্তাহে দুদিন (রোববার ও বৃহস্পতিবার) চলাচল করবে। ট্রেনটিতে এসি সিট ও এসি চেয়ারের ব্যবস্থা রয়েছে। খুলনা-কলকাতার এসি সিটের ভাড়া ২ হাজার ৯০০ টাকা। এসি চেয়ারের ভাড়া ২ হাজার ৩০০ টাকা। শিশুদের জন্য ৫০ শতাংশ ছাড় রয়েছে পাসপোর্টের বয়স অনুযায়ী এক থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত।
ট্রেন ভ্রমণ বাংলাদেশ থেকে ভারত-শেষ কথা
উপরে উক্ত আর্টিকেলে আজ আপনাদের সাথে আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিল ট্রেন ভ্রমণ বাংলাদেশ থেকে ভারত সে সম্বন্ধে। সাথে আরো আলোচনা করেছি ট্রেন ভ্রমণ কি ও বাংলাদেশ থেকে কোন কোন ট্রেন ভারত যায় এর বিভিন্ন তথ্য সম্বন্ধে। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি অনেক উপকৃত হয়েছেন এবং আপনার অনেক ভালো লেগেছে।
Nice